পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ১১৬ কোটি ৬৮ লাখ টাকার মানিলন্ডারিং মামলা করেছে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ‘ধামাকা’র বিরুদ্ধে।
রাজধানীর বনানী থানায় আজ বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) ইনভেরিয়েন্ট টেলিকম বাংলাদেশ লিমিটেডের মালিক জসীম উদ্দিনসহ পাঁচজন এবং তাদের তিন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামলাটি করা হয়েছে। সিআইডি’র অর্গানাইজড ক্রাইমের বিশেষ পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবির মামলা হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, এস এম ডি জসীম উদ্দিন চিশতী নামের এক ব্যক্তি ইনভেরিয়েন্ট টেলিকম বাংলাদেশ লিমিটেডের নামে নিবন্ধন ও ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছিলেন। পরবর্তীতে ই–কমার্স ‘ধামাকা’ শপিং নামের অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে বিভিন্ন পণ্যের লোভনীয় অফার ও ভার্চ্যুয়াল সিগনেচার কার্ড বিক্রির প্রলোভন দিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে ৮শ’ ৩ কোটি টাকা আদায় করেন। আর সেখান থেকে তিনি ও তার প্রতিষ্ঠানের অন্যরা ১শ’ ১৬ কোটি ৬৮ লাখ টাকা অন্য প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসেবে স্থানান্তর করে মানি লন্ডারিং আইনে অপরাধ করেছেন বলে তথ্য পেয়েছে সিআইডি। সেই তথ্যের ভিত্তিতেই তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবির জানান, ই–কমার্স ধামাকার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করে মানি লন্ডারিংয়ের তথ্য পাওয়ার পর তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। তদন্তের পর্যায়ে গ্রেপ্তার করা হবে মামলার আসামিদের।
সিআইডি কর্মকর্তারা জানান, ধামাকা পরিচালনাকারীরা ই-কমার্স সাইট/অ্যাপসের মাধ্যমে গত বছরের ১ অক্টোবর থেকে চলতি বছরের ৩১ জুলাই পর্যন্ত বিভিন্ন সময় পাঁচ লক্ষেরও বেশি গ্রাহকের কাছ থেকে বিভিন্ন পণ্য সরবরাহের প্রলোভন দেখিয়ে তিনটি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ৮০৩ কোটি ৫১ লাখ ৯১ হাজার ৬৩ টাকা গ্রহণ করে। অন্যদিকে, ৬০০ সরবরাহকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে পণ্য কেনার নামে ২০০ কোটি টাকার পণ্য গ্রহণ করে মূল্য পরিশোধ না করেও প্রতারণা করে ধামাকা।
সিআইডি সূত্র জানায়, ইনভেরিয়েন্ট টেলিকম বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যাংক হিসাব থেকে প্রতিষ্ঠানের মালিকেরা পরস্পর যোগসাজশে ১১৬ কোটি ৬৮ লাখ ৩৩ হাজার ৪৯৬ টাকা তাদের মালিকানার প্রতিষ্ঠান ইনভেরিয়েন্ট টেকনোলজিস লিমিটেড, মাইক্রো ট্রেড ও মাইক্রো ট্রেড ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের ব্যাংক হিসাবগুলোতে স্থানান্তর করে মানি লন্ডারিং আইনে অপরাধ করেছেন।
২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২১ সালের আগস্টের মধ্যে ধামাকা শপিংয়ের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ৮০০ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। জুলাই মাসে ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলো জব্দের পর কোম্পানির অ্যাকাউন্টে ব্যালেন্স ছিল মাত্র ৯৩ হাজার টাকা।