fbpx

রক্তে পাওয়া ভাষার বিশ্বজয়ের পর্ব

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

ভাষার গুরুত্বপূর্ণ ওয়েবসাইট এথনোলগের ২০২০ সালের ২২তম সংস্করণের পরিসংখ্যান বলছে, পৃথিবীজুড়ে মোট বাংলা ভাষাভাষীদের সংখ্যা প্রায় ২৬ কোটি ৫০ লাখের কিছু বেশি। আর ক্রমিক বিচারে বাংলার অবস্থান সারা বিশ্বের ভাষাগুলোর মধ্যে পঞ্চম। পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩ শতাংশ মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলে।

সে হিসেবে মাতৃভাষা বাংলা এখন সমৃদ্ধ হিসেবে দাবি করা যেতেই পারে। আর প্রযুক্তির ছোঁয়ায় তা এখন নিজের ডানা আরও ছড়িয়ে দিয়েছে। কেননা অনলাইনে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে এটি ব্যবহৃত হচ্ছে। বাংলায় ওয়েবসাইট তৈরি, বাংলায় অ্যাপস তো অনেক আগেই হয়ে গেছে।

এখন কাজ চলছে বাংলা ভাষায় চ্যাটবট তৈরি, অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্ম তৈরি আর  অনলাইনে বাংলা ভাষার মান উন্নয়ন নিয়ে।

এরই মাঝে বাংলাদেশ কান্ট্রিকোড টপ লেভেল ডোমেইন ডট বাংলা অর্জন করেছে। প্রযুক্তিখাতে বাংলাকে সমৃদ্ধ করতে আরও ১৬টি টুলস ব্যবহারের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। শুধু তাই নয়, সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ ১৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলা ভাষার উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্প গ্রহণ করেছে।

বাংলা কার্পাস, বাংলা ওসিআর, বাংলা স্পিচ টু টেক্সট, টেক্সটু টু স্পিচ, জাতীয় বাংলা কি-বোর্ড, বাংলা স্টাইল গাইড, বাংলা ফন্ট, বাংলা মেশিন ট্রান্সলেটর নির্মাণের কাজ চলছে সমানতালে। ফলে সহজেই যেকেউ অনলাইন এবং ডিজিটাল ডিভাইসে বাংলা ভাষা খুব ভালো করে পড়তে পারবেন।

মুক্তপাঠ

অনলাইনে বাংলা ভাষার সবচেয়ে বড় লার্নিং প্ল্যাটফর্ম হচ্ছে মুক্তপাঠ। এখানে অনলাইনে সাধারণ শিক্ষা, কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও জীবনমুখী শিক্ষার সুযোগ রয়েছে। এখন পর্যন্ত এখানে প্রায় ১০ লাখের বেশি শিক্ষার্থী নিবন্ধন করেছে। এই অ্যাপের মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনলাইনে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। ১ লাখের বেশি শিক্ষার্থী অ্যাপটি ব্যবহার করে মুক্তপাঠে শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে বলে জানা গেছে।

অনলাইনে বাংলা ভাষার মান উন্নয়ন

বাংলা ভাষার মান উন্নয়নে বিদ্যমান কোড সেটের মান বিডিএস ১৫২০:২০০০ -কে হালনাগাদকরণ এবং মোবাইলফোনে বাংলা ব্যবহারের জন্য বাংলা কি-প্যাডের মান উন্নয়ন করা হয়েছে। বাংলা বর্ণমালার চলতি কোডকে ইউনিকোড ৬ -এর ভিত্তিতে হালনাগাদ করা হয়েছে। পাশাপাশি বিএসটিআই বাংলা ক্যারেক্টার কোড সেট -ডাব্লিউইউ বিডিএস ১৫২০:২০১১ এবং প্রস্তাবিত বাংলা কি-প্যাডটি বিডিএস ১৮৩৪:২০১১-কে  বাংলাদেশ মান হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। এছাড়া সর্টিং ডাটা, বাংলা ফন্ট কনভার্সন ইত্যাদির কাজও সমান্তরালে এগিয়ে চলছে।

বিশ্বব্যাপি বাংলার প্রসারের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ থেকে একজন প্রতিনিধি নিয়োগ দিয়েছে। তিনি বাংলা কনটেন্ট, কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড ইত্যাদি বিষয়গুলোর দেখাশোনা করছেন বলে জানা গেছে।

শুধু তাই নয়, সার্চ ইঞ্জিন গুগল বাংলায় অনুবাদ অপশন চালু করেছে। বাংলা শব্দের তথ্যভান্ডার বাড়াতে গুগল ২০১৫ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশের একাধিক কমিউনিটি গ্রুপের মাধ্যমে একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। সেখানে সরকারের আইসিটি বিভাগের সঙ্গে যুক্ত ছিল বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক (বিডিওএসএন)।  তখন গুগলে কয়েক লাখ বাংলা শব্দ যোগ করা হয়।

এদিকে পিছিয়ে নেই স্মার্টফোনগুলোও। এগুলোর জন্য বাংলায় অ্যাপস তৈরি হচ্ছে। আর সরকারও ডিভাইসের কি-প্যাডে বাংলা ভাষা বাধ্যতামূলক করেছে।  তাই সব মোবাইল ফোনেই বাংলা লেখা ও পড়া যাচ্ছে।

এছাড়া বিদেশ থেকে আমদানিকৃত কম্পিউটার, ল্যাপটপের কি বোর্ডেও থাকছে বাংলা ভাষা। বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল কনটেন্টও তৈরি হচ্ছে বাংলায়।  ফলে তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলা ভাষা এগিয়ে যাচ্ছে সগৌরবে।

রক্তে পাওয়া ভাষার এখন চলছে বিশ্বজয়ের পর্ব। যা গর্বিত করে প্রতিটি বাঙালিকেই।

Advertisement
Share.

Leave A Reply