fbpx

সুন্দরবনের দস্যুমুক্তির তৃতীয় বর্ষপূর্তি

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

বঙ্গোপসাগর উপকূলবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত একটি প্রশস্ত বনভুমি সুন্দরবন। যা বিশ্বের প্রাকৃতিক বিস্ময়াবলির অন্যতম। পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সুন্দরবনই উনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ খ্যাতি অর্জন করে। আশির দশক থেকে এই সুন্দরবন উপকুলে জলদস্যু ও বনদস্যুরা তান্ডব চালিয়ে আসছে। তাদের কবলে পড়ে নিঃস্ব হয়েছে বনজীবী ও মৎস্যজীবীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ। এই দস্যুদের কাছে জিম্মি বনাঞ্চলের মানুষ।

দস্যু বাহিনী দিনের পর দিন ডাকাতি, অপহরণ ও হত্যাসহ নানা তাণ্ডব চালাতো। তবে এখনকার গল্পটা আলাদা বদলে গেছে বর্তমান পরিস্থিতি।

সুন্দরবনকে দস্যু মুক্ত করায় উপকূলের বনজীবী ও মৎস্যজীবীদের দস্যুদের হাত থেকে বাঁচাতে কাজ শুরু করে  র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। এক পর্যায়ে সফলতা আসে। গত ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত সুন্দরবন ঘোষণা করেন।

এর আগে ২০১২ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) মহাপরিচালককে প্রধান সমন্বয়কারী করে সুন্দরবনে জলদস্যু দমনে টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। তারপর থেকেই সুন্দরবনকে বনদস্যু ও জলদস্যু মুক্ত করতে প্রক্রিয়া শুরু করে র‍্যাব। ২০১২ সাল থেকে র‍্যাবের জোরালো অভিযানে কোণঠাসা হয়ে পড়ে বনের গহীনে থাকা জলদস্যুরা। র‍্যাবের তৎপরতায় দস্যু বাহিনীগুলো ফেরারি জীবন শুরু করে। এরপর দস্যুতার অবসান ঘটিয়ে আত্মসমর্পণের পথ বেছে নেয়।

২০১৬ সালের ৩১ মে থেকে ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর পর্যন্ত সুন্দরবনের মোট ৩২টি দস্যু বাহিনীর ৩২৮ জন সদস্য ৪৬২টি অস্ত্র ও ২২ হাজার ৫০৪ রাউন্ড গোলাবারুদসহ আত্মসমর্পণ করেন। এই কারণে সম্পূর্ণভাবে জলদস্যু মুক্ত হয় সুন্দরবন।

আত্মসমর্পণ করা দস্যু বাহিনীগুলোর মধ্যে- মাস্টার বাহিনীর ১০ জন, মজনু বাহিনীর নয়জন, ইলিয়াস বাহিনীর দুইজন, শান্ত বাহিনীর ১৪ জন, আলম বাহিনী ও সাগর বাহিনীর ১৩ জন, খোকাবাবু বাহিনীর ১২ জন, নোয়া বাহিনীর ১২ জন, জাহাঙ্গীর বাহিনীর ২০ জন, ছোট রাজু বাহিনীর ১৫ জন, আলিফ বাহিনী ও কবিরাজ বাহিনীর ২৫ জন, মানজু বাহিনীর ১১ জন, মজিদ বাহিনী নয়জন, বড় ভাই বাহিনীর ১৮ জন, ভাই ভাই বাহিনীর আটজন, সুমন বাহিনীর ১২ জন, ডন বাহিনীর ১০ জন, ছোট জাহাঙ্গীর বাহিনীর নয়জন, ছোট সুমন বাহিনীর আটজন, দাদা ভাই বাহিনীর ১৫ জন, হান্নান বাহিনীর নয়জন, আমির আলী বাহিনীর সাতজন, সুর্য্য বাহিনীর ১০ জন, ছোট সামসু বাহিনীর নয়জন, মুন্না বাহিনীর সাতজন, আনোয়ারুল বাহিনীর আটজন, তইবুর বাহিনীর পাঁচজন, সিদ্দিক বাহিনীর সাতজন, আলামিন বাহিনীর পাঁচজন, সাত্তার বাহিনীর ১২ জন এবং শরীফ বাহিনীর ১৭ জন। তারা সবাই আত্মসমর্পণের মাধ্যমে বর্তমানে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছেন।

দস্যুমুক্ত সুন্দরবন দিবসের তৃতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আজ সোমবার (১ নভেম্বর) বাগেরহাটের রামপালে আত্মসমর্পণ করা জলদস্যু পুনর্বাসন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

Advertisement
Share.

Leave A Reply