fbpx

মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধিতে সরাসরি অবদান রেখেছে ১৭টি পণ্য: ক্যাব

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

সদ্য সমাপ্ত ২০২২ সালে ঢাকায় বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১১ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। এই মূল্যস্ফীতি বাড়ার ক্ষেত্রে প্রায় ১৭টি পণ্য সরাসরি অবদান রেখেছে।

শনিবার (২১ জানুয়ারি) ‘২০২২ সালে ঢাকা মেগাসিটিতে মূল্যস্ফীতির চাপ ক্যাবের মূল পরিবীক্ষণ উপাত্ত থেকে প্রাপ্ত ফলাফলে’ এমন তথ্য জানা গেছে। এটি প্রকাশ করেছে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।

ক্যাব জানিয়েছে, ক্যাব ঢাকা মেগাসিটি (ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নিয়ে গঠিত) জুড়ে ১১টি বাজার থেকে মাসিক দামের তথ্য সংগ্রহ করে ফলাফলটি তৈরি করেছেন ড. মাহফুজ কবীর। দৈনিক দাম পর্যবেক্ষণে ১৪১টি খাদ্যসামগ্রী, ৪৯টি খাদ্যবহির্ভূত পণ্য এবং ২৫টি পরিষেবা অন্তর্ভুক্ত করে ফলাফল প্রকাশ করা হয়।

এতে বলা হয়, পণ্য ও সেবার মূল্যবৃদ্ধি মূল্যস্ফীতির হার বৃদ্ধিতে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে। যেমন: চাল, আটা, ডাল, বেকারি পণ্য, চিনি, মাছ, ডিম, দেশি মুরগি, ভোজ্যতেল, আমদানি করা ফল, চা-কফি, স্থানীয় এবং আমদানি করা দুধ, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, ধোয়া এবং ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যসামগ্রী এবং পরিবহন খরচ।

ড. মাহফুজ কবীর জানান, ২০২২ সালে মূল্যস্ফীতি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, ২০১১ সালের পর গত বছরে সাধারণ মূল্যস্ফীতি রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। শহর ও গ্রামে উভয় জায়গায় মূল্যস্ফীতি বেড়েছে, যা বাংলাদেশের নিম্ন ও মধ্যম আয়ের পরিবারের দুর্দশা বাড়িয়েছে।

তিনি আরও জানান, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে অর্থনৈতিক অস্থিরতা ও মন্দাভাব সৃষ্টি হয়েছে এবং বৈশ্বিক সরবরাহ শৃঙ্খলে ব্যাঘাত ঘটেছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপ মানুষের প্রকৃত আয় এবং পারিবারিক কল্যাণ হ্রাস করে। এটি বেতনভোগী নিম্ন-মধ্যম এবং মধ্যম আয়ের পরিবারের দুর্দশা বাড়িয়ে দিয়েছে।

ক্যাব তাদের সুপারিশে জানিয়েছে, উচ্চ মূল্যস্ফীতির সময়ে নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোকে পর্যাপ্তভাবে কভার করার জন্য যথাযথ পরিবীক্ষণের সঙ্গে ওএমএস স্কিমকে শক্তিশালী করা উচিত। ন্যূনতম টার্গেটিং ত্রুটির অত্যধিক লক্ষ্যসহ সারা বাংলাদেশে এক কোটি পরিবারের খাদ্যসহায়তা বাড়ানো উচিত। দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির আওতা বাড়াতে হবে। এ ছাড়া অস্থায়ীভাবে আওতা বাড়ানোর মাধ্যমে খাদ্য, খাদ্যবহির্ভূত মৌলিক পণ্য এবং দুস্থ জনগোষ্ঠীর কাছে নগদ হস্তান্তর কর্মসূচি বাড়ানো উচিত। যেহেতু গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর তুলনায় শহুরে জনগোষ্ঠী মূল্যস্ফীতির কারণে বেশি চাপ ও অসহায়ত্বের সম্মুখীন হয়, তাই সামাজিক সুরক্ষা জোরদার করার মাধ্যমে শহুরে নিম্ন আয়ের মানুষের প্রতি আরও বেশি মনোযোগ দেওয়া উচিত।

সুপারিশে ক্যাব জানায়, সরকার দরিদ্র ও দুস্থ জনগোষ্ঠীর ওপর মূল্যস্ফীতির চাপ কমানোর জন্য ভর্তুকিযুক্ত খাদ্যসহায়তা এবং সামাজিক সুরক্ষার অধীনে সহায়তা বৃদ্ধি করেছে। কিন্তু নিম্ন ও মধ্যম আয়ের ভোক্তাদের ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতির চাপ থেকে রক্ষা করতে সরকারের শহরাঞ্চলে সামাজিক সুরক্ষা স্কিম বাড়ানো উচিত।

সরকার কোভিড-১৯-এর সময় ওএমএস কার্যক্রমকে উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়েছে, যা এই ভোক্তাগোষ্ঠীকে অর্থনৈতিক শ্লথগতি এবং মূল্যবৃদ্ধির দুর্দশা থেকে রক্ষা করার জন্য ২০২২ সালে আরও প্রসারিত করা হয়েছে। কিন্তু অত্যন্ত উচ্চ চাহিদার বিপরীতে ওএমএসের মাধ্যমে খাদ্য সরবরাহের অপর্যাপ্ততা ও নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীর মধ্যে ওএমএসের খাদ্যপণ্যের ন্যায্য বণ্টন নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে যথাযথ পরিবীক্ষণের অভাব রয়েছে।

Advertisement
Share.

Leave A Reply