ভারত সরকার টিকটকসহ চীনের ৫৯ টি অ্যাপ নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছে। ফলে দেশটি থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছে টিকটকের প্রতিষ্ঠাতা কোম্পানি বাইটড্যান্স।
এই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত প্রায় দুই হাজার ভারতীয় কর্মীকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। বুধবার (২৭ জানুয়ারি) বিভিন্ন ভারতীয় গণমাধ্যমে এই সংবাদ প্রচার করা হয়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতে বাইটড্যান্স এর একাধিক অ্যাপ রয়েছে। তবে এবার এই দেশ থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিতে চাচ্ছে চীনা সংস্থাটি। এ কারণে টিকটক, হ্যালোসহ বিভিন্ন অ্যাপে কর্মরত প্রায় দু’হাজারেরও বেশি কর্মীকে ছাটাই করছে সংস্থাটি। ফলে চাকরি হারিয়েছে দুই হাজারেরও বেশি ভারতীয় কর্মী।
এদিকে বাইটড্যান্স এর অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান নির্বাহী (সিইও) ভেনেসা পাপ্পাস ও ভিপি ব্লেক শ্যান্ডলে গণমাধ্যমকে জানান, ‘অনেক চেষ্টা করেছি, যাতে এ দেশের আইন-কানুন মেনে আমরা কাজ করতে পারি। এজন্য আমরা গত সাত মাস ধরে প্রশাসনের সব অভিযোগের সঠিক জবাব দেয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু এরপরও আমরা কাজ শুরুর ছাড়পত্র পাইনি। কবে আবার এই অ্যাপ ভারতে ফিরবে সেটাও স্পষ্ট নয়। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।’
এছাড়া ছয় মাস ধরে দুই হাজারেরও বেশি কর্মীদের পাশে ছিল সংস্থাটি। কিন্তু এবার সংস্থার খরচ কমানোর সিদ্ধান্তের কথা জানান বাইটড্যান্সের প্রধান এই কর্মকর্তা। তবে টিকটককে ফের বাজারে ফেরানোর চেষ্টা করা হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগে চীনা অ্যাপ টিকটক ও হ্যালোর জবাবে ভারত সরকার সন্তুষ্ট নয় বলে জানিয়েছিল। ফলে দেশটিতে এই অ্যাপগুলোকে একেবারে বন্ধ করার পদক্ষেপ নেয়ার আদেশ দেয় সরকার। এরই প্রেক্ষিতে সংস্থার পক্ষ থেকে অফিশিয়ালি কার্যক্রম বন্ধ করার কথা বলা হয়েছে।
তবে ভারতে এই ৫৯টি চীনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে চীন। বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, ‘ভারতের এই পদক্ষেপ বিশ্ব বাণিজ্য চুক্তিকে লঙ্ঘন করছে। যার প্রভাবে চীনের সংস্থাগুলোও অর্থনৈতিকভাবে বেশ ধাক্কা খাবে।’
মূলত এই বিতর্ক শুরু হয় নিরাপত্তার ইস্যু নিয়ে। ভারতের বিভিন্ন নিরাপত্তা সংস্থার অভিযোগ ছিল, একাধিক চীনা অ্যাপ ভারতীয়দের তথ্য চুরি করছে। এরপরই মোদি-সরকার চীনের ৫৯টি অ্যাপ নিষিদ্ধ করে। একইসঙ্গে অ্যাপগুলোকে নোটিশ দেয় সরকার।
ভারতীয় সরকার জানিয়েছিল, ৭৯টি প্রশ্নের জবাবে সরকার সন্তুষ্ট হলে অ্যাপগুলোকে ছাড়পত্র দেয়া হবে। কিন্তু সরকার এখন সেই প্রশ্নের জবাবে সন্তুষ্ট নয়। ফলে দেশটিতে অ্যাপগুলোর কার্যক্রম বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে সরকার।