fbpx

ভাষার মাসে অনুষ্ঠিত হলো দ্বাদশ আন্তঃস্কুল বাংলা অলিম্পিয়াড

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

প্রতিবছরের মতো এবারও ইংরেজিমাধ্যম ও ইংরেজি ভার্সন স্কুলের বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে মহা আড়ম্বরে অনুষ্ঠিত হয়েছে আন্তঃস্কুল বাংলা অলিম্পিয়াড। সারা দেশের প্রায় এক শ টি স্কুলের দেড় সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে এবারের দ্বাদশ আন্তঃস্কুল বাংলা অলিম্পিয়াড ২০২৩ ছিল জমজমাট। ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ শনিবার সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৩ টা পর্যন্ত উত্তরায় স্কুল প্রাঙ্গণে দ্বাদশ আন্তঃস্কুল বাংলা অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হয়। এবার ৭০ টি স্কুলের ৯০ টি শাখা এ বছর অংশগ্রহণ করেছে।

সকাল ৯ টায় স্কুল প্রাঙ্গণে জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। শিক্ষক-শিক্ষার্থী, বিজ্ঞ বিচারক এবং উপদেষ্টাবৃন্দ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।

ভাষার মাসে দেশের ইংরেজি মাধ্যম এবং ইংরেজি ভার্সন স্কুলগুলোর অংশগ্রহণে বাংলা ভাষা বিষয়ক সর্ববৃহৎ প্রতিযোগিতা রাজধানীর উত্তরায় অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল হোপ স্কুল বাংলাদেশ আয়োজিত আন্তঃস্কুল বাংলা অলিম্পিয়াড। বার্ষিক এই প্রতিযোগিতার ধারাবাহিকতা এ বছর সাফল্যের সাথে এক যুগ অতিক্রম করেছে।

প্রতিযোগীরা এবার রচনা লেখা, আবৃত্তি, নাচ, গান, অঙ্কন, কুইজ এবং উপস্থিত বক্তৃতা বিষয়ে বয়সভেদে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। শুধু প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে, ফলাফল এবং পুরস্কার বিতরণী এখনো বাকি রয়েছে। বাংলা অলিম্পিয়াডের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানটি মহা আড়ম্বরে অনুষ্ঠিত হবে ১১ মার্চ রাজধানীর সেগুনবাগিচায় অবস্থিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে।

ভাষার মাসে অনুষ্ঠিত হলো দ্বাদশ আন্তঃস্কুল বাংলা অলিম্পিয়াডএ বছরও অন্যান্য বারের মতো এ প্রতিযোগিতার উপদেষ্টা ও বিচারক হিসেবে ছিলেন দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ- লেখক-শিল্পীবৃন্দ। এবার বাংলা অলিম্পিয়াডের উপদেষ্টা হিসেবে আছেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মশিউর রহমান, বাংলা অলিম্পিয়াডের উপদেষ্টা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো- উপাচার্য কবি ড. মুহাম্মদ সামাদ, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. হাকিম আরিফ, বাংলাদেশ শিশু একাডেমির মহাপরিচালক আনজীর লিটন। প্রতিযোগিতার বিচারক হিসেবে উপস্থিত সম্প্রতি একুশে পদকজয়ী মনোরঞ্জন ঘোষাল, বিশিষ্ট আবৃত্তিশিল্পী ডালিয়া আহমেদ, আবৃত্তিশিল্পী শিমুল মুস্তাফা, আবৃত্তিশিল্পী মাহিদুল ইসলাম, আবৃত্তিশিল্পী রূপা চক্রবর্তী, আবৃত্তিশিল্পী রেজিনা ওয়ালী লীনা, নৃত্যশিল্পী লায়লা হাসান, সঙ্গীতশিল্পী চন্দনা মজুমদার, কিরণচন্দ্র রায়, প্রিয়াঙ্কা গোপ, সরকারি সঙ্গীত কলেজের শিক্ষক কমল খালিদ, ইউনুসুর রহমান, নৃত্যশিল্পী সাজু আহমেদ, সামিনা হোসেন প্রিমা প্রমুখ।

উল্লেখ্য, গত ১o ডিসেম্বর থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অনলাইনে রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছে । এছাড়া দ্বাদশ বাংলা অলিম্পিয়াড উপলক্ষে ২৮ জানুয়ারি ২০২৩ রাজধানীর সেগুনবাগিচায় অবস্থিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট সেমিনার কক্ষে একটি সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

ইন্টারন্যাশনাল হোপ স্কুল বাংলাদেশের প্রিন্সিপাল রোকসানা জারিন বলেন, ‘প্রতি বছরের ধারাবাহিকতায় এ বছরও বাংলা ভাষা চর্চার এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে পেরে ইন্টারন্যাশনাল হোপ স্কুল বাংলাদেশ আনন্দিত ও গর্বিত। সফলভাবে এক যুগ ধরে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে পেরে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। আমরা মনে করি, এক যুগ ধরে এত বড় একটা প্রতিযোগিতার আয়োজন করে আমাদের স্কুল বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিচর্চায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এরই মধ্যে বাংলা অলিম্পিয়াড ইংরেজি স্কুলগুলোর একটি জাতীয় প্রতিযোগিতায় পরিণত হয়েছে। শুধু জাতীয় নয়, আমি বলব, বাংলা অলিম্পিয়াড ছড়িয়ে পড়ছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও। প্রতি বছরই দেশি শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিভিন্ন স্কুলের বিদেশি শিক্ষার্থীরাও বাংলা অলিম্পিয়াডে যোগ দিচ্ছে। এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে দেশের ইংরেজি মাধ্যম ও ইংরেজি ভার্শন স্কুলগুলো ভাষার মাসে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে। ভাষার মাসে বাংলা ভাষা নিয়ে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের অনুষ্ঠানমালায় এটিই দেশের সবচেয়ে বড় আয়োজন। বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিচর্চায় ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীরাও এখন অনেক অগ্রসর, বাংলা অলিম্পিয়াড এটাই প্রমাণ করে।’

বাংলা অলিম্পিয়াডের সমন্বয়ক কামরুল আহসান বলেন, ‘ভাষার মাস ফেব্রুয়ারিতে বাংলা অলিম্পিয়াড দেশের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অনুষ্ঠান।গত এক যুগ ধরে আয়োজিত বাংলা অলিম্পিয়াড দেশের ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীদের জীবন ও দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে দিয়েছে। বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি তাদের যে ভীতি ও বিতৃষ্ণা ছিল, সেটা বাংলা অলিম্পিয়াডের মাধ্যমে অনেকটাই কেটে গেছে। এখন দেশের বড় বড় স্কুলগুলো সারা বছর আমাদের বাংলা অলিম্পিয়াডের জন্য অপেক্ষায় থাকে। বাংলা অলিম্পিয়াডে পুরস্কৃত হওয়া ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলোতে বিরাট সম্মানের একটি অর্জন বলে বিবেচিত হচ্ছে। বাংলা অলিম্পিয়াডে পুরস্কৃত শিক্ষার্থীরা ব্যক্তিজীবনেও বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির সাথে নিজেদের সংযুক্তি বাড়াচ্ছে। অনেকে গান, আবৃত্তিসহ বাংলা সংস্কৃতির নানা অনুষঙ্গে অত্যন্ত দক্ষতার স্বাক্ষর রাখছে। আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে অনেকেই বড় হয়ে বড় লেখক হবেন, বড় শিল্পী হবেন এবং দেশ-বিদেশে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবেন। অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের শিল্প অঙ্গনে বাংলা অলিম্পিয়াড উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে বলে আমরা বিশ্বাসী। করোনা ভাইরাসের কারণে গত দুই বছর বাংলা অলিম্পিয়াডের আয়োজন কিছুটা বিঘ্নিত হলেও আমাদের দমিয়ে রাখতে পারে নি। আমরা অনলাইনে প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছি এবং অনলাইনেও সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর ব্যাপক অংশগ্রহণ ছিল। করোনার দুই বছর পর এবার সশরীরে স্কুল প্রাঙ্গণে বাংলা অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবার শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ আগের চেয়ে সংখ্যায় বেশি এবং স্বতঃস্ফূর্ত।’

Advertisement
Share.

Leave A Reply