বাসাবাড়ির বর্জ্য ফেলে না দিয়ে তা কাজে লাগালে কমবে নগরে বর্জ্যের পরিমাণ, একইসাথে কমবে পরিবেশগত স্বাস্থ্য ঝুঁকি, এমনটাই জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
৬ ফেব্রুয়ারি শনিবার রাজধানীর লালমাটিয়া হাউজিং সোসাইটি স্কুল অ্যান্ড কলেজ অডিটোরিয়ামে এক আলোচনা সভার আয়োজন করে পরিবেশ নিয়ে কাজ করা সংগঠন এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (এসডো)। যে আলোচনায় বক্তাদের আলোচনার মূল বিষয় ছিলো ‘টেকসই ও সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা।’
এসডোর মহাসচিব ড. শাহরিয়ার হোসেন জানান, ‘দৈনন্দিন বাসাবাড়িতে যে বর্জ্য সৃষ্টি হয়, তা আলাদাভাবে সিটি করপোরেশনের ভ্যানে দিতে হবে। আর পচনশীল বর্জ্য যা রান্না কাজের ফলে তৈরি হয় তা ফেলে না দিয়ে আমরা সুপারিশ করছি গাছে সার হিসেবে ব্যবহার করতে। তাতে বর্জ্যের পরিমাণ কমার পাশাপাশি উৎপাদিত হবে অর্গানিক শাক ও সবজি।’
সংগঠনটির নির্বাহী পরিচালক সিদ্দীকা সুলতানা বলেন, ‘বর্জ্যকে সম্পদের পরিণত করতে পারলে আমরা আমাদের অনেক সমস্যারই সমাধান করতে পারবো। কৃষিপ্রধান বাংলাদেশে বর্জ্য হতে জৈবসার তৈরির এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে সুফল বয়ে আনবে।’
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সহকারী প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা হাসিনা তাসমিন মৌটুসি বলেন, ‘লালমাটিয়া এলাকায় এই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনাটি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে পরবর্তীতে সারাদেশে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে। তার জন্য প্রয়োজন মানুষের সচেতনতা ও অংশগ্রহণ।’
এসডোর এক গবেষণায় দেখা যায়, বাংলাদেশের শহরাঞ্চলে প্রতিদিন ৩৫ হাজার টন বর্জ্য উৎপন্ন হয়, এভাবে চলতে থাকলে ২০২৫ সালে তা ৪৭ হাজার টনে গিয়ে দাঁড়াবে এবং ২০২৫ সালের শেষে প্রায় ১ কোটি ৭১ লাখ ৫৫ হাজার টন বর্জ্য ভাগাড়ে পতিত হবে।
এই পাহাড়সম বর্জ্য শুধু যে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে তা নয়। এটি মাটি, পানি ও বায়ুর সাথে মিশে পরিবেশ এবং মানবদেহের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। এই সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে এসডো “বিল্ডিং জিরো ওয়েস্ট কমিউনিটিস ফর এ পলিউশন-ফ্রি এনভায়রনমেন্ট ইন বাংলাদেশ” শীর্ষক উদ্ভাবনী এবং কার্যকরী একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো পরিবেশগত স্বাস্থ্য ঝুঁকি রোধের লক্ষ্যে ‘বর্জ্য মুক্ত সমাজ’ গড়ে তোলা।
এ পরিকল্পনায় এসডোর সাথে কাজ করছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও পরিবেশ অধিদপ্তর।