fbpx

স্তন ক্যান্সার, লক্ষণ দেখে যাবে বোঝা

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেব অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রতি বছর ১৫ হাজারের বেশি মানুষ ব্রেস্ট ক্যান্সার বা স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। এদের মধ্যে ৯৮ শতাংশ নারী। শুধু নারীই নয়, পাশাপাশি পুরষও স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হন।

বাংলাদেশেও ক্যান্সার আক্রান্ত সংখ্যা প্রতি বছর বাড়ছে। সাধারণত অস্বাভাবিকভাবে স্তনের কিছু কোষ বেড়ে গেলে, সেই অনিয়মিত ও অতিরিক্ত কোষগুলো বিভাজনের মাধ্যমে টিউমার বা পিণ্ডে পরিণত হয়। সেটি রক্তনালীর লসিকা (কোষ-রস) ও অন্যান্য মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। এই ছড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতাই ক্যান্সার।

জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইন্সটিটিউটের হিসাব অনুযায়ী দেশে প্রতি বছর দেড় লাখের বেশি মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হন।

বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের মধ্যে বাংলাদেশের নারীরা স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হন সবচেয়ে বেশি। কিন্তু সামাজিক রক্ষণশীলতার কথা চিন্তা করে বেশিরভাগ রোগী চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন একেবারে শেষ পর্যায়ে।

ঢাকা সেন্ট্রাল ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ডা. নাজনীন নাহার বিবিসিকে দেওয়া এক স্বাক্ষাৎকারে বলেন, ‘বাংলাদেশে ব্রেস্ট ক্যান্সার নিয়ে সচেতনতার অভাব আছে, তাই যারা চিকিৎসা নিতে আসেন, তাদের বেশির ভাগই আসেন প্রায় শেষ পর্যায়ে। অধিকাংশ সময় তারা স্তনে একটি চাকা নিয়ে আসেন। অনেকে স্তনের বোঁটায় ঘা বা ক্ষত বা বোঁটার চারপাশে কালো অংশে চুলকানির লক্ষণ নিয়ে আসেন। কারো আবার স্তনের বোঁটা দিয়ে দুধের মত সাদা রস নিঃসৃত হতে থাকে। ব্যথা বা স্তন লাল রং হয়ে গেছে এমন লক্ষণ নিয়ে খুব কমই আসেন।’

স্তন ক্যানসার কেন হয় এই প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমাদের জীবনাচরণে এবং খাদ্যাভ্যাসে অনেক পরিবর্তন এসেছে, সেটি একটি কারণ। এছাড়া কারো পরিবারে স্তন ক্যানসারের ইতিহাস থাকলে হতে পারে। কারো যদি বারো বছরের আগে ঋতুস্রাব হয় এবং দেরিতে মেনোপজ বা ঋতু বন্ধ হয়, তারাও ঝুঁকিতে থাকে। সেই সঙ্গে তেজস্ক্রিয় স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়।’

অধ্যাপক নাজনীন নাহার আরও বলেন, দেরিতে সন্তান গ্রহণ, আবার যাদের সন্তান নেই, বা সন্তানকে বুকের দুধ না খাওয়ানো, খাদ্যাভ্যাসে শাকসবজি বা ফলমূলের চাইতে চর্বি ও প্রাণীজ  আমিষ বেশি থাকলে এবং প্রসেসড ফুড বেশি খেলে, এবং অতিরিক্ত ওজন যাদের তাদেরও স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি থাকে। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল খাচ্ছেন বা হরমোনের ইনজেকশন নিচ্ছেন, তারাও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। বয়স বাড়ার সাথে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা বাড়ে। বিশেষ করে ৫০ বছর বয়সের পর এই ঝুঁকি অনেক বেশি বেড়ে যায়। তখন আর করার কিছু থাকে না। তবে প্রাথমিক অবস্থায় সনাক্ত হলে স্তন ক্যান্সার ১০০ ভাগ নিরাময়যোগ্য।

চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন কখন?

১। স্তনে চাকা বা পিণ্ড দেখা দিলে।

২। স্তনের বোঁটার কোন ধরনের পরিবর্তন, যেমন ভেতরে ঢুকে গেলে, অসমান বা বাঁকা হয়ে গেলে।

৩। স্তনের বোঁটা দিয়ে অস্বাভাবিক রস বের হলে।

৪।স্তনের চামড়ার রং বা চেহারায় পরিবর্তন হলে।

৫। বাহুমূলে পিণ্ড বা চাকা দেখা গেলে।

অধ্যাপক নাজনীন নাহার বিবিসিকে বলেন, বয়স ৩০ বা ৩৫ হবার পর সব নারীর উচিত নিয়মিত নিজের স্তন পরীক্ষা করে দেখা।

১। ম্যামোগ্রাম বা বিশেষ ধরনের এক্স রে, যার সাহায্যে স্তনের অস্বাভাবিক পরিবর্তন ধরা পড়ে।

২। সুনির্দিষ্ট নিয়মে চাকা বা পিণ্ড আছে কিনা, চিকিৎসকের মাধ্যমে সে পরীক্ষা করানো।

৩। নিজে নিজে নির্দিষ্ট নিয়মানুযায়ী স্তন পরীক্ষা করা।

Advertisement
Share.

Leave A Reply