fbpx

সৌদিতে হ্যালোইন: সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র সমালোচনা, ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক-দাবি নেটিজেনদের

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

অক্টোবর এলেই ইউরোপ আমেরিকাসহ পাশ্চাত্যের দেশগুলো হ্যালোইন উৎসবের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে থাকে। এসব দেশে হ্যালোইন উদযাপনের জন্য দোকানে দোকানে বিক্রি হয় বিচিত্র পোশাক-মুখোশসহ বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী। দিন যত এগোতে থাকে, বাড়তে থাকে বিক্রি। মাসের শেষে শুরু হয় এই উৎসব। কেউ দলবেঁধে, কেউবা পরিবারসহ বিভিন্ন এলাকায় মেতে ওঠে হ্যালোইন উৎসবে।

ট্রিক-অর-ট্রিট, ভূতের টুর, বনফায়ার, আজব পোশাকের পার্টি, আধিভৌতিক স্থান ভ্রমণ, ভয়ের চলচ্চিত্র দেখা ইত্যাদি পর্বে প্রতিবছর এ উৎসব পালন করেছে ইউরোপ-আমেরিকার দেশগুলো।সেই ধারাবাহিকতায় এ বছর হ্যালোইন উৎসবের থিম নির্ধারণ করা হয় ‘হাস্যরস ও উপহাসের সাহায্যে মৃত্যুর ক্ষমতার মুখোমুখি হওয়া’।

পাশ্চাত্য এই সংস্কৃতির ছোঁয়া ইতিমধ্যে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশেও লেগেছে। এমনকি বাদ যায়নি রক্ষণশীল দেশ সৌদি আরবও। ২২০ একর জমির ওপর নির্মিত রাজধানী রিয়াদের বুলেভার্ড কমপ্লেক্সে পালিত হলো জমকালো হ্যালোইন। দেশটির জেনারেল এন্টারটেইনমেন্ট অথরিটি এই উৎসবের আয়োজক। এ উৎসবকে ঘিরে বিশালাকার ভাস্কর্যও তৈরি করে প্রদর্শন করা হয়। রিয়াদের উৎসবে অংশগ্রহণকারীদের অনেককেই বিচিত্র সব সাজে দেখা গেছে।

সৌদিতে হ্যালোইন: সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র সমালোচনা, ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক-দাবি নেটিজেনদের

উৎসবে ছিল আতশবাজির আয়োজনও। যেখানে হ্যালোইন পোশাক পরে পার্টিতে অংশ নেওয়া থেকে শুরু করে কুমড়ো খোদাই করা, মুখোশ পরা, ভয় দেখানো, ভুতুড়ে গল্প বলা, ভৌতিক সিনেমা দেখা ও ভুতুড়ে সাজসজ্জায় সবাইকে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়।

আরব নিউজ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, উৎসবে ব্যতিক্রমী সাজে আগতদের বিনামূল্যে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়েছে। তবে শর্ত ছিল, অবশ্যই ভৌতিক সাজসজ্জা থাকতে হবে সবার। সেখানে ঢুকে তাদের পরতে হয়েছে সৌদি ও স্থানীয় বাসিন্দাদের ডিজাইন করা কস্টিউম। অনেকে একা, আবার অনেকে পরিবার পরিজন নিয়ে বৃহস্পতি ও শুক্রবার দুই দিনব্যাপী হওয়া উৎসবে যোগ দেন। যার মূল উদ্দেশ্য ছিল নিছক মজা, রোমাঞ্চ এবং উত্তেজনায় ভরা পরিবেশ তৈরি করা।

সৌদিতে হ্যালোইন: সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র সমালোচনা, ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক-দাবি নেটিজেনদের

উৎসবে ব্যতিক্রমী সাজে সেজেছিলেন আব্দুল রাহমান। তিনি বলেন, এ উৎসবটা দারুণ। আনন্দটাই মূল উদ্দেশ্য। হারাম-হালালের আলোচনা করতে গেলে, আমি জানি না এটা। আমরা শুধু মজা করার জন্য এটা উদযাপন করছি। আর কিছু না। আমরা কোনো কিছু বিশ্বাস করি না।

সৌদিতে হ্যালোইন: সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র সমালোচনা, ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক-দাবি নেটিজেনদের

খালেদ আলহারবি নামের এক দর্শনার্থী বলেন, সব কাজের একটা উদ্দেশ্য থাকে। আমি এখানে শুধু মজা করতে এসেছি।

বেশিরভাগ সৌদি নাগরিক এ আয়োজন উপভোগ করতে পেরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।

তবে ভূত-প্রেত সেজে নৃত্য করার এই উৎসবে সৌদি আরবের নাগরিকদের মশগুল থাকায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দেশটির জনগণের বড় একটি অংশ।

সৌদিতে হ্যালোইন: সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র সমালোচনা, ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক-দাবি নেটিজেনদের

হ্যালোইন উৎসব উদযাপন ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেদের ক্ষোভ ও তীব্র নিন্দা উগরে দিয়েছেন তারা।

বিশেষ করে উৎসবটি উদযাপনে রিয়াদে অদ্ভুত দর্শন যে ভাস্কর্য তৈরি করা হয়, তার ছবি ও ভিডিও ফেসবুক, টুইটারে আপলোড করে সৌদি নেটিজেনদের দাবি, এমন ভাস্কর্য ইসলামের আদর্শের পরিপন্থী।

মক্কা-মদিনার দেশে এই পাশ্চাত্য সংস্কৃতি কখনই মেনে নেয়ার মতো নয় বলে ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়েছেন কেউ কেউ। সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই এ নিয়ে খবরও প্রকাশ করেছে।

সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণে রাজধানী রিয়াদে তিন মাসব্যাপী ‘রিয়াদ মৌসুম’ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ উপলক্ষে বেশ কিছু সাংস্কৃতিক কার্যক্রম হাতে নিয়েছে সৌদি সরকার।

আর তারই অংশ হিসেবে সেখানে হ্যালোইন উৎসবের আয়োজন করে দেশটি। রিয়াদের রাস্তায় নির্মিত হয় বিশালাকার অশুভ শক্তির প্রতীকের ভাস্কর্য। সেই ভাস্কর্যকে ঘিরেই সংগীত ও আলোকসজ্জায় মেতে ওঠেন বিদেশি নাগরিকরা।

পর্যটকদের আকর্ষণের নামে ইসলাম ধর্মের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এই সংস্কৃতিকে এভাব পালনে দেশটির অনেকে অসন্তোষ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ইসলামের জন্মভূমিতে কীভাবে এমন উৎসব পালন করা হয় এবং ইসলামী আদর্শের পরিপন্থী ভাস্কর্য তৈরি হয়, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তারা।

সৌদিতে হ্যালোইন: সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র সমালোচনা, ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক-দাবি নেটিজেনদের

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে এখনও সৌদি সরকারের তীব্র সমালোচনা করে যাচ্ছেন দেশটির নেটিজেনরা।

হ্যালোইন’ বা ‘হ্যালোউইন’ শব্দটি এসেছে স্কটিশ ভাষার শব্দ ‘অল হ্যালোজ’ ইভ থেকে। হ্যালোইন শব্দের অর্থ ‘শোধিত সন্ধ্যা বা পবিত্র সন্ধ্যা’। সময়ের সঙ্গে পরিবর্তিত হয়ে ‘হ্যালোজ’ ইভ’ শব্দটি এক সময় ‘হ্যালোইন’এ রূপান্তরিত হয়। পাশ্চাত্য দেশগুলোতে এই উৎসব বেশ জনপ্রিয়।

ভূতুড়ে এই উৎসব ২০০০ বছরেরও বেশি পুরোনো। অনেকেই ভাবেন, এ দিনটি হয়তো ভূতের মতো সাজতেই পালন করা হয়। আসলে মৃত আত্মাদের স্মরণে পালন করা হয় দিনটি। ১৭৮৫ সালে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মাঝে এর উৎপত্তি। পাশ্চাত্য দেশগুলোর উৎসব হলেও গোটা বিশ্ব এখন জমকালো আয়োজনে হ্যালোইন পালন করে থাকে।

https://www.facebook.com/bbsbangla.news/videos/485934053469528

Advertisement
Share.

Leave A Reply