১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর, প্রথমবারের মতো কোনো দেশ বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল, আর তা হলো ভূটান।
আর আজ ইতিহাসের সেই একই দিনে ৬ ডিসেম্বর ভূটান আবারো তাদের বন্ধুত্ব অব্যাহত রেখে বাংলাদেশের সাথে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) সম্পন্ন করেছে। যা হবে বিশ্বের কোনো দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রথম পিটিএ।
রোববার (৬ ডিসেম্বর) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ভার্চ্যুয়াল সংযোগের মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক এ চুক্তি সাক্ষরিত হয়। বাংলাদেশের পক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভূটানের পক্ষে প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং ভার্চ্যুয়াল সংযোগের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যোগ দেন। দ্বিপাক্ষিক অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তিতে বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এবং ভূটানের ইকোনমিক অ্যাফেয়ার্স মিনিস্টার লোকনাথ শর্মা চুক্তিতে সই করেন।
এই চুক্তিতে ভূটানের বাজারে ১০০টি পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা পেল বাংলাদেশ। অপরদিকে, বাংলাদেশের বাজারে ভূটান পাবে ৩৪টি পণ্যের শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা।
গণভবন থেকে ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে ভূটানের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রথম পিটিএ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে দেয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ-ভূটান পিটিএ পারস্পরিক স্বার্থের দিক দিয়ে উভয় দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও সুসংহত করবে। এখন সময় এসেছে যে, আমরা পারস্পরিক সুবিধার জন্য এবং আমাদের নাগরিকদের সামগ্রিক উন্নতি ও কল্যাণের জন্য আমাদের অসাধারণ সম্পর্ককে আরও বেশি অর্থবহ করে তুলি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ এবং ভূটান থেকে বিস্তৃত পণ্য একে অপরের বাজারে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পাবে। চুক্তিতে পারস্পরিক ঐক্যমতের ভিত্তিতে অতিরিক্ত তালিকা অন্তর্ভুক্ত করারও বিধান রয়েছে।”
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, “বাংলাদেশের জন্য এটি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত, কেননা আমরা বিশ্বের কোনো দেশের সঙ্গে আমাদের প্রথম পিটিএ স্বাক্ষর করছি। আর ভূটানই প্রথম দেশ যারা একাত্তরে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিকে একটি স্বাধীন এবং সার্বভৌম দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছে।’
শেখ হাসিনা তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশ ও ভূটানের যোগসূত্রকে ‘অত্যন্ত প্রাচীন’ আখ্যায়িত করেন।
তিনি বলেন, ‘সাধারণ সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ, ঐতিহ্য এবং ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতায় আজ আমাদের সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো পর্যটন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, জলবিদ্যুৎ, স্বাস্থ্য, বাণিজ্য, কৃষি, কৃষি-প্রক্রিয়াজাতকরণ, জীব-বৈচিত্র, জল-সম্পদ ব্যবস্থাপনা, আইসিটি, শিক্ষা এবং আরও অনেক ক্ষেত্রে বিস্তৃত হয়েছে।’
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ-ভূটান সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী একসাথে একটি লোগো উম্মোচন করেন এবং কেক কাটেন।