ঢাকা থেকে বরগুনাগামী যাত্রীবাহী লঞ্চ ‘এমভি অভিযান-১০’ অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের শরীর এতো বীভৎসভাবে পুড়ে গেছে যে, তাদের শনাক্ত করা খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে স্বজনদের জন্য। এই দুর্ঘটনায় পুড়ে নিহত হওয়া ৪১ জনের মধ্যে বরগুনারই বাসিন্দা ৩৭ জন। যাদের ১৪ জনকে শনাক্ত করে তাদের স্বজনরা এরইমধ্যে নিয়ে গেছেন। কিন্তু, এই লাশগুলোর মধ্যে ২৩ জনের লাশ এমনভাবে পুড়েছে, যে তা শনাক্ত করা কোনোভাবেই সম্ভব হয়নি। তাই ওই ২৩ জনের ডিএনএ রেখে দিয়ে গণজানাজার মাধ্যমে ২১টি কবরে দাফন করেছে বরগুনা জেলা প্রশাসন। এদের মধ্যে, দু’জন শিশু থাকায় তাদের মায়ের কবরে দাফন করা হয়েছে।
শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বরগুনা সার্কিট হাউজ কেন্দ্রীয় ঈদগাহ্ মাঠে সর্বস্তরের মানুষ এ জানাজায় অংশগ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে যাত্রীবাহী লঞ্চ ‘এমভি অভিযান-১০’ এ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ইঞ্জিনরুমে লাগা সেই আগুন মুহূর্তেই পুরো লঞ্চে ছড়িয়ে পড়ে। অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে ঝালকাঠির ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
বরগুনার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান সংবাদমাধ্যমকে জানান, এ দুর্ঘটনায় নিহত এবং আহতদের মধ্যে বেশিরভাগই বরগুনার নাগরিক। তাদের মধ্যে এখনো অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহতদেরকে উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি জানান, এ অগ্নিকাণ্ডে প্রত্যেক নিহতের পরিবারকে ২৫ হাজার এবং আহতদের ১৫ হাজার টাকা করে সহায়তা দিয়েছে বরগুনা জেলা প্রশাসন।
এদিকে, লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে। শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে ঝালকাঠি সদর থানায় বাদী হয়ে মামলাটি করেন স্থানীয় গ্রাম পুলিশ জাহাঙ্গীর হোসেন।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন, ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খলিলুর রহমান।