রাত পেরোলেই ঋতুরাজ বসন্তের সূর্য উঠবে পুব আকাশে। সাথে যোগ হয়েছে ভালোবাসা দিবস। বসন্তের সাজে নিজেকে সাজাতে নারীর খোপায় ফুলের বিকল্প নেই। আর ভালোবাসা দিবসে পছন্দের মানুষকে কিছু উপহার দিক আর না দিক, ফুল তো দিতেই হবে। তাই এই দুই দিবস ঘিরে যেনো নিঃশ্বাস নেয়ার সময় পাচ্ছেন না ফুল চাষিরা।
সারা বছরের লাভ লোকসানের হিসাব ঘুচবে এই দিবস উপলক্ষে ফুল বিক্রি করে। এজন্যই ব্যস্ত সময় পার করছেন সাভারের বিরুলিয়া, ঝিনাইদহসহ গোটা দেশের ফুল চাষিরা।
সাভারের বিরুলিয়ার ফুল চাষিরা বিশেষ এই দিনটিকে কেন্দ্র করে ফুল বিক্রির লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে আগে থেকেই বাগানের পরিচর্যা করেন। মূলত ফেব্রুয়ারি মাসে পহেলা ফাল্গুন, ভালোবাসা দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হওয়ায় সবচেয়ে বেশি ফুল বিক্রি হয়।
বিরুলিয়ায় সবচেয়ে বেশি চাষ হয় লাল গোলাপ। এখানে ৩৫০ হেক্টর জমিতে প্রায় দেড় হাজার চাষি ফুল চাষ করছেন। এর মধ্যে ১৫ হেক্টর জমিতে জারবেরা ফুলের চাষ করেন ফুল চাষিরা। এছাড়া জিপসি, রজনীগন্ধা, গাঁদাসহ বেশ কিছু ফুল চাষ করছেন তারা। আর দেড় হাজার ফুল চাষি ফুল শ্রমিকদের নিয়ে বছরের সবচেয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কাঙ্ক্ষিত বাজারের আশায়।
ফাল্গুনের শেষ মূহুর্তে বিরুলিয়ার বাগ্নীবাড়ী, মইস্তাপাড়া, কাকাব, সামাইর, সাদুল্লাপুর, শ্যামপুর, আকরান গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় সব ফুলবাগানের পরিচর্যায় ব্যস্ত ফুল চাষিরা। দম ফেলানোর একটুও সময় নেই তাদের। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে তাদের কর্মযজ্ঞ। বাড়তি প্রস্তুতির অংশ হিসেবে প্রয়োজনমতো গোলাপের কুঁড়িতে ক্যাপ পরানো, সার-কীটনাশক, আগাছা পরিষ্কার, জমিতে সেচ প্রদানসহ ফুলের পরিচর্যা করছেন চাষি ও শ্রমিকরা।
এদিকে ঝিনাইদহের চাষিদেরও একই অবস্থা। এই জেলার কালীগঞ্জ, কোটচাঁদপুর, মহেশপুর ও সদর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মাঠে মাঠে গাঁদা, গোলাপ, গ্লাডিওলাস, জারবেরা, রজনীগন্ধাসহ নানা রঙের ফুল ও তার গন্ধে চারদিক মৌ মৌ করছে। নানা রঙের ফুলে প্রকৃতি যেনো নতুন সাজে সেজেছে।
আর চাষিদের চলছে নানা কর্মযজ্ঞ। কেউবা জমিতে করছেন কীটনাশক স্প্রে, আবার কেউবা ব্যস্ত আগাছা দমনে। লক্ষ্য এই মাসের ফুল বিক্রি দিয়ে যেনো সব লোকসানের হিসাব চুকিয়ে দিতে পারেন। বসন্ত, ভালোবাসা দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ফুলের চাহিদা বেশি থাকে তাই দাম ভালো পাওয়ার আশা করছেন চাষিরা। এই দুই এলাকা থেকেই রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হবে এখানকার ফুল।