fbpx

‘যুদ্ধ থেকে পরিত্রাণ পেতে গৌতম বুদ্ধের শিক্ষা প্রয়োজন’  

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

বৌদ্ধ ধর্মের প্রবর্তক গৌতম বুদ্ধের জন্মদিন আজ। বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারীদের বিশ্বাস, খ্রিস্টপূর্ব ৬২৩ অব্দের এ দিনে গৌতম বুদ্ধ জন্মগ্রহণ করেন। ৫৮৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দের এ দিনে তিনি বোধিলাভ করেন এবং ৫৪৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দের এ দিনে তিনি নির্বাণ লাভ করেন।

করোনার কারনে গত দুই বছর দিনটি সীমিত পরিসরে উদযাপন করা হলেও এবার সারাদেশে বৌদ্ধ তীর্থস্থানগুলোতে নানা আয়োজনে উদযাপিত হচ্ছে শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা।

বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারীরা এই পূর্ণিমা তিথিতে স্নান করে শুচিবস্ত্র ধারণ করেছেন। আর মন্দিরে মন্দিরে চলছে বুদ্ধের বন্দনা। অর্চনার পাশাপাশি পঞ্চশীল, অষ্টশীল, সূত্রপাঠ, সূত্রশ্রবণ ও সমবেত প্রার্থনায় স্মরণ করা হচ্ছে বৌদ্ধ ধর্মের প্রবর্তককে।

দিনটি উদযাপন উপলক্ষে রবিবার ভোর থেকেই বাসাবোর ধর্মরাজিক বৌদ্ধ মহাবিহারে ভক্তরা জড়ো হতে থাকেন। তারা অংশ নেন প্রভাতফেরী, প্রাতঃরাশ, বুদ্ধপূজা, সংঘদান ও ধর্মসভায়।

প্রার্থনার আগে বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের সভাপতি ভদন্ত বুদ্ধপ্রিয় মহাথেরো বলেন, ‘এই মুহূর্তে তৃতীয় বিশ্ব যু্দ্ধের… যদি তৃতীয় বিশ্ব যু্দ্ধ লেগে যায়, তাহলে কেউ বাঁচবে না। সুতরাং এ থেকে পরিত্রাণ পেতে গৌতম বৌদ্ধের শিক্ষা প্রয়োজন। উনার গুণাবলী ধারণ ও বহন করতে হবে। ভালোবাসার মধ্য দিয়ে শান্তি ফিরিয়ে আনতে হবে বিশ্বে।’

পাশাপাশি দেশের প্রায় দুই হাজার বৌদ্ধ বিহারে উদযাপিত হচ্ছে বুদ্ধ পূর্ণিমা। বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘ, বুড্ডিস্ট ফেডারেশন, বুড্ডিস্ট ইয়ুথ ফোরাম, বুড্ডিস্ট কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন নানা কর্মসূচি পালন করছে।

দিনটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলাদা আলাদা বাণীতে বৌদ্ধ সম্প্রদায়কে শুভেচ্ছা জানান এবং সম্প্রীতির বন্ধন আরও দৃঢ় করার আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রপতি তাঁর বাণীতে বলেন, ‘মহামতি বুদ্ধ একটি সৌহার্দ ও শান্তিপূর্ণ বিশ্ব প্রতিষ্ঠায় আজীবন সাম্য ও মৈত্রীর বাণী প্রচার করে গেছেন। ‘অহিংসা পরম ধর্ম’ বুদ্ধের এই অমিয় বাণী আজও সমাজে শান্তির জন্য সমভাবে প্রযোজ্য। আজকের এই অশান্ত ও অসহিষ্ণু বিশ্বে মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধ, যুদ্ধ-বিগ্রহ, ধর্ম-বর্ণ-জাতিতে হানাহানি রোধসহ সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় মহামতি বুদ্ধের দর্শন ও জীবনাদর্শ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।’

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। আবহমানকাল থেকে এ দেশের সকল ধর্মের মানুষ তাদের নিজ নিজ ধর্ম ও আচার-অনুষ্ঠানাদি অত্যন্ত জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালন করে আসছে। এটা এ দেশের সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল ঐতিহ্য। এই ঐতিহ্যের চর্চা ও বুদ্ধের মহান আদর্শকে ধারণ করে বৌদ্ধ সম্প্রদায় দেশের উন্নয়নে তাদের কর্মপ্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবেন।‘

বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী সকলেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা উৎসব উদযাপন করবেন। শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা সবার জন্য বয়ে আনুক অনাবিল শান্তি ও সমৃদ্ধি- সবার কাছে তিনি এই আশা ব্যক্ত করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বাণীতে বুদ্ধ পূর্ণিমায় বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল মানুষের জীবনে সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি ও মঙ্গল কামনা করেন। তিনি বলেন, ‘বুদ্ধ সত্য ও সুন্দরের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে মানবজগতকে আলোকিত করতে কাজ করে গেছেন। মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধ ও সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য তার জীবনাদর্শ ও শিক্ষা অনুসরণ করা প্রয়োজন।‘

সরকারপ্রধান সবাইকে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘এই দেশে ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। আমাদের সব ধর্মের মানুষ একত্রিত হয়ে বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসবগুলো অত্যন্ত আনন্দ ও প্রীতির মাধ্যমে উদযাপন করে থাকে। আগামীতে বাংলাদেশের সম্প্রীতির চর্চা ও বন্ধনকে আরো সুদৃঢ় করতে আমাদের সবাইকে উদার হয়ে কাজ করতে হবে। আমরা সম্প্রীতির বাতাবরণে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যেতে চাই।‘

Advertisement
Share.

Leave A Reply