fbpx

বসন্ত এসে গেছে..

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

রঙ-বেরঙের ফুল, কোকিলের কুহুতান আর বাতাসে ভেসে ফুলের রেণু; সব মিলে প্রকৃতিতে শুরু হয়ে গেছে মধুকরদের গুনগুনানি। ইটকাঠ আর পাথরের শহরে শত ব্যস্ততার মাঝেও নব প্রাণের নব গানে বসন্তকে বরণ করে নিতে প্রস্তুত নগরবাসী। শীতের জীর্ণতা শেষে বসন্ত যে সুখের বার্তা নিয়ে ফেরে প্রতি বছর, প্রকৃতিপ্রেমীরা সে নাতিশীতোষ্ণ সুখের বার্তাকে স্বাগত জানায় মহাসমারোহে।

ফাল্গুন মাসে গাছের ডালে থোকা থোকা ফুল, আছে হাল্কা সবুজ নতুন পাতার উন্মাদনা। আছে পাতাবিহীন পলাশ ফুলের গাছে কমলা ফুলের ছেয়ে থাকা আর ঝরা ফুলের ডালি। এ যেন রবীন্দ্রনাথের ‘ফাগুনে ফুটল পলাশ, গাছতলার মাটি দিল ছেয়ে’ কবিতার সদৃশ প্রকৃতির অপরূপের গল্প।

পলাশের সাথে ফাগুনের আগুন রঙকে আরও সাজাতে প্রকৃতিতে যুক্ত হয় শিমুল, কুর্চি, সজনে, রক্তকাঞ্চন, মাধবী, ভাঁটফুল, মাধবীলতা। এসবের মধ্যে অন্যতম শিমুল। রবীন্দ্রনাথের লেখায়, ‘ওই যে শিমুল, ওই যে সজিনা, আমারে বেঁধেছে ঋণে, কত যে আমার পাগলামি পাওয়া দিনে। কেটে গেছে বেলা শুধু চেয়ে থাকা মধুর মৈতালিতে। নীল আকাশের তলায় ওদের সবুজ বৈতালিতে।‘

কোকিলের ডাক শুনলেই মনে পড়ে যায়, বসন্ত এসে গেছে। সাথে বাসাতে ভেসে বেড়ানো আমের মুকুলের চাপা মিষ্টি গন্ধ। এখানেও রবীন্দ্রনাথকে স্মরণ করতে হয়, ‘মুকুলিত আম্রবীথি ফাল্গুনেরি তাপে, মধুকর গুঞ্জরণে ছায়াতল কাঁপে।’

ফাগুনের অবারিত রূপ দেখা যায় আরও কিছু গাছে। মুচকুন্দ, কনকচাঁপা, স্বর্ণচাঁপা, নাগেশ্বর ডালে ডালে। রক্তকাঞ্চনের লালচে বেগুনি ফুলে যেন প্রজাপতি পাখা মেলে, সাদা থোকা কুরচি মুক্তোর উজ্জ্বলতা আর মান্দারে যেন টকটকে লাল তারার আবহ। মুকুলিত আম্রবীথি ফাল্গুনেরি তাপে, মধুকর গুঞ্জরনে ছায়াতল কাঁপে। অশোকের লাল-হকুদ-কমলা আভা প্রকৃতিতে জানান দেয়, ফাগুন এসেছে বনে বনে।

প্রকৃতি ও পরিবেশ বিষয়ক লেখক মোকাররম হোসেন বিবিএস বাংলাকে বলেন, ‘ফাল্গুন প্রকৃতিতে আলাদা প্রাণের সঞ্চার ঘটায়। শহরে হয়তো অতোটা ভালোভাবে বোঝা না গেলেও গ্রামের বনে বাদাড়ে ফুল আর কোকিলের ডাকে ঠিকই বোঝা যায়, বসন্তের আগমন। এবছর পলাশ একটু আগে ফুটলেও শিমুল ফুটেছে ঠিক সময়ে। এছাড়া নীলমনি, মাধবীলতা, উদাল ফুটেছে বিভিন্ন জায়গায়।’

বসন্ত সাজে পূর্ণতা দেয় আমাদের অতিথি ফুলেরা। সূর্যমুখী থেকে শুরু করে ফোটে অ্যাস্টার, ক্যালেন্ডুলা, কসমস, গাঁদা, জার্বেরা ডায়ান্থাস, ডালিয়া, স্যালভিয়া, হলিহকসহ রোমাঞ্চকর সব রঙের ফুলদল। আর বনে-বাদাড়ে যে কতশত ফুল ফোটে তার কোনো হিসাব নেই।

প্রকৃতিপ্রেমীরা বলেন, ফাগুন মনকে সাজায়, আর বসন্ত সাজায় প্রকৃতিকে। গত বছরের মতো এবছরেও ফাগুনে সবার একটাই চাওয়া, পৃথিবী থেকে বিদায় নিক করোনা, প্রকৃতির মতোই সতেজ ও নিশ্চিত হোক প্রতিটি প্রাণ।

Advertisement
Share.

Leave A Reply