fbpx

মহানবী (সা.)-এর ব্যবহৃত পোশাক দেখতে ইস্তাম্বুলে হাজারো মানুষের ঢল

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

তুরস্কের ইস্তাম্বুলে হিরকা-ই শেরিফ মসজিদে চলছে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ব্যবহৃত পোশাক প্রদশর্নী। আর তাঁর সেই পোশাক এক নজর দেখতে, ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন।

ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতেও তাদের এতোটুকু খারাপ লাগছে না। অপেক্ষা, সেই মাহেন্দ্রক্ষণের, কখন নবীজীর (সা.) সেই পোশাকের দেখা মিলবে!

তুরস্কে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় গত দুই বছর ধরে এই পোশাকের প্রদর্শনী বন্ধ ছিল। দুই বছর পর পুনরায় পোশাকটি প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে। শুধু পবিত্র রমজান মাসে এই পোশাক প্রদর্শন করা হয়। ২২ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া এই প্রদর্শনী চলবে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত।

তুরস্কের গণমাধ্যম ডেইলি সাবাহ বলছে, হযরত উওয়াইস আল কারনি (রা.)-কে পোশাকটি উপহার দেন হযরত মুহাম্মদ (সা.)। দীর্ঘ ১৪শ বছর ধরে তার বংশধররা এটি যত্ন সহকারে সংরক্ষণ করে আসছেন।

শুক্রবার জুমার নামাজের আগে কিছু মানুষকে মসজিদের ভেতরে কাঁচে মোড়ানো বাক্সে পোশাকটি দেখার সুযোগ দেওয়া হয়। বাইরে হাজারো নারী ও পুরুষ মসজিদের ভেতরে প্রবেশের জন্য অপেক্ষায় ছিলেন।

নবীজীর ব্যবহৃত জুব্বা স্বচক্ষে দেখতে পেয়ে দর্শনার্থীরা আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন। অনেকেই পোশাক  দেখতে পেয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। কেউ কেউ আবার নামাজ পড়ে শুকরিয়া আদায় করেন।

জানা যায়, একবার হজরত ওয়াইস আল কারনি (রহ.) মহানবীর সাথে দেখা করার জন্য রওনা দিলে, মাঝপথে শুনতে পান তাঁর মা খুব অসুস্থ। মায়ের সেবা করার জন্য তিনি নবীজীর সাথে দেখা না করেই ফিরে যান। পরে মুহাম্মাদ (স) খুশি হয়ে তাঁর ব্যবহৃত জুব্বাটি তাকে উপহার দিয়ে যান।

নবী করীম (স) মারা যাওয়ার আগে সাহাবীদের জানিয়ে গিয়েছিলেন, তার পরিধানের জুব্বাটি পাবেন ইয়েমেননিবাসী হজরত ওয়াইস আল কারনি (রহ.)। হজরত ওমর (রা.) খলিফা হওয়ার পর হজরত আলী (রা.)-কে নিয়ে কুফা নগরীতে যান। দরবেশ ওয়াইস কারনিকে খুঁজে বের করে মহানবীর (স.) পবিত্র পোশাক তাঁকে উপহার দেন।

ওয়াইস কারনির বংশধররা অষ্টম শতাব্দী পর্যন্ত ইরাকে বসবাস করতেন। তাঁরা পরম যত্নে প্রিয়নবী (স.)-এর জুব্বা সংরক্ষণ করেন। এক সময় কারনি পরিবার ইরাক থেকে পশ্চিম তুরস্কে চলে যেতে বাধ্য হন। কুসাদাসির এজিয়ান শহরে বসতি স্থাপন করেন। ১৬১১ সাল পর্যন্ত তারা সেখানে ছিলেন।

১৬১১ সালে উসমানীয় সুলতান এবং খলিফা আহমেদ জানতে পারেন নবীজির (স.) পোশাকটির কথা। প্রথমে তিনি জুব্বাটি নিজের কাছে রাখার সিদ্ধান্ত নেন। পরে আলেমদের পরামর্শে সিদ্ধান্ত বদলান এবং ওয়াইস কারনির বংশধরদের ইস্তাম্বুলে বসবাসের আমন্ত্রণ জানান।

সেসময় প্রতিবছর রমজান মাসে জনসাধারণকে নবীজির (স.) জুব্বা দেখার সুযোগ দেওয়া হতো। দর্শকের সংখ্যা দিন দিন বাড়তে থাকায় সুলতান আব্দুল মেসিদের নির্দেশে হিরকা-ই শরীফ মসজিদের পরিসর বাড়ানো হয়। ১৮৫১ সাল থেকে মহানবী (স.)-এর জুব্বাটি সেখানে সংরক্ষিত রয়েছে।

Advertisement
Share.

Leave A Reply