রাত পোহালেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বসে শ্রমিক কেনাবেচার হাট। দিনমজুর হিসেবে শ্রম বিক্রির জন্য অপেক্ষায় থাকে করে শত মুখ। চলে দরকষাকষিও।
একে তো কাজ নেই, তার ওপর দ্বিতীয় দফায় বেড়েছে লকডাউনের মেয়াদ। এ যেন মরার ওপর খরার ঘা। রাজধানীর রামপারা কাঁচা বাজারের পাশে ধর্ণা দেয়া এই মানুষরা বলেন, কাজের তুলনায় শ্রমিক অনেক বেশি, আর সেই সুবিধাটা নিতে ছাড়ছেনা মহাজনরাও। তৈয়ব নামের এক শ্রমিক বলেন, ”অহন কাম কাজ নাই, এক দিন পাইলে সাতদিন পাই না। আটশ টাহার মুজুরি মাহজনে তিনশ টাকাও কয়। চলা বড় কষ্ট।”
এদের বেশির ভাগই ইট ভাঙ্গা, মাটি কাটা, ভবন ঢালাই ও টাইলস পুডিংকরার কাজের সাথে জড়িত। এক দিন কাজ জুটলে তিন দিন থাকতে হয় বেকার। পরিবার পরিচজন নিয়ে তাই অনাহার-অর্ধাহারে কাটছে জীবন। এক শ্রমিক বলেন, ‘কি করমু বাবা, পোলা-মাইয়া লইয়া বিপদে পরছি, কারো কাছে হাত পাতলেও কিছু পাওয়া যায় না।’
একই অবস্থা দেখা যায়, বাড্ডা লিক রোডের একটি হাটেও। শ্রমঘামের জীবনে শত না পাওয়ায় জমেছে ক্ষোভের পাহাড়। অনেকেই বলেন, ভোটের সময় ভোট দিলেও তাদের ভাল মন্দ দেখার জন্য থাকে না কেউ। লকডাউন তাদের কাছে যেন যাতা কলের মতই।
গাড়ি বন্ধ থাকায় গ্রামেও ফিরতে পারছেন না এই শ্রমিকরা। তার ওপর বাড়ি ভাড়ার চাপ, এমন দুর্দিন যেন আর আসেনি আগে।
খেটে খাওয়া এই মানুষদের দাবি, চলমান অস্থিরতায় সরকার থেকে যতটুকু আর্থিক সুবিধা দেয়া হয়, নানা রকম ছলছুতোয় তার বেশির ভাগই বাগিয়ে নেয় ধনীরা। যারা সত্যি হতদরিদ্র তাদের হাতে যেন সাহায্য পৌঁছায়, সে দিকে কড়া দৃষ্টি দেয়ার আহ্বান জানান তারা।