fbpx

বৃষ্টি নামলেই কেনো খিচুড়ি খেতে মন চায়?

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

বৃষ্টি আর খিচুড়ি যেনো একই সুতোয় গাঁথা দুই মালা। বৃষ্টি নামলেই খিচুড়ি খাওয়ার জন্য মন উথাল পাথাল করে। গরম গরম খিচুড়ি, সাথে ইলিশ মাছ ভাজি আর শুকনো মরিচ। এর সাথে যদি আচার আর কাঁচা পেঁয়াজ যোগ হয়, তাহলে তো কথাই নেই। এর স্বাদ অমৃতের চেয়ে কিন্ত কোনো অংশে কম নয়। ভাবতেই যেনো জিভে জল চলে আসে।

তবে কথা হচ্ছে, বৃষ্টি নামলেই কেনো খিচুড়ি খেতে বেশি ইচ্ছে করে? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে জানা গেছে, কীভাবে এই উপমহাদেশে খিচুড়ি খাওয়ার প্রচলন শুরু হয়।

প্রাচীনকালে বাউলদের প্রধান খাবার ছিল এই খিচুড়ি। ছন্নছাড়া গানপাগল মানুষগুলো গান শুনিয়ে মানুষের বাড়ি থেকে পেতেন চাল ও ডাল। তারা এই চাল ও ডাল একসঙ্গে মিলিয়ে ঝামেলাহীনভাবে খিচুড়ি চুলায় বসিয়ে দিতেন। একদিকে যেমন এটি তাদের সময় বাঁচাতো, অন্যদিকে তারা বেশিরভাগ সময় সঙ্গীত চর্চায় ব্যয় করতে পারতেন। বিশেষ করে বছরের অন্যান্য সময় তারা ভিন্ন কোনো খাবার রান্না করলেও বৃষ্টির দিনে পেট পুজা করার খিচুড়িই ছিল একমাত্র খাবার। আর এর রেশ ধরেই গোটা উপমহাদেশে বৃষ্টির দিনে খিচুড়ি খাবার প্রচলন শুরু হয়।

বৃষ্টিতে খিচুড়ি রান্নার অন্য একটি কারণও খুঁজে পাওয়া যায়। গ্রামের বেশির ভাগ রান্না ঘর কিন্ত বাড়ির বাইরে অবস্থিত। তাই বৃষ্টি নামলেই মাটির চুলা ভিজে যেতো। তাই গ্রামীণ মহিলারা ঝামেলা এড়াতে চাল, ডাল একসঙ্গে মিশিয়ে চুলায় চাপিয়ে দিতেন। এ কারণেই বৃষ্টির দিনের সঙ্গে মিলে মিশে একাকার হয়ে গেছে খিচুড়ি সংস্কৃতি।

আর খিচুড়ির সঙ্গে ইলিশ মাছ ভাজার সংস্কৃতি ও বেশ মজার। বৃষ্টির সময়ে নদীর তাজা ইলিশ পাওয়া যায়। জেলেরা মাছ ধরে আনতো। সেই মাছ ভাজি দিয়ে খিচুড়ি- যেনো সোনায় সোহাগা। এ কারণে খিচুড়ির সঙ্গে ইলিশ মাছ ভাজা জড়িয়ে গেছে।

অন্যদিকে গ্রীষ্মকালে খিচুড়ি খেলে অনেকেরই পেটে হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। আর এটি খেলে বার বার পানির পিপাসাও লাগে। এজন্য বৃষ্টির ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় খিচুড়ি খেয়ে সমস্যায় পড়তে হয় না। এসব কারণে ‘বৃষ্টির সঙ্গে খিচুড়ি’ খাওয়ার ঐতিহ্য দেশে তৈরি হয়েছে।

তবে ইতিহাস যাই বলুক না কেনো, বৃষ্টি বিলাস উদযাপনের জন্য খিচুড়ির কোনো বিকল্প নেই। আকাশে মেঘ দেখলে তাই সাত পাঁচ না ভেবে বাঙালিরা চুলায় চাপিয়ে দেন খিচুড়ি। গরম গরম খিচুড়ি যেনো এময় অমৃতসম!

Advertisement
Share.

Leave A Reply