জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি বাংলাদেশের এলডিসি থেকে উত্তরণের সুপারিশ করেছে গত সপ্তাহে। একে বাংলাদেশের জন্য বড় অর্জন হিসেবে উল্লেখ করেছে প্রভাবশালী মার্কিন পত্রিকা ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে দক্ষিণ কোরিয়া, চীন ও ভিয়েতনামের উন্নয়নের বিভিন্ন পর্যায়ের সঙ্গে বাংলাদেশের যে তুলনা দেওয়া হয়েছে, তার কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, এই দেশগুলোও রফতানিভিত্তিক উন্নয়নের পথে হেঁটে আজ এত দূর গিয়েছে। আধুনিক ইতিহাসে দেখা গেছে, রফতানিমুখী উন্নয়নের বদৌলতে অতি নিম্ন আয়ের দেশও মধ্য আয়ের দেশে উন্নীত হতে পারে। বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার সফল অর্থনীতি – এ মন্তব্যও করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত এক দশকে বাংলাদেশের রফতানি আয় মার্কিন ডলারের নিরিখে ৮০ শতাংশ বেড়েছে। বলা বাহুল্য, তৈরি পোশাক খাতের হাত ধরেই এটা ঘটেছে। অথচ এই সময়ে ভারত ও পাকিস্তানের রফতানি কিছুটা কমেছে।
২০১১ সালেও বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি ভারতের তুলনায় ৪০ শতাংশ কম ছিল। ২০২০ সালে বাংলাদেশ ভারতকে ছাড়িয়ে যায়। ভারতে মহামারীজনিত অর্থনৈতিক সংকোচনের কারণে এমনটি ঘটেছে, যদিও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) মনে করছে, এই ব্যবধান কিছুদিন থাকবে।
একসময় বাংলাদেশকে উচ্চমূল্যেও রফতানিপণ্য উৎপাদন করতে হবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। বাংলাদেশের রফতানি আয় এখন অতিমাত্রায় তৈরি পোশাক খাতের ওপর নির্ভরশীল।
বাংলাদেশের উন্নয়নের পেছনে আরও কিছু কারণ আছে বলে মনে করছে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল। সেগুলো হলো সংখ্যাগরিষ্ঠ তরুণ জনগোষ্ঠী, প্রতিযোগিতামূলক মজুরি, শক্তিশালী ও ক্রমবর্ধমান নারী শ্রমশক্তি—দক্ষিণ এশিয়ায় এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশে অন্যদের তুলনায় এগিয়ে। তবে উন্নয়নের এই পথ বন্ধুর বলে মনে করে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়ার তুলনায় বাংলাদেশের রফতানি প্রবৃদ্ধি কম। এই দুটি দেশের রফতানি গত ১০ বছরে যথাক্রমে তিনগুণ ও দ্বিগুণ হয়েছে।’
এতে আরও বলা হয়, ‘প্রতিবন্ধকতা আছে, তবে এলডিসি থেকে বাংলাদেশের এই উত্তরণ উজ্জ্বলতর ভবিষ্যতের লক্ষণ বলেই ধরে নেওয়া যায়। দক্ষিণ এশিয়ায় যারা ভিন্ন পথ অবলম্বন করছে, তাদের জন্য এটা সতর্কবার্তা।’