পাটুরিয়া ঘাটে ডুবে যাওয়া ফেরিটি মেয়াদোত্তীর্ণ ছিল বলে জানিয়েছে বিশেষজ্ঞরা। ডুবে যাওয়ার সময় ফেরিটিতে ১৭টি পণ্যবাহী ট্রাকসহ ছিল ৩৩ টি যানবহন।
বুধবার সকালে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ছেড়ে আসা রো রো ফেরি আমানত শাহ মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে পৌঁছেই ডুবে যায়। ডুবে যাবার মুহুর্তে ফেরি থেকে তিনটি ট্রাক বের হয়ে যেতে সক্ষম হলেও বাকি যানগুলো আটকে পড়ে ফেরির ভেতরে।
ডুবে যাবার সময় ফেরিটিতে ছিল ১৭টি পণ্যবাহী ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান এবং ১৬টি মোটরসাইকেল। ট্রাকের ড্রাইভার, হেলপার, মোটরসাইকেলের আরোহী ও হকাররাসহ প্রায় শতাধিক মানুষ থাকলেও কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘাট ছাড়ার পর থেকেই কিছুটা কাত হয়ে চলছিল শাহ আমানত ফেরিটি। মাঝ পথ থেকেই পানি উঠতে শুরু করে ফেরিতে। পাটুরিয়া ঘাটে পৌঁছার আগেই পানি উঠে যায় গোড়ালি সমান। ডুবে যাওয়ার আগ মুহূর্তে অনেকে নদীতে লাফিয়ে পড়ে সাঁতরে তীরে ওঠে জীবন রক্ষা করেন।
বুধবার সারাদিন একযোগে উদ্ধারকাজ চালায় স্থানীয় জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ডের ডুবুরি দল ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউটিসি)। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আবারও শুরু হয়েছে উদ্ধারকাজ। ডুবে যাওয়া ফেরিটিকে পুরোপুরি উদ্ধার করা সম্ভব না হলেও এখন পর্যন্ত দুটি ট্রাক ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ঘাট কর্তৃপক্ষ।
বিআইডব্লিউটিসির পরিচালক আশিকুজ্জামান বলেন, ‘ফেরির ভেতরে পানি ঢুকলে তো ফেরি ঘাটে আসতে পারত না, ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যেত। আবার এভাবে কাত হয়ে যাওয়ায় মনে হচ্ছে ভেতরে পানি ঢুকছে হয়ত। কিছুই বুঝতে পারছি না।‘
বিআইডব্লিউটিসির আরেক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানান, ‘ডুবে যাওয়া ফেরিটি ৪০ বছরের বেশি পুরোনো ছিল। এক বছর আগেই ফেরিটিকে মেয়াদোত্তীর্ণ ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু যানবাহন পারাপারে সংকট মোকাবিলায় ঝুঁকি নিয়েই ফেরিটি দিয়ে কাজ চালিয়ে নেওয়া হচ্ছিল।’
বাংলাদেশে ফেরি ডুবে যাওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম জানিয়ে বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম বলেন, ‘১৯৮০ সালে ডেনমার্ক থেকে আনা শাহ আমানত রো রো ফেরিটি ত্রুটিপূর্ণ ছিল না। তবুও কেন ডুবে গেলো, সে বিষয়ে সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।’