পর্যটন নগরী কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার লক্ষ্যে একটি প্রকল্পের অংশ হিসেবে দেশে প্রথমবারের মতো সমুদ্রের ওপর নির্মিত হচ্ছে রানওয়ে।
আজ রবিবার (২৯ আগস্ট) বিমানবন্দরটির রানওয়ে সম্প্রসারণ কাজের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় তিনি বঙ্গভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী এবং সিভিল অ্যাভিয়েশন অথোরিটি অব বাংলাদেশ (সিএএবি)’র চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
সমুদ্র তীরবর্তী জমি পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ করে সরকার বিমানবন্দরটির আরো উন্নয়ন ঘটানোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। যেন আন্তর্জাতিক বিমান কোম্পানিগুলো তাদের বড় বড় বিমানকেও এই বিমানবন্দরে অবতরণ করাতে পারে।
১০ হাজার ৭০০ ফুটের রানওয়ের নির্মাণ খরচ ধরা হয়েছে এক হাজার ৫৬৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। যার পুরোটাই অর্থায়ন করছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।
এই প্রকল্পটি সম্পন্ন হলে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের বোয়িং ৭৭৭ ও ৭৪ এর মতো বড় আকারের বিমানগুলো এই বিমানবন্দরে অবতরণ করতে পারবে এবং এর ফলে এখানে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করার পথ সুগম হবে।
এর আগে, শনিবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে কক্সবাজার বিমানবন্দরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বিমানবন্দরটির রানওয়ে সম্প্রসারণের কাজ উদ্বোধনের কথা জানান বেসরকারি বিমান চলাচল (বেবিচক) কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান।
তিনি জানান, বর্তমানে কক্সবাজার বিমানবন্দরে ৯ হাজার ফুট দীর্ঘ একটি রানওয়ে রয়েছে। এটি ১০ হাজার ৭০০ ফুটে উন্নীত করার কাজ চলছে। যার মধ্যে এক হাজার ৩০০ ফুট থাকবে সমুদ্রের মধ্যে। কক্সবাজার বিমানবন্দরের মহেশখালী চ্যানেলের দিকে জমি অধিগ্রহণের মাধ্যমে সম্প্রসারিত হচ্ছে এই রানওয়ে। প্রথমে ৯ হাজার ফুট থেকে আরও তিন হাজার ফুট সমুদ্রকূলে সম্প্রসারণের কথা ছিল। কিন্তু অনেক গবেষণা ও কক্সবাজারের পরিবেশের কথা চিন্তা করে এক হাজার ৭০০ ফুটে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত হয়।
সিএএবি চীনের চ্যাংজিয়াং ইচ্যাং ওয়টারওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যুরো (সিওয়াইডব্লিউইবি) ও চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কন্সস্ট্রাকশন কর্পোরেশন (সিসিইসিসি)’র সাথে এ বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি এই প্রকল্পের একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর হয়।
সিএএবি কর্মকর্তারা জানান, বিস্তারিত নকশা এবং সাইট অফিস, সড়ক নেটওয়ার্ক ও জেটির মতো অস্থায়ী স্থাপনাগুলোর নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পর প্রকল্পটির মূল নির্মাণ কাজ শুরু হবে।
২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর সরকারের পক্ষ থেকে অনুমোদিত এ প্রকল্পের কাজ ২০২৪ সালের মে মাসে সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে।