fbpx

‘সঠিক নিয়মে’ হিজাব না পরায় ইরানি নারীকে কারাদণ্ড!

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

ইরানে মেলিকা কারাগোজলু নামের এক তরুণী হিজাব ছাড়া কয়েক সেকেন্ডের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন। ফলে দেশটিতে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এই ভিডিও পোস্টের দায়ে মেলিকাকে তিন বছর আট মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

মেলিকা কারাগোজলুর আইনজীবী মোহাম্মদ আলী কামফিরুজি ১৯ সেপ্টেম্বর এক টুইটে লেখেন, সম্প্রতি তেহরানের ইসলামিক রেভুলিউশনারি আদালত এই দণ্ড ঘোষণা করে।

সঠিক নিয়মে হিজাব না পরার অভিযোগে মাহসা আমিনি নামের এক নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়, পরে সে পুলিশি হেফাজতে মারা যাওয়ায় বিক্ষোভের আগুনে জ্বলছে গোটা ইরান। তেহরানসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় গত কয়েক দিনে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ব্যাপক সংঘর্ষ চলছে। মাহসার মৃত্যুর পর চলমান বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন অন্তত পাঁচ জন।

এই রেশ কাটতে না কাটতেই এখন মেলিকা কারাগোজলুকে কারাদণ্ড দেয়ার খবর এল।

জানা গেছে, মেলিকা গত ১২ জুলাই দেশব্যাপী ‘আইন-অমান্য’ কর্মসূচিতে অংশ নেয়ার পর গ্রেপ্তার হন। এই কর্মসূচির অংশ হিসেবেই তিনি বাধ্যতামূলক হিজাবের প্রতিবাদ জানিয়েে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিওটি পোস্ট করেন।

১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পরই ইরানে নারীদের জন্য হিজাব বাধ্যতামূলক করা হয়। ইরানের ধর্মীয় শাসকদের কাছে নারীদের জন্য এটি অতিক্রম-অযোগ্য সীমারেখা। বাধ্যতামূলক এই পোশাকবিধি মুসলিম নারীসহ ইরানের সব জাতিগোষ্ঠী ও ধর্মের নারীদের জন্য প্রযোজ্য।

হিজাব আইন আরও কঠোরভাবে প্রয়োগের জন্য চলতি বছরের ৫ জুলাই ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি একটি আদেশ জারি করেন। এর মাধ্যমে সঠিক নিয়মে পোশাকবিধি অনুসরণ না করা নারীদের সরকারি সব অফিস, ব্যাংক এবং গণপরিবহনে নিষিদ্ধ করা হয়।

এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে #no2hijab হ্যাশট্যাগ দিয়ে শুরু হয় প্রতিবাদ। দেশটির নারী অধিকার কর্মীরা গত ১২ জুলাই সরকার ঘোষিত জাতীয় হিজাব ও সতীত্ব দিবসে প্রকাশ্যে তাদের বোরখা ও হিজাব সরানোর ভিডিও পোস্ট করেন।

এই ঘটনার পরপরই ইরানি নিরাপত্তাবাহিনী প্রতিবাদে অংশ নেয়া নারীদের ধরপাকড় শুরু করে। এতে মেলিকা কারাগোজলুও গ্রেপ্তার হন।

টুইটে কারাগোজলুর আইনজীবী লিখেছেন, তার বেশ কিছু শারীরিক জটিলতা রয়েছে, কারাগোজলুকে একজন বিশেষজ্ঞ মনোরোগ বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে রাখার পরামর্শও দিয়েছেন চিকিৎসক। তবে কারাদণ্ড দেয়ার ক্ষেত্রে বিচারক এগুলোর কোনোটিই আমলে নেননি।

উল্লেখ্য, গত ১৩ সেপ্টেম্বর পুলিশ ইরানের দক্ষিণাঞ্চল থেকে তেহরানে ঘুরতে আসা মাহসাকে আমিনিকে একটি মেট্রো স্টেশন থেকে গ্রেপ্তার করে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি সঠিকভাবে হিজাব পরেননি।

জানা গেছে, পুলিশ হেফাজতে থাকার সময়েই মাহসার হার্ট অ্যাটাক হয়। এরপর তিনি কোমায় চলে যান। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার তার মৃত্যু হয়। পুলিশ মাহসাকে হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করলেও পরিবারের অভিযোগ গ্রেপ্তারের পর তাকে পেটানো হয়। এরপরই গত কয়েক দিন ধরেই উত্তাল ইরান। ফেসবুক ও টুইটারে #mahsaamini এবং #Mahsa_Amini হ্যাশট্যাগ দিয়ে চলছে প্রতিবাদ।

আর নারীর পোশাকের স্বাধীনতার পক্ষে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষও চলছে।

Advertisement
Share.

Leave A Reply