করোনাভাইরাসের টিকা বাংলাদেশে জানুয়ারির শেষ দিকে বা ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে আসার কথা। কিন্তু মার্চের আগে বাংলাদেশে তা আসার সম্ভাবনা কমে গেল। কারণ ভারতের যে প্রতিষ্ঠান থেকে এই টিকা কেনা হচ্ছে, তারা বলেছে, আগামী দুই মাসে তারা আগে স্থানীয় চাহিদা মেটাবে। এরপরই আগ্রহী দেশগুলোয় টিকা রপ্তানি করা হবে। গতকাল রবিবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত টিকা ভারতে তৈরি করছে দেশটির সেরাম ইনস্টিটিউট। ওই টিকা কেনার জন্য সরকার গত ১৩ ডিসেম্বর সেরাম ইনস্টিটিউট ও বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের সঙ্গে চুক্তি করে। চুক্তি অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে শুরু করে পরবর্তী ছয় মাসে ৫০ লাখ করে মোট ৩ কোটি টিকা পাওয়ার কথা বাংলাদেশের।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আবদুল মান্নান গণমাধ্যমকে জানান, সেরাম ইনস্টিটিউটের সাথে চুক্তি অনুযায়ী, ওই প্রতিষ্ঠান ভারত ও বাংলাদেশকে একই সময়ে টিকা দেওয়ার কথা। তাই তিনি আশা করেন ভারতের সাথে একই সময়ে টিকা পাওয়া যাবে।
তবে তিনি ধারণা করছেন, সেরাম ইনস্টিটিউট পরে আরও কয়েকটি দেশের সঙ্গে চুক্তি করেছিল। এখানে হয়তো তাদের কথা বলা হচ্ছে। এ ব্যাপারে আরও খোঁজখবর নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
গতকাল রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট (এসআইআই) বলেছে, তারা আগামী দুই মাসে ভারতে স্থানীয় চাহিদা পূরণ করবে। তারপরই রপ্তানির উদ্যোগ নেবে। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী আদর পুনাওয়ালা গতকাল এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানান।
আদর পুনাওয়ালা বলেন, ‘ভারতের সরকারকে প্রাথমিকভাবে ১০ কোটি ডোজ টিকা সরবরাহের পরই রপ্তানি করা সম্ভব হতে পারে’।
তিনি আরো বলেন, ‘ভারত সরকার দেশে সংক্রমণের সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা মানুষগুলোকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দিতে চায়। আমি এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে পুরোপুরি একমত।’
সেরামের প্রধান নির্বাহী আদর পুনাওয়ালার ওই সাক্ষাৎকারের আগে ভারতের কর্তৃপক্ষ করোনার দুটি টিকার অনুমোদন দেয়। এর একটি সেরাম ইনস্টিটিউটে প্রস্তুতকৃত অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনার টিকা। অপরটি ভারতীয় প্রতিষ্ঠান ভারত বায়োটেকের উদ্ভাবিত টিকা।
তবে ভারত সরকারের সঙ্গে এখনো টিকার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক চুক্তি হয়নি সেরাম ইনস্টিটিউটের। শিগগির এই চুক্তি হবে বলে প্রত্যাশা করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আদর পুনাওয়ালা বলেন, সরকারের সঙ্গে সব ধরনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়ে যাওয়ার পর ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে তারা ৫ কোটি ডোজ টিকা সরবরাহ করতে পারবেন। আর দেড় মাসের মধ্যে ৭ থেকে ৮ কোটি ডোজ টিকা সরবরাহ করতে পারবেন বলে তারা প্রত্যাশা করছেন।