fbpx

সামিয়া-মারজানের বিরুদ্ধে চৌর্যবৃত্তির অভিযোগের সত্যতা মেলেনি

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষক সামিয়া রহমান ও সৈয়দ মাহফুজুল হক মারজানের গবেষণা প্রবন্ধের বিরুদ্ধে যে চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ আনা হয়েছিল,তার কোনো সত্যতা পাওয়া যায় নি বলে জানিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে এই গবেষণাপত্রকে দুর্বল ও মানহীন বলে অভিহিত করেছে ট্রাইব্যুনাল।

এ প্রসঙ্গে ট্রাইব্যুনাল বলেছে,লেখকদ্বয় অভিযুক্ত প্রবন্ধটিতে প্রতি পাতায় ফুট নোট উল্লেখ করেনি। কিন্তু প্রতি প্যারায় উদ্বৃতির পূর্বে মিশেল ফুকো ও এডওয়ার্ড সাঈদের নাম উল্লেখ করেছেন। এছাড়া প্রবন্ধটির শেষেও রেফারেন্সে ফুকো ও সাঈদের রেফারেন্স দিয়েছেন। প্রবন্ধের কোথাও ফুকো ও সাঈদের কোনো উদ্বৃতিকে লেখকদ্বয় নিজের উদ্বৃতি বলে দাবি করেন নি।তাই তাদের কার্যক্রমকে সরাসরি চৌর্যবৃত্তির অভিযোগে অভিযুক্ত করা যায় না। এছাড়া তদন্ত কমিটি তদন্তের নামে যে সময়ক্ষেপণ করেছে সেটাও তাদের রিপোর্টে তুলে ধরেছে ট্রাইব্যুনাল।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালে ঢাবির দুই শিক্ষক সামিয়া রহমান ও সৈয়দ মাহফুজুল হক মারজানের প্রবন্ধ নিয়ে অভিযোগ উত্থাপিত হয়। এই তদন্ত শেষ হয় ২০১৯ সালে। আর ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে ট্রাইবুনাল গঠিত হয়। তদন্তের ফলে এ বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্নভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করার সুযোগ পেয়েছে।

একইভাবে অভিযুক্ত শিক্ষকদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিডিয়া ট্রায়াল হয়েছে, যা কখনো ন্যায় বিচারের জন্য কাম্য নয়। এত দীর্ঘসূত্রিতা মূলত ন্যায় বিচারকে পরাভূত করেছে এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রতি ন্যায় বিচার পাবার ক্ষেত্রেও বাঁধার সৃষ্টি হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহর নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের এই ট্রাইব্যুনালের প্রতিবেদনে এসব পর্যালোচনা তুলে ধরা হয়েছে।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চে ট্রাইব্যুনালের এই প্রতিবেদন দাখিল করেছে।

এ প্রসঙ্গে সামিয়া রহমানের কৌঁসুলি ব্যারিস্টার হাসান এম এস আজিম বলেন, ট্রাইব্যুনালের রিপোর্ট  দেখেছি। সেখানে চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে প্রবন্ধটিকে মানহীন বলা হয়েছে। এছাড়া বিদেশি লেখকদের লেখা কপি করা প্রসঙ্গে অনভিপ্রেত ভুল হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। রবিবার এ বিষয়ে হাইকোর্টে শুনানি হবে।

২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিয়া রহমান ও অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক সৈয়দ মাহফুজুল হক মারজানের যৌথভাবে লেখা ‘এ নিউ ডাইমেনশন অব কলোনিয়ালিজম অ্যান্ড পপ কালচার: এ কেস স্ট্যাডি অব দ্য কালচারাল ইমপেরিয়ালিজম’ শিরোনামের আট পৃষ্ঠার একটি গবেষণা প্রবন্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সোশ্যাল সায়েন্স রিভিউ’ জার্নালে প্রকাশিত হয়।

তবে ২০১৭ সালে ওই জার্নালের পক্ষ থেকে অ্যালেক্স মার্টিন নামের এক ব্যক্তি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বরাবর এই দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, প্রকাশিত প্রবন্ধটিতে ফরাসি দার্শনিক মিশেল ফুকো, বুদ্ধিজীবী এডওয়ার্ড সাঈদের ‘কালচার অ্যান্ড ইমপেরিয়ালিজম’ গ্রন্থের বেশ কিছু অংশ হুবহু নকল করা হয়েছে।

তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্কালীন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক নাসরিন আহমেদকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট। দীর্ঘ তদন্ত শেষে অভিযোগের প্রমাণ পায় তদন্ত কমিটি। এরপরই শিক্ষকদ্বয়ের একাডেমিক অপরাধের শাস্তির সুপারিশ করতে অধ্যাপক মো. রহমত উল্লাহকে আহ্বায়ক করে একটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়।

Advertisement
Share.

Leave A Reply