রড, বালু, সিমেন্ট, ইটসহ নির্মাণসামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়ায় প্রতি বর্গফুটে ফ্ল্যাটের দাম বেড়েছে এক হাজার টাকা। ফলে কোনো গ্রাহক যদি ১ হাজার বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট কিনতে চান, তাহলে তাকে আগের চেয়ে প্রায় ১০ লাখ টাকা বেশি দিতে হচ্ছে। আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) নেতারা এমনটাই জানিয়েছেন।
শনিবার (১৮ জুন) দুপুরে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর প্রতিক্রিয়া জানাতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির নেতারা এ তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে ২০২০ সাল থেকে চলতি বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত নির্মাণসামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধির একটি হিসাব তুলে ধরে রিহ্যাব। যেখানে বলা হয়, ২০২০ সালে প্রতি টন রডের দাম ছিল ৬৪ হাজার টাকা। এখন তা বেড়ে হয়েছে ৯০ হাজার টাকা। ২০২০ সালে প্রতি ব্যাগ সিমেন্টের (৫০ কেজি) দাম ছিল ৪০০ টাকা, এখন তা বেড়ে হয়েছে ৪৫০ থেকে সাড়ে ৫০০ টাকা।
এছাড়া ২ বছরের ব্যবধানে প্রতি ঘনফুট বালুর দাম গড়ে ২৫ টাকা, প্রতি বর্গফুট পাথরের দাম ৮০ টাকা ও থাই অ্যালুমিনিয়ামের দাম ১৭০ টাকা ও শ্রমিকের খরচ ৮০ টাকা করে বেড়েছে। ইট, গ্রিল, স্যানিটেশন ও বৈদ্যুতিক কাজের খরচও বেড়েছে আগের চেয়ে কয়েকগুণ।
রিহ্যাব সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন বলেন, গত তিন মাসে সব ধরনের নির্মাণসামগ্রীর দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। ফলে প্রতি বর্গফুটে নির্মাণব্যয় বেড়েছে প্রায় ৫০০ টাকা। আবাসন কোম্পানিগুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রে জমির মালিকদের সঙ্গে ৫০: ৫০ এর ভিত্তিতে ভবন বা ফ্ল্যাট তৈরি করে। ফলে বিক্রির সময় গ্রাহক পর্যায়ে গিয়ে প্রতি বর্গফুটে এক হাজার টাকা বেশি নিতে হচ্ছে। অর্থাৎ ১ হাজার বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাটের দাম আগের চেয়ে প্রায় ১০ লাখ টাকা বেড়ে গেছে।
রিহ্যাব সভাপতি বলেন, ‘রিহ্যাবের বাজেট প্রস্তাবে আমরা অপ্রদর্শিত অর্থ আবাসন খাতে বিনা প্রশ্নে বিনিয়োগের সুযোগ চেয়েছিলাম। এছাড়া জমি ও ফ্ল্যাটের নিবন্ধন খরচ কমিয়ে ৭ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছিলাম। পাশাপাশি আবাসন খাতের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠনের আহ্বান জানিয়েছিলাম। কিন্তু প্রস্তাবিত বাজেটে আমাদের কোনো প্রস্তাবই বিবেচনা করা হয়নি।
তিনি বলেন, তাদের কোনো দাবি না মেনে উল্টো রডসহ বেশ কিছু নির্মাণসামগ্রীর ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে আবাসন খাত ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে মন্তব্য করেন রিহ্যাব সভাপতি।
এজন্য নির্মাণসামগ্রীর দাম কমানোসহ আবাসন খাতে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ অব্যাহত রাখার দাবি জানায় আবাসন খাতের এই সংগঠনটি।