fbpx

টক অব দ্যা টাউন: তাপস বনাম খোকন

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

বাকযুদ্ধ, আইনী লড়াই ও শেষে এবার ঘোষণা রাজপথে মোকাবিলার। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের(ডিএসসিসি) বর্তমান ও সাবেক দুই মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস ও সাঈদ খোকনের এ মুখোমুখি অবস্থান এখন টক অব দ্যা টাউন।

ডিএসসিসি’র সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের বিরুদ্ধে সোমবার ১১ জানুয়ারি ঢাকা মহানগর হাকিম রাজেশ চৌধুরীর আদালতে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ডিএসসিসির বর্তমান মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসকে নিয়ে মানহানিকর বক্তব্য দেয়ার অভিযোগে এই দুটি মামলা করা হয়।

মামলা হওয়ার পর বিকেল ৩টায় সাঈদ খোকন গণমাধ্যমকে বলেন, তাপসের মান-সম্মানের বাজার মূল্য কতো? মামলার পূর্ণাঙ্গ বিবরণী পেলে জানতে পারব। আইনি মোকাবিলার পাশাপাশি রাজপথে দেনা-পাওনার হিসেব হবে, ইনশাআল্লাহ।

এর আগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) বর্তমান মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস জানান, মানহানির মামলা করবেন সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের বিরুদ্ধে।

সোমবার (১১ জানুয়ারি) বেলা সোয়া ১১টায় রাজধানীর মানিকনগর এলাকার স্লুইসগেট ও পাম্প হাউস পরিদর্শনের সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন ডিএসসিসি মেয়র।

মেয়র তাপস দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে সাঈদ খোকনের বক্তব্যকে মানহানিকর বলে উল্লেখ করেন। সাঈদ খোকনের বক্তব্য শুনে তিনি অবাক হয়ে বলেন, ‘অবশ্যই তিনি (সাঈদ খোকন) মানহানিকর বক্তব্য দিয়েছেন। আমি তার বক্তব্য শুনে অবাক হয়েছি। তিনি নিজে চুনোপুঁটি দুর্নীতিবাজ হিসেবে স্বীকার করেছেন। আর আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অবশ্যই এটা মানহানিকর হয়েছে। আমি এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতেই পারি।’

সাঈদ খোকনের দেওয়া বক্তব্য সম্পর্কে মতামত জানতে চাইলে তাপস বলেন, ‘তিনি (সাঈদ খোকন) ঘটা করে একটা সভা ডেকে আমার বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করলেন। আমার মনে হয়, এটা ওনার ব্যক্তিগত আক্রোশের বহিঃপ্রকাশ।’

সাবেক এই মেয়রের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবেন কিনা সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র তাপস বলেন, ‘মানহানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে তো আইনি ব্যবস্থাই নিতে হবে।’

এর আগে গত শনিবার (৯ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর কদম ফোয়ারার সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে উপস্থিত হয়ে সাঈদ খোকন বলেছিলেন, তাপস দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের শত শত কোটি টাকা তার নিজ মালিকানাধীন মধুমতি ব্যাংকে স্থানান্তর করেছেন। এই টাকা বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা তিনি লাভ করেছেন এবং করছেন। অপরদিকে অর্থের অভাবে করপোরেশনের গরিব কর্মচারীরা মাসের পর মাস বেতন পাচ্ছেন না। সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প অর্থের অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে মেয়র তাপস সিটি করপোরেশন আইন ২০০৯, দ্বিতীয় ভাগের দ্বিতীয় অধ্যায়ের অনুচ্ছেদ ৯ (২) (জ) অনুযায়ী মেয়র পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন।’

সেদিন তিনি আরও বলেন, ‘তাপস মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করার পর থেকেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে গলাবাজি করে চলেছেন। আমি তাকে বলব, রাঘব বোয়ালের মুখে চুনোপুঁটির গল্প মানায় না। দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়তে হলে সর্বপ্রথম নিজেকে দুর্নীতিমুক্ত করুন। তারপর চুনোপুঁটির দিকে দৃষ্টি দিন।’

সাঈদ খোকন বলেন, ফুলবাড়িয়া মার্কেটে সিটি করপোরেশন যে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেছে, সেটা নিয়ে আমি আগেও বলেছি এটা সম্পূর্ণভাবে অবৈধ। কারণ আদালত কর্তৃক নির্দেশিত হয়ে, ব্যবসায়ীদের বৈধকরণের আবেদন নিষ্পত্তির লক্ষ্যে আমরা করপোরেশনের বোর্ড সভায় সর্ব সম্মতিক্রমে আলোচিত মার্কেটগুলোর নকশা সংশোধন ও বকেয়া ভাড়া আদায় সাপেক্ষে বৈধ ব্যবসা পরিচালনার অনুমতি প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল বিভাগ নকশা সংশোধন করে এবং রাজস্ব বিভাগ ৭-৮ বছরের বকেয়া ভাড়া আদায় করে ব্যবসায়ীদের বৈধভাবে ব্যবসা পরিচালনা করার অনুমতি দেয়।

সাবেক মেয়র এই উচ্ছেদকে অবৈধ আখ্যা দিয়ে বলেছিলেন, আমরা আশ্চর্যের সঙ্গে লক্ষ্য করলাম, বিনা নোটিশে দক্ষিণ সিটি অবৈধ উচ্ছেদের মাধ্যমে বুলডোজার দিয়ে এ সমস্ত হাজার হাজার বৈধ দোকান গুঁড়িয়ে দিল এবং ফলশ্রুতিতে হাজার হাজার দোকান মালিক ও কর্মচারী সপরিবারে পথে বসে গেল।

তিনি সে দিন বলেন, আমি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র হিসেবে এই অবৈধ উচ্ছেদের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

এদিকে রাজনীতির উত্তাপহীন সময়ে পুরনো শহরের এই দুই নেতার বিবাদ চাঞ্চল্য তৈরি করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক এ নিয়ে ট্রল করছেন।

একটি গণমাধ্যমের ফেসবুক পেইজে পাঠকরা নানা মন্তব্য করছেন এ নিয়ে। এক নেটিজেন তার আইডি থেকে এ বিষয়ক সংবাদের নিচে মন্তব্য করেন, “হালুয়া রুটি নিয়া যত ঝামেলা সব দেখি সব জায়গাতেই আছে।” আরেক নেটিজেন মন্তব্য করেন, ” ভাইয়া, আমরা বরাবরই দর্শক সারিতে ছিলাম এবং আছিও।” সংবাদের নিচে আরেকজন নেটিজেন মন্তব্য করেন, “এবার সেয়ানে সেয়ানে লড়াই। তবে দুজনই সাধারনের কাছে থেলো হবেন।”

এভাবেই বর্তমান ও সাবেক দুই মেয়রের বিবাদকে উপভোগ করছেন ঢাকাবাসী।

Advertisement
Share.

Leave A Reply