ভারত-বাংলাদেশ সব সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে কোভিড নিয়ন্ত্রণের জাতীয় কমিটি। ভারতে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি অবনতির সাথে সাথে বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞরা ভাইরাসটির নতুন এবং সম্ভাব্য আরও সংক্রমণযোগ্য স্ট্রেইনের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে প্রতিবেশী দেশটির সাথে সীমান্ত বন্ধ করার পরামর্শ দিয়েছেন। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট আসলে বাংলাদেশের পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।
মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) এক বৈঠকে কোভিড-১৯ সম্পর্কিত জাতীয় প্রযুক্তিগত পরামর্শদাতা কমিটি (এনটিএসি) ভারতে অবস্থার উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত সীমান্ত না খোলার পরামর্শ দিয়েছে। এনটিএসি-র সদস্য অধ্যাপক নজরুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে জানান, ভারতের করোনা পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার কারণে তারা সরকারকে প্রস্তাব দিয়েছেন যেন দ্রুত ভারত-বাংলাদেশ সব সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, সরকার যদি সীমান্ত পুরোপুরি বন্ধ না করে, তবে ভারত থেকে যারা বাংলাদেশে আসবেন, তাদের জন্য অবশ্যই প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে হবে।
কোভিড-১৯ এর নতুন এ স্ট্রেইনটির উৎপত্তিস্থল এবং সংক্রমণের বিস্তারভেদে এর নাম দেওয়া হয় ‘দি ইন্ডিয়ান ডাবল মিউটেশন’। এই ডাবল মিউটেশন যুক্ত নতুন রূপটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরে ব্রাজিলকে ছাড়িয়ে বিশ্বের দ্বিতীয় সবচেয়ে সংক্রমিত কোভিড-ক্ষতিগ্রস্থ দেশ হিসেবে চিহ্নিত করেছে ভারতকে। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুযায়ী, ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১ কোটি ৬৬ লাখ ২ হাজার ৪৫৬ এবং এতে দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৮৯ হাজার ৫৪৯ জন মানুষের।
রয়টার্স জানিয়েছে, গতকাল শুক্রবার দ্বিতীয় দিনের মতো বিশ্বের সর্বোচ্চ দৈনিক করোনাভাইরাস সংক্রমণের রেকর্ড হয় ভারতে। দেশটিতে গতকাল ৩ লাখ ৩০ হাজার মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়।
ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘন্টার মধ্যে দেশটিতে মৃত্যুর ঘটনাও রেকর্ডে ২ হাজার ২৬৩ ছাড়িয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজিএইচএস) ডা. এ বি এম খুরশিদ আলম মঙ্গলবারের বৈঠকে বলেছিলেন, ‘আমরা সরকার সম্পর্কিত মন্ত্রীদের কাছে আমাদের সুপারিশ পাঠিয়েছি। আর কোনও বিপর্যয় এড়াতে এখন ভারতের সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া উচিত।’ তবে সিদ্ধান্ত অবশ্যই সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে আসতে হবে বলেও জানান তিনি।
ডিজিএইচএস সূত্র জানায়, গতকাল শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ১০ জন ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন।
ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় মার্চ মাসের শেষে দেশটিতে ‘ডাবল মিউট্যান্ট’ ভাইরাসের উপস্থিতি স্বীকার করে।
এছাড়া, ভারত সরকারের ১৬ এপ্রিল সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অস্ট্রেলিয়া, বেলজিয়াম, জার্মানি, আয়ারল্যান্ড, নামিবিয়া, নিউজিল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাজ্য এবং আমেরিকাসহ বেশ কয়েকটি দেশে দ্বিগুণ রূপান্তরের ভাইরাসের এই স্ট্রেইন পাওয়া গেছে।