fbpx

‘রেড’ মওলানার জন্মদিন

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

অন্তরে খোদা। আর কর্মে নিবেদিত সকল সৃষ্টির জন্য। জুলুমের বিরুদ্ধে লড়াইকেই মনে করতেন শ্রেষ্ঠতম ইবাদত। রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব তিনি। কিন্তু ছিল না ক্ষমতার গদি নিয়ে কোনো খায়েশ। আমৃত্যু ছিলেন জনতার কাতারে। জনসভায় গর্জে উঠতেন ‘খামেশ!’ উচ্চারণে। তাতে টলে উঠতো রাজ সিংহাসন। ‘টাইম’ ম্যাগাজিন তাই কাভারের শিরোনামে ডেকেছিলো ‘রেড মওলানা’ নামে। আর কেউ নন। এই সংগ্রামীর নাম আবদুল হামিদ খান ভাসানী।

কিংবদন্তি এই রাজনৈতিক নেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ১৪০তম জন্মদিন আজ। তিনি ১৮৮০ সালের ১২ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জের ধানগড়া পল্লীতে জন্মগ্রহণ করেন। বিংশ শতাব্দীর ব্রিটিশ ভারতের অন্যতম তৃণমূল রাজনীতিবিদ ও গণআন্দোলনের নায়ক ছিলেন মওলানা ভাসানী । বাংলাদেশের মানুষের কাছে তিনি ‘মজলুম জননেতা’ হিসেবেও পরিচিত।

‘রেড’ মওলানার জন্মদিন

আমৃত্যু ছিলেন জনতার কাতারে। ছবি : সংগৃহীত

স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি ছিলেন, যে দলটি পরবর্তী সময়ে নাম বদল করে হয়েছে আওয়ামী লীগ। ১৯৫৭ সালে কাগমারী সম্মেলনে তিনি পাকিস্তানের পশ্চিমা শাসকদের ‘আস্ সালামু আলাইকুম’ বলে সর্বপ্রথম পূর্ব পাকিস্তানের বিচ্ছিন্নতার ঐতিহাসিক ঘণ্টা  বাজিয়েছিলেন। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার শুরু থেকেই তিনি তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছিলেন। সাহসী ও নিবেদিত প্রাণ মাওলানা ভাসানী তার প্রায় পুরোটা জীবন নির্যাতিত ও নিপীড়িত মানুষের কল্যাণে কাজ করে গেছেন।

‘রেড’ মওলানার জন্মদিন

বাংলার স্বাধীনতাকে সুগম করে ভাসানী-মুজিব জুটি। ছবি : সংগৃহীত

মওলানা ভাসানী সম্পর্কে সাংবাদিক, কলামনিস্ট ও তাঁকে নিয়ে গ্রন্থ লেখা সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, ‘নিম্নস্তরের মানুষের প্রতি মৌখিক ভালোবাসা ও দরদ দেখিয়ে অন্তরে অশেষ ঘৃণা পোষণ করে এ উপমহাদেশের যেসব রাজনৈতিক নেতা রাষ্ট্রের ও সমাজের উচ্চস্তরে উঠে গেছেন এবং জনগণের দুঃখ-দুর্দশার কথা অবলীলায় ভুলে গেছেন, ভাসানী ছিলেন তাদের বিপরীত মেরুর মানুষ। ধীরে ধীরে যখন তিনি সমাজে উচ্চ আসন পাচ্ছিলেন, তখন তিনি কৃষকের পোশাক বর্জন করে “ভদ্রলোক” হওয়ার প্রয়োজন বোধ করেননি। তার চরিত্রের একটি মৌলিক ও অসামান্য তাৎপর্য এই ব্যাপারটির মধ্যেও খুঁজে পাওয়া যাবে।’

‘রেড’ মওলানার জন্মদিন

মজলুম উপাধি এই জনতারই দেওয়া। ছবি : সংগৃহীত

যৌবনে আসামের ধুবড়ী জেলার ভাসানচরে তিনি এক বিশাল কৃষক সম্মেলন আয়োজন করেছিলেন। যার পর লোকমুখে তিনি “ভাসানচরের মওলানা” বা “ভাসানীর মওলানা” হিসাবে পরিচিত হয়ে ওঠেন। পরবর্তীকালে “ভাসানী” শব্দটি তাঁর নামের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে যুক্ত হয়ে যায়।মানব মুক্তির আদর্শ থেকে তিনি এক দিনের জন্যও বিচ্যুত হননি।

ভারত কর্তৃক নির্মিত দেশবিনাশী ফারাক্কা বাধের বিরুদ্ধে স্বাধীন দেশে ‘ফারাক্কা লংমার্চ’ করেন প্রবীণ এ নেতা।  ১৯৭৬ সালের ১৬ই মে ফারাক্কা বাঁধ অভিমুখে লং-মার্চ কর্মসূচির শুরু হয়। ১৯৭৬ সালের ১৭ই নভেম্বর মওলানা ভাসানী প্রয়াত হন ঢাকায়।তাঁকে  টাঙ্গাইলের সন্তোষে দাফন করা হয়।

আমৃত্যু লড়াকু এই নেতার আজ জন্ম দিবস। সংগ্রামী শুভেচ্ছা তাঁর প্রতি।

Advertisement
Share.

Leave A Reply