দেশের তৈরি পোশাক খাত নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি জানিয়েছে, পোশাক খাতে সুশাসনের ঘাটতি আরও ঘনীভূত হয়েছে করোনাকালে। প্রতিবেদনে বলা হয়, পোশাক মালিকরা প্রণোদনা পাওয়ার পরও বিভিন্ন কারখানায় ২১ হাজারের বেশি শ্রমিক ছাঁটাই হয়েছে। এর বাইরে সাব কন্ট্রাক্ট কারখানাসহ অন্যান্য কারখানায় আরও অনেক শ্রমিক ছাঁটাই করা হয়েছে।
টিআইবি’র প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, করোনার সংকটকালে পোশাক শ্রমিকদের মজুরি প্রদান না করা, বিদ্যমান আইন ভঙ্গ করে মালিক কর্তৃক কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা, শ্রমিক ছাঁটাই এবং শ্রমিকের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত না করা সংক্রান্ত বিভিন্ন অভিযোগ ।
১৭ ডিসেম্বর তৈরি পোশাক খাতের করোনা ভাইরাস সংকট কালে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও করণীয় শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
টিআইবি’র জানিয়েছে, পরিস্থিতি মোকাবিলা ও শ্রমিকের স্বার্থ রক্ষায় কারখানায় এক বছর কর্মরত এমন শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষার আওতায় আনার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। প্রণোদনার অর্থ মালিকরা পেলেও শ্রমিকের ক্ষেত্রে তারা মাত্র ১৬ শতাংশ পেয়েছে এটা এক প্রকার বৈষম্য বলা যায়। করোনার দ্বিতীয় পর্যায়ের সংক্রমণ মোকাবিলায় সরকার ও মালিক সংগঠনগুলো কর্তৃক গঠিত বিভিন্ন কমিটিকে পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রী ও যাতায়াতের ব্যবস্থা করতে হবে। এসব কমিটি শ্রমিকদের অধিকার ও কারখানায় তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতকরণে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে।
প্রতিবেদনের সুপারিশে উঠে এসেছে, শ্রমিক অধিকার ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতে সরকার, মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত কমিটির নিয়মিত ও কার্যকর পরিদর্শন নিশ্চিত করতে হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও জার্মানির সহায়তা তহবিল ব্যবহারের জন্য করোনা মহামারির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের সঠিক তালিকা অবিলম্বে প্রণয়ন করতে হবে।
প্রতিবেদনে টিআইবি জানায়, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া, শ্রমিক ছাঁটাই, কার্যাদেশ বাতিল ও পুনর্বহাল, প্রণোদনার অর্থের ব্যবহার ও বণ্টন ইত্যাদি সব তথ্য সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে এবং এসব তথ্য নিয়মিত হালনাগাদ করতে হবে।