চলতি বছর উচ্চশিক্ষা খাতে উন্নতি এবং করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সামর্থ্য বাড়াতে বাংলাদেশকে ১৯ কোটি ১০ লাখ ডলার বা ১ হাজার ৬২২ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন করেছে বিশ্বব্যাংকের নির্বাহী পরিচালকদের পর্ষদ। শুক্রবার (২৫ জুন) এই অনুমোদন দেওয়া হয়। এছাড়া আফগানিস্তানকেও ১ কোটি ৮০ লাখ ডলার অনুদান অনুমোদন করা হয়েছে।
‘হায়ার এডুকেশন অ্যাক্সিলারেশন ট্রান্সফরমেশন প্রজেক্ট’ নামের প্রকল্পের আওতায় বিশ্বব্যাংক এই ঋণ দেবে। পাঁচ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩০ বছর মেয়াদী এই ঋণ দেওয়া হবে বিশ্বব্যাংকের ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইডিএ) থেকে। প্রকল্পটি বাংলাদেশের জাতীয় গবেষণা ও শিক্ষা নেটওয়ার্ক উন্নয়ন করবে।
বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, তাদের এই অর্থায়নে শিক্ষা খাতে দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম আঞ্চলিক প্রকল্পটি উচ্চশিক্ষায় আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে। এর মধ্যে রয়েছে এ অঞ্চলের সমজাতীয় কর্মসূচির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের অন্য দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নের সুযোগ, ক্রেডিট ট্রান্সফার স্কিম বা এক দেশ থেকে এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে অংশীদারির ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে আরও বেশি নারীকে মানসম্মত উচ্চশিক্ষার সুযোগ সৃষ্টিতে সহায়তা করা হবে, যারা শ্রমশক্তিতে নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে সহায়তা করবে।
বিশ্বব্যাংকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কোডিড-১৯ মহামারি দক্ষিণ এশিয়ার উচ্চশিক্ষা খাতকে ক্ষতির মুখে ফেলেছে, যার ফলে অনেক শিক্ষার্থী ঝরে পড়ছে এবং অনেকে ভর্তি হতে পারছে না। কোভিডের কারণে বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থীরা বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে। ফলে উচ্চশিক্ষা খাতে লিঙ্গবৈষম্য বাড়ছে। প্রকল্পটি ডিজিটাইজেশনের ওপর জোর দিয়ে উচ্চশিক্ষা খাতে অতিমারির কারণে জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলা এবং টেকসই থাকার পদ্ধতিগত সামর্থ্য বাড়াতে সহায়তা করবে।
বাংলাদেশ ও ভুটানে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন বলেন, ‘আমাদের সামগ্রিক ভবিষ্যতের জন্য উচ্চশিক্ষা অপরিহার্য, এটি কোনো বিকল্প ব্যবস্থা নয়। বাংলাদেশের উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার আকাঙ্ক্ষা পূরণে একটি দক্ষ ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিযোগিতায় সক্ষম শ্রমশক্তি তৈরিতে যুব জনগোষ্ঠীর জন্য বিনিয়োগ করতে হবে।’
এই অর্থায়ন উচ্চশিক্ষায় শিক্ষার মান ও প্রাসঙ্গিকতা বাড়াতে ও বিশেষত নারীদের ক্ষেত্রে সহায়ক হবে। একই সঙ্গে কোভিড-১৯ অতিমারির সময় শিক্ষা কার্যক্রম চলমান রাখা নিশ্চিত করবে বলেও জানান বিশ্বব্যাংকের এই কান্ট্রি ডিরেক্টর।
‘ভার্চুয়াল গতিশীলতা’ তৈরিতে এই প্রকল্পের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জন্য ‘দক্ষিণ এশিয়া উচ্চশিক্ষা পোর্টাল’ বাংলাদেশ থেকে চালু করা হবে। যেখানে নিবন্ধিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিজ দেশের বাইরে অন্য দেশের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোর্স নিতে পারবে।
