fbpx

সেন্ট মার্টিনের পর্যটকরা গাঙচিলের শত্রু!

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন জাহাজে যাবার পথে, গাঙচিলদের বিস্কুট ও চিপস খাওয়ানোর দৃশ্য বেশ পরিচিত। তবে যারা সেন্ট মার্টিন যাননি, তাদের কাছে বিস্ময়। পর্যটকদের বাড়ানো খাবার খেতে উড়ে আসা সেসব সাহসী গাঙচিলেরা আজকাল সামুদ্রিক মাছ খেতে চায় না, তাদের চোখ খুঁজে কেবল চিপস, বিস্কুট আর বাদাম।

টেকনাফ ঘাট থেকে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ, প্রায় চল্লিশ কিলোমিটার পথে পাখিদের খাওয়ানোর এই দৃশ্য যতটা না আনন্দের, পেছনে আছে ততটাই ক্ষতির গল্প। পাখি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিস্কুটে থাকা প্রোটিন, চর্বি, দুধ পাখিদের হজমশক্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। চিপসে থাকা অতিরিক্ত টেস্টিং সল্ট পাখিদের ছোট্ট শরীরের জন্য উপযোগী নয়। গলায় আটকে বাদাম হতে পারে মৃত্যুর কারণ।

বন্যপ্রাণী গবেষক সীমান্ত দীপু বিবিএস বাংলাকে বলেন, পর্যটকদের ছুঁড়ে দেওয়া এসব খাবার গাঙচিলদের পেটে গিয়ে তাদের খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনছে, প্রজনন ক্ষমতা কমাচ্ছে। একইসঙ্গে প্রতিবছর বিভিন্ন দেশ থেকে আসা গাঙচিলদের ফেলছে নানা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে।

‘পাখিদের কোনওরকম খাবার দেবেন না’, জাহাজের গায়ে সতর্কবাণী, মাইকে বারবার সারেংদের অনুরোধ, কোনও কিছুই থামাতে পারছে না সেন্ট মার্টিন বেড়াতে যাওয়া পর্যটকদের। কঠিনভাবে বন্ধ করা না গেলে, গাঙচিলের সংখ্যা কমার আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন বণ্যপ্রাণী গবেষকেরা।

সীমান্ত দীপু আরও জানান, বাংলাদেশে আছে পাঁচ প্রজাতির গাঙচিল। সবচেয়ে বেশি পরিমাণে কালামাথা ও খয়রামাথা গাঙচিলের দেখা মেলে সাগর, নদী ও হাওড় অঞ্চলে। উপকূলে দেখা মেলে পালাসি গাঙচিলের। আর হিউগলিনের গাঙচিল দেখা যায় সাগর ও নদীতে। সরু ঠুঁটি গাঙচিলকে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায় সোনাদিয়া দ্বীপে। জেলেপাড়া, হাওড়-বাওড়, খাল-বিল, উপকূলীয় অঞ্চল থেকে খাবার সংগ্রহ করা এই প্রজাতির পাখি খেতে পারে নোনা ও মিঠা দুই পানিই।

আমাদের দেশে দেখতে পাওয়া সব প্রজাতির গাঙচিলই পরিযায়ী। পুরো শীতকালজুড়ে এরা আমাদের জলাশয়ে অবাধে বিচরণ করে। বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞরা জানান, ২০০৮ সালে থাইল্যান্ডে ৮টি গাঙচিলের উপর স্যাটেলাইটের মাধ্যমে নজর রাখা হয়। তাতে দেখা গেছে, ৭টি দেশ পেরোতে এরা পাড়ি দিয়েছে ২৪০০ কিলোমিটার পথ। তীব্র শীত থেকে বাঁচতে তাদের এই দীর্ঘ যাত্রা শেষে বাংলাদেশসহ আশ্রয় নেওয়া দেশে কাটে প্রজননকাল।

গাঙচিলদের জন্য নিরাপদ আবাসের জন্য স্থায়ী ও অস্থায়ী দুই অঞ্চলের মানুষকে আরও সংবেদনশীল হবার তাগিদ পক্ষী বিশারদদের।

Advertisement
Share.

Leave A Reply