রাবার বুলেটে সহিংসতা দমানো না গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আরও বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন অস্ত্র চালাতে পুলিশের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ।
একেরপর এক দেশের বিভিন্ন জায়গায় নানা ইস্যু দেখিয়ে সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়, ভূমি অফিস, থানা ও পুলিশ ফাঁড়িসহ নানা সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে সম্প্রতি। এ বিষয়গুলো নিয়ে উদ্বিগ্ন পুলিশ প্রশাসন। তাই যে কোন সহিংসতার ঘটনাগুলোকে কঠোরভাবে দমনের জন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন।
৭ এপ্রিল বুধবার পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সাথে এক ভার্চ্যুয়াল বৈঠকে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় পুলিশ সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
গত ২৬ মার্চ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত দেশে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের বিরোধিতা করে বিক্ষোভ ও সহিংসতায় সৃষ্টি করে হেফাজতে ইসলাম। তাদের বিক্ষোভে তিনদিনে সারা দেশে নিহত হন ১৭ জন সাধারণ মানুষ। এদিকে করোনাভাইরাসের বিধিনিষেধ কার্যকর নিয়ে গত ৫ এপ্রিল ফরিদপুরের সালথায় স্থানীয়দের দ্বারা উপজেলা কমপ্লেক্স ও থানায় হামলার ঘটনা ঘটে।
তারই প্রেক্ষিতে গতকাল জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন আইজিপি।
আইজিপি আইনশৃঙ্খলা রক্ষা নিয়ে সারা দেশের দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। হেফাজতের সহিংসতায় বেশি গুলি চালানো হলেও পরিস্থিতি সেভাবে নিয়ন্ত্রণে ছিল না জানিয়ে আইজিপি সহিংসতায় কারা উসকানি দিয়েছে, কারা অংশ নিয়েছে, তাদের খুঁজে বের করার নির্দেশ দেন পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের ।
আইজিপি ফরিদপুরের সালথার পুলিশ সুপারকে উদ্দেশ্য করে বলেন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আপনারা সাধ্যমতো চেষ্টা করেছেন তবে আরেকটু ভালোভাবে চেষ্টা করলে ভালো হতো।
চট্টগ্রাম, খুলনা ও রংপুর অঞ্চলে অথবা অন্য জেলায় আবার হামলা হতে পারে বলে উল্লেখ করে পুলিশকে তৎপর থাকার নির্দেশ দেন আইজিপি। তার বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে গত শনিবার হেফাজত নেতা মাওলানা মামুনুল হকের ঘেরাওয়ের প্রসঙ্গটিও আসে। তিনি বলেন, মামুনুলকে পুলিশের কাছ থেকেই নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে নিরাপত্তায় ঘাটতি ছিল। এ কারণেই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সাম্প্রতিক সহিংস ঘটনার বিষয়ে পুলিশপ্রধান আরও বলেন, কোথাও পুলিশের ত্রুটি বা ঘাটতি ছিল কি না, এক জায়গায় পুলিশ সফল, আরেক জায়গায় কেন ব্যর্থ হয়েছে, তা তদন্ত করে বের করতে হবে। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকালে মুন্সিগঞ্জের কলেজমাঠে হেফাজত যে সমাবেশ ডেকেছে, তা না করতে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। হেফাজতের-নেতা কর্মী বা অন্য কেউ বাইরের জেলা থেকে যাতে মুন্সিগঞ্জে ঢুকতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে নিরাপত্তাচৌকি বসাতেও বলা হয়। কোনো মাদ্রাসা খোলা থাকলে তা বন্ধ করার ব্যবস্থাও নিতে বলেন আইজিপি।
এছাড়া নিরাপত্তা নিয়ে ইউএনও এবং এসি ল্যান্ডদের সতর্ক থাকতে বলেছেন স্থানীয় সরকার বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব। পাশাপাশি নিরাপত্তায় নিয়োজিত আনসার সদস্যদের সার্বক্ষণিক অস্ত্র ও গুলি সঙ্গে রাখার বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন সচিব।