জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট পাস হয়েছে।‘কোভিডের আঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রত্যাবর্তন’ শীর্ষক বাজেট উপস্থাপন করতে গিয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ‘সরকারের এই বাজেট প্রস্তাবনায় রয়েছে বিশ্বময় করোনা পরিস্থিতি কাটিয়ে বৈশ্বিক অর্থনীতি মোকাবিলা করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্নবিভোর পরিকল্পনা।’
এছাড়া অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘এতে রয়েছে বৈশ্বিক সংকট কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানো বাংলাদেশের অর্থনীতির মহাপরিকল্পনা। এবারের বাজেট প্রস্তাবনায় রয়েছে নানাবিধ কারণে কর্মহীন মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থার পরিকল্পনা, তাই এবারও বেড়েছে সামাজিক নিরাপত্তা বলয়। সুযোগ নিশ্চিত করা হয়েছে খাদ্য নিরাপত্তার। বাড়ছে কৃষি খাতের ভর্তুকি।’
৩০ জুন (বৃহস্পতিবার) স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদের অধিবেশনে সংসদ সদস্যদের সর্বসম্মত কণ্ঠভোটে পাস হয় এই বাজেট।
১ জুলাই (শুক্রবার) থেকে এ বাজেট কার্যকর হবে। এর আগে গত ৯ জুন (বৃহস্পতিবার) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জাতীয় সংসদে নতুন ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন।
এবারের বাজেটের মোট আকার ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। আগামীকাল শুক্রবার (১ জুলাই) থেকে শুরু হচ্ছে নতুন অর্থবছর। এ দিন থেকেই এই বাজেট কার্যকর হবে।
অর্থমন্ত্রী হিসেবে আ হ ম মুস্তফা কামালের এটি চতুর্থ বাজেট, বাংলাদেশের জন্য এটি হবে ৫২তম। পাশাপাশি রাষ্ট্র পরিচালনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের ২০তম বাজেট হলেও ২০০৮ সাল থেকে বর্তমান সরকারের টানা ১৪তম বাজেট।
নতুন বাজেটে আগামী অর্থবছরের জন্য মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা। এটি জিডিপির ৯ দশমিক ৮ শতাংশ। নতুন বাজেটে এনবিআরের লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানো হয়েছে। এনবিআর ৩ লাখ ৭৭ হাজার কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা পেয়েছে। এটি জিডিপির ৮ দশমিক ৪ শতাংশ। এনবিআরের লক্ষ্যমাত্রা নতুন বছর ৪০ হাজার কোটি টাকা বাড়ছে। শতকরা হিসাবে তা ১২ শতাংশ।
সরকারের মোট বাজেটের মধ্যে পরিচালনসহ অন্যান্য খাতে মোট ৪ লাখ ৩১ হাজার ৯৯৮ কোটি টাকা এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ২ লাখ ৪৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এ বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ রাখা হয়েছে ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা, যা মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৫ দশমিক ৬ শতাংশের সমান।
এনবিআরবহির্ভূত কর থেকে আসবে ১৮ হাজার কোটি টাকা, আর কর ছাড়া প্রাপ্তি ধরা হয়েছে ৪৫ হাজার কোটি টাকা।
ঘাটতির মধ্যে অনুদানসহ বৈদেশিক উৎস থেকে আসবে ৯৮ হাজার ৭২৯ কোটি টাকা। আর অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে আসবে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা, এর মধ্যে ব্যাংক খাত থেকে নেওয়া হবে ১ লাখ ৬ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা।
সরকারের ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে আগামী অর্থবছরের জন্য দেশের মূল্যস্ফীতি ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ।