Advertisement
চলছে মহামারিকাল। ধুঁকছে পৃথিবী। ধুঁকছে দেশ। ভ্যাকসিন এসেছে। তবু থামেনি মৃত্যু মিছিল। এ এক নতুন অভিজ্ঞতা। প্রায় এক বছরের বেশি সময় ধরে বন্ধ সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এতে বেশি সমস্যায় শিশু ও তাদের অভিভাবকরা।
বাচ্চাদের কাছে স্কুল খুব অন্যরকম। শুরু হয় জীবনের নতুন পাঠ। তৈরি হয় বন্ধুত্ব। শিশুর সমাজ, দেশ আর পৃথিবী চেনার প্রথম অধ্যায় এই স্কুল। তাই এত দীর্ঘ পাঠবিরতি শিশু মনে গভীর ছাপ ফেলে।
তাই এ পরিস্থিতিতে শিশুর মনন গঠনে বাবা, মা ও তার কাছের স্বজনদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। কোভিডকালে এত দীর্ঘ সময় ঘরে থাকা শিশুর প্রতি চাই বিশেষ মনোযোগ। কম বয়সী শিশু বা একটু বেশি ক্লাসে পড়া বাচ্চা, সবার জন্যই এ কথা দরকারি।
অনেক স্কুলেই চলছে অনলাইনে ক্লাস। এর ব্যতিক্রম নেই। কারণ পড়া চলতেই হবে। তবে এর কারণে যেন শিশুর প্রযুক্তি আসক্তি তৈরি না হয় সেটি খেয়াল রাখতে হবে। এমনিতেই শিশুদের এখন মোবাইল ফোন বেশি টানে। এর জন্য বাবা, মা-ই বেশি দায়ী। ঘণ্টার পর ঘণ্টা শিশুরা এখন সময় কাটায় মোবাইল স্ক্রিনে। এটি শিশুর ভবিষ্যতের জন্য ভালো নয়। শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর। করোনাকালে তাই অনলাইন লার্নিংয়ের সুযোগে শিশু যেন রোবটে পরিণত হয় তা কারও কাম্য হতে পারেনা।
যেহেতু ট্র্যাফিক জ্যাম আর বাইরের ধুলো, বালি, দূষণ সহ্য করে স্কুল যাওয়া হচ্ছে না- এর একটি ভালো দিক আছে। তাই ঘরে থাকা শিশুকে বেশি মাত্রায় সাংস্কৃতিক কাজে যুক্ত করার সময় এই করোনাকাল। অনলাইন ক্লাসের পাশাপাশি শিশুকে মননশীল বই পড়া, ছবি আঁকা, গান ও সুরের সঙ্গে পরিচিতি, শরীরচর্চা এসব কাজে যুক্ত রাখলে ভালো হবে।
মাঠ যাওয়া যাচ্ছে না। তখন ঘরকেই মাঠ বানিয়ে ফেলুন। ঘরের ছোট জায়গায় শিশুর সঙ্গে খেলুন। যাতে তার বডি মুভমেন্ট হয় যথাযথ। ছোটবেলা থেকে খেলায় যুক্ততা শিশুর বিকাশে খুব ভালো ভূমিকা রাখে।
তাই এভাবেই করোনাকালে অতিক্রম করতে হবে। এটি আমাদের সম্মিলিত যুদ্ধ। স্কুল বন্ধ থাকায় হতাশ হবেন না। বরং ঘরেই শিশুকে প্রশিক্ষিত করুন ভবিষ্যতের মানবিক মানুষ রূপে।
Advertisement