fbpx

৫৩ ফেরির মধ্যে ২৬টিই মেয়াদোত্তীর্ণ!

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

পদ্মা সেতুর পিলারে গত দু’মাসে যে চারটি ফেরি ধাক্কা দিয়েছিল, তার একটিরও নেই ‘ফিটনেস’ সার্টিফিকেট। আর খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, এই ফেরিগুলোর সবগুলোই মেয়াদোত্তীর্ণ।

আইন অনুযায়ী, দু’টির মেয়াদ একেবারেই শেষ। আর এগুলোর নৌপথে এখন চলারই কথা না। আইনে নিষিদ্ধ হলেও, মেয়াদোত্তীর্ণ এসব নৌযান দিয়েই চলছে ফেরি পারাপার কার্যক্রম।

বিআইডব্লিউটিসি’র কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে দেশে চলাচল করছে ছয়টি রুটে মোট ৫৩টি ফেরি। যার মধ্যে ২৬টিই এখন মেয়াদোত্তীর্ণ। গতকাল বুধবার (১৮ আগস্ট) সর্বশেষ এসব রুটে মোট ৪৮টি ফেরি চলাচল করেছে বলে জানা গেছে। মেরামতের জন্য বাকি পাঁচটি ডকইয়ার্ডে পাঠানো হয়েছে।

আইন অনুযায়ী, দেশে এক একটি ফেরি আইনে অনুমোদিত সময় অনুযায়ী ৩০ বছর পর্যন্ত চলতে পারবে। নৌ-পরিবহন অধিদফতর (ডিওএস) থেকেও একইভাবে এ মেয়াদে ফেরিগুলো চলাচলের শর্তেই অনুমোদন দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন আইন ১৯৭৬ অনুযায়ী ফেরির নিবন্ধন আরো দুই মেয়াদে বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। তবে তা অবশ্যই সংস্কার সাপেক্ষে পাঁচ বছর করে ১০ বছর পর্যন্ত বাড়াতে পারবে। তবে, বর্ধিত এ মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে আর কোনোভাবেই ফেরিগুলো চলাচল করতে পারবে না বলেও আইনে উল্লেখ করা হয়েছে।

আইন অনুযায়ী, সর্বমোট ৪০ বছর পর্যন্ত ফেরিগুলো চলার কথা থাকলেও দেশে ৪০ বছরের বেশি বয়সী ফেরি রয়েছে ২০টি, এর মধ্যে পাঁচটির বয়স ৯৫।

এ বিষয়ে আইনে বলা হয়েছে, মেয়াদোত্তীর্ণ ফেরি যদি চলে, তবে তা হবে দণ্ডণীয় অপরাধ। এজন্য অভ্যন্তরীণ নৌযানের মাস্টারকে সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে অথবা দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড দেওয়া হবে অথবা দু’টো দণ্ডেই দণ্ডিত করা হবে। কিন্তু, তারপরও আইন লঙ্ঘণ করে নৌরুটগুলোতে মেয়াদোত্তীর্ণ ফেরি চলাচল করছে এবং বারবার দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।

মেয়াদোত্তীর্ণ ফেরি চলাচলের বিষয়ে বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. তাজুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে জানান, ফেরিগুলো আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব ক্ল্যাসিফিকেশন সোসাইটিসের তত্ত্বাবধানে তৈরি করা। এগুলো এতোটাই মজবুত যে ৪০ বছর পরও এগুলো আর্থিকভাবে লাভজনক। তবে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলেন, যদি ফেরিগুলো মজবুত হয়, তাহলে সেগুলো আবারও জরিপ করে ফিটনেস সার্টিফিকেট নিয়েই চালানো উচিত।

উল্লেখ্য, গত ২০ জুলাই পদ্মা সেতুর পিলারে রো রো ফেরি শাহ মখদুম ধাক্কা দেয়। বিআইডব্লিউটিসি সূত্র ও নথিপত্র অনুযায়ী, ১৯৮৫ সালে এই ফেরিটি তৈরি হয়। এর নেই হালনাগাদ ফিটনেস সনদ। এরপর, পদ্মা সেতুর পিলারে ২৩ জুলাই ধাক্কা দেয় রো রো ফেরি শাহজালাল। এই ফেরিটি তৈরি হয় ১৯৮০ সালে। ফলে আইন অনুযায়ী, এর নিবন্ধন মেয়াদের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৪০ বছর পেরিয়ে গেছে। শাহজালালের হালনাগাদ ফিটনেস সনদও নেই।

রো রো ফেরি বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর ৯ আগস্ট পদ্মা সেতুর পিলারে ধাক্কা দেয়। বিআইডব্লিউটিসি সূত্র ও নথিপত্র বলছে, এই ফেরি তৈরি হয় ১৯৯৩ সালে। তবে এর ফিটনেসের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে ১৭ জুলাই। এরপর ১৩ আগস্ট পদ্মা সেতুর পিলারে ধাক্কা দেওয়া ফেরি কাকলী তৈরি হয়েছে ১৯৭৪ সালে। এটির নিবন্ধন ও ফিটনেস সনদ পাওয়ার আর সুযোগ নেই।

Advertisement
Share.

Leave A Reply