শীত বিদায় নিয়েছে। ফাগুন এসেছে বাংলায়। এখন আর শীত পোশাকের কদর নেই। শীতের পোশাক তুলে রাখার সময় এসেছে। যেহেতু দীর্ঘ সময়ের জন্য এসব পোশাক তুলে রাখতে হবে, তাই আগে জেনে নেয়া জরুরি কিভাবে শীতের পোশাক যত্নে রাখা যাবে।
আপনি নিশ্চয়ই সামনের শীতে পরিচ্ছন্ন, ঝকঝকে শীতের পোশাক ফিরে পেতে চাইবেন। সব পোশাক পুরনো হলেও শীতের পোশাক পুরনো হয়না। যত্ন নিলে আপনি অনেক বছর একই শীতের পোশাক ব্যবহার করতে পারবেন। বলা হয়ে থাকে যে, দীর্ঘদিন শীতের পোশাক ব্যবহারে লজ্জা নেই। যেহেতু দীর্ঘসময় ধরে এসব পোশাক ব্যবহার করতে হবে, তাই পোশাকের ক্ষেত্রে নিতে হবে বাড়তি যত্ন।
উল বা পশমের সোয়েটার বা শাল
উল রঙিন হলে, ধোয়ার সময়ে জলে অল্প ভিনেগার আর সাদা হলে লেবুর রস দিন। কোথাও দাগ লাগলে সেই অংশটুকু আলাদাভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন। উল বা পশমের সোয়েটার ঘণ্টাখানেকের বেশি ভেজানোর প্রয়োজন নেই। এমন পোশাক ধোয়ার সময়ে ব্রাশ ব্যবহার করবেন না। আলতো ঘষে পরিষ্কার করে নিন। ধোয়ার পর পানি ঝরিয়ে নিন, নিংড়নোর প্রয়োজন নেই।
শীতপোশাক সাধারণত শুকাতে বেশি সময় লাগে। কড়া রোদে শুকোবেন না তা। রোদ কম লাগে, এমন জায়গাতেই তা শুকোতে দিন। এতে রং নষ্ট হওয়ার ভয় থাকে না। উলের চাদর-সোয়েটার ওয়াশিং মেশিনে না ধোয়াই ভাল।
পোশাক ধুয়ে শুকিয়ে নেওয়ার পর বাইরে ফেলে রাখবেন না। সুতির কাপড় দিয়ে মুড়ে রাখবেন, যাতে তাতে ধুলোবালি না জমে। আলমারিতে তুলে রাখলে, কখনও তা হ্যাঙ্গারে ঝোলাবেন না। পোশাকের আকৃতি নষ্ট হয়ে যাবে। সব সময়ে ভাঁজ করে রাখলে ভালো। আলমারিতে পোশাক রাখার পরে অবশ্যই ন্যাপথলিন দিয়ে রাখবেন।
লেদারের পোশাক
লেদারের কাপড় বাড়িতে পরিষ্কার না করে লন্ড্রিতে দিন। এগুলো কখনওই রোদে দেওয়া উচিত নয়। ব্যাগে ভরে ঝুলিয়ে রাখুন, ভাঁজ করবেন না।
মোজা,মাফলার, টুপি
শীতে যে সব জিনিস বেশি ময়লা হয় সেগুলো হল মাফলার, টুপি ও মোজা। তাই, তুলে রাখার আগে ভাল করে ঠান্ডা পানিতে হালকা কোনো ডিটারজেন্ট চুবিয়ে রাখুন আধঘণ্টা। সঙ্গে অল্প লেবুর রস মেশান। যেখানে ময়লা বেশি জমে, হাত দিয়ে কচলে ধুয়ে নিন। শুকিয়ে নিন হালকা রোদে।
লেপের যত্ন
লেপ তো আর আপনি ধুতে পারবেন না। তাই তুলে রাখার আগে ভালোভাবে উল্টেপাল্টে রোদ দিয়ে রাখুন। এতে অনেক বছর পর্যন্ত লেপ ভাল থাকবে। পাতলা কাপড়ে মুড়ে ভাঁজ করে তুলে রাখুন।
কম্বলের যত্ন
লেপের মতোই কম্বলও রোদে দিয়ে তুলে রাখতে হয়। তবে, চাইলে কম্বল ধোয়া যায়, ড্রাই ওয়াশও করা যায়। তবে কম্বলের ওজন বেশি হলে, জলে ভেজালে তা আরও ভারী হয়ে যায়। তাই লন্ড্রিতে দেওয়া সুবিধেজনক।
কাঁথা থাকুক যত্নে
কাঁথা হালকা গরম পানিতে সাধারণ ডিটারজেন্টে ধুয়ে রোদে শুকিয়ে পুনরায় ব্যবহার করুন।
তুলে রাখার সময় ধুয়ে রাখা হয়েছে বলে ভাববেন না। বছর শেষে ফের শীতের আমেজ পড়লে, আলমারি থেকে বের করে শীতের পোশাক বা কম্বল সরাসরি গায়ে দিতে পারবেন। শীতের পোশাক যতই যত্নে রাখুন, অনেক দিন ব্যবহার না করার কারণে এক ধরনের ভ্যাপসা গন্ধ আসে। তাই পুণরায় ব্যবহার করার আগে অবশ্যই রোদে দিবেন।