ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে বালুবাহী ট্রলারের সাথে ইঞ্জিনচালিত যাত্রীবাহী নৌকার সংঘর্ষে শতাধিক যাত্রী নিয়ে ইঞ্জিনচালিত নৌকাটি ডুবে গেছে। এ ঘটনায় নিহতদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ২২ জনের লাশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তাদের মধ্যে ১৮ জনের পরিচয় জানা গেছে। গতকাল শুক্রবার (২৭ আগস্ট) রাতেই নিহতদের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে, এখনো আরও অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন।
এ দুর্ঘটনায় মৃত যাদের পরিচয় পাওয়া গেছে তারা হলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের পৈরতলা এলাকার আবু সাঈদের স্ত্রী মোমেনা বেগম (৫৫) ও ফারুক মিয়ার স্ত্রী কাজলা বেগম, দাতিয়ারা এলাকার মোবারক মিয়ার মেয়ে তাসফিয়া মিম (১২), সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের সাদেকপুর গ্রামের মুরাদ হোসেনের ছেলে তানভীর (৮) ও চিলোকুট গ্রামের আবদুল্লাহ মিয়ার শিশুকন্যা তাকুয়া (৮), নরসিংসার গ্রামের জামাল মিয়ার ছেলে সাজিম (৭), ভাটপাড়া গ্রামের ঝারু মিয়ার মেয়ে শারমিন (১৮), বিজয়নগরের ফতেহপুর গ্রামের জহিরুল হকের ছেলে আরিফ বিল্লাহ (২০), বেড়াগাঁও গ্রামের মৃত মালু মিয়ার স্ত্রী মঞ্জু বেগম (৬০), জজ মিয়ার স্ত্রী ফরিদা বেগম (৪৭) এবং তার মেয়ে মুন্নি (১০), আবদুল হাসিমের স্ত্রী কমলা বেগম (৫২), নূরপুর গ্রামের মৃত রাজ্জাক মিয়ার স্ত্রী মিনারা বেগম (৫০), আদমপুর গ্রামের অখিল বিশ্বাসের স্ত্রী অঞ্জনী বিশ্বাস (৩০) ও পরিমল বিশ্বাসের মেয়ে তিথিবা বিশ্বাস (২), বাদেহাড়িয়ার কামাল মিয়ার শিশুকন্যা মাহিদা আক্তার (৬), মনিপুরের মৃত আবদুল বারীর ছেলে সিরাজুল ইসলাম (৫৮) এবং ময়মনসিংহের খোকন মিয়ার স্ত্রী ঝর্ণা বেগম (৪৫)।
আজ শনিবার (২৮ আগস্ট) সকাল ৮টা থেকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল আবারও উদ্ধার অভিযান কাজ শুরু করেছে বলে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক তৌফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া।
এদিকে, স্থানীয় জেলা প্রশাসন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, নিহতের পরিবারের প্রত্যেক সদস্যকে দাফনের জন্য ২০ হাজার টাকা করে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোজাম্মেল হোসেন রেজা সংবাদমাধ্যমকে জানান, নৌ-দুর্ঘটনার পর পালিয়ে যাওয়ার সময় বালুবোঝাই ট্রলারের চালকসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতরা এখন পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন।
স্থানীয় সূত্র থেকে জানা যায়, গতকাল শুক্রবার (২৭ আগস্ট) বিকেল সোয়া ৫টার দিকে বিজয়নগর উপজেলার চম্পকনগর ঘাট থেকে জেলা সদরের উদ্দেশে যাত্রীবাহী নৌকাটি রওনা হয়েছিল। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে উপজেলার পত্তন ইউনিয়নে তিতাস নদ সংলগ্ন লইছকা বিলে আসার পর দুর্ঘটনাটি ঘটে। দুর্ঘটনার কারণ জানতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন।
তবে ধারণা করা হচ্ছে, ইঞ্জিনচালিত নৌকাটিতে অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া হয়েছিল। তাতে সামনে থেকে বালুবাহী স্টিলের ইঞ্জিনের ট্রলার ধাক্কা দিলে এই দুর্ঘটনা ঘটে।