কে ভাবতে পেরেছিল, বৃহস্পতিবার কোয়ার্টার ফাইনালে দ্বিতীয় লেগের দুটো ম্যাচই ড্র হবে। শেষমেশ, প্রথম লেগের ফলাফলই গড়ে দেবে ম্যাচের ভাগ্য!
2021/22 semi-finals set ✅
Who will reach the final? 🏆#UCL pic.twitter.com/LQuBJzHUKB— UEFA Champions League (@ChampionsLeague) April 13, 2022
আতলেতিকো মাদ্রিদের ঘরের মাঠে কোনো গোল করতে ব্যর্থ হয়েছে ম্যানচেস্টার সিটি, এমনকি গোল করতে পারেনি স্বাগতিকরাও। প্রথম লেগে ১-০ গোলে জেতার সুবাদে দুই লেগ মিলিয়ে ১-০ অগ্রগামিতায় সেমিফাইনালে উঠেছে ম্যানসিটি।
ওদিকে, অ্যানফিল্ডে প্রথম লেগের মতোই লিভারপুল ৩ গোল তো দিয়েছেই বটে, বেনফিকাও কম যায়নি। তাদের ঝুলিতেও ৩ গোল, ফলাফল ম্যাচ ড্র। প্রথম লেগে ৩-১ গোলে জিতেছিল লিভারপুল। দুই লেগ মিলিয়ে তাই ৬-৪ ব্যবধানে জিতে সেমিতে পা রেখেছে ‘অল রেডরাই’।
দুই দলের কোনো দলেরই একটিও গোল জালে জড়ায়নি। তবে, নাটকীয়তা দিয়ে ষোলো আনা উসুল করে দিয়েছে পেপ গার্দিওলার ম্যানসিটি এবং দিয়েগো সিমিওনের আতলেতিকো।
ম্যাচের আগেই সিমিওনের জানিয়েছিলেন, কারো কথায় নিজেদের রক্ষণাত্মক খেলার কৌশলটা পরিবর্তন করবেন না তিনি, সেই কথা রেখেছেন। প্রথমার্ধে ম্যানসিটির দাপট, তবে ভাগ্য ছিল না সহায়। আট শটের একটাও যে প্রতিপক্ষের দুর্গ ভেদ করতে পারেনি। তবে, রক্ষণাত্মক কায়দায় খেলা স্প্যানিশ ক্লাবটিরও যেনো ঘুম ভাঙ্গে ম্যাচের ৪৫ মিনিট পেরোনোর পর। দ্বিতীয়ার্ধেও সেই চেষ্টা বজায় ছিল।
সেমিতে পা রাখতে সিমিওনের দলকে যে কমপক্ষে ২ গোলের ব্যবধানে জিততেই হতো। অথচ, গোলটাই আসছিল না। সেই চাপটাই যেন আর সহ্য করতে পারেনি তারা। ম্যাচের ৮৭ মিনিটে করে বসল ফাউল। সিটির ইংলিশ ফরোয়ার্ড ফিল ফোডেনকে করা আতলেতিকোর ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার ফেলিপে মন্তেইরোর একটা ট্যাকল! ট্যাকলটা দুর্দান্ত হলেও গোল না পাওয়ায় মেজাজই হারিয়ে বসলেন ফেলিপে, পেছন থেকে ফোডেনের পায়ে লাথি মেরে দিলেন ফেলে।
এদিকে, ঘাসে ফোডেনের কাতরাতে দেখে আরেক ডিফেন্ডার স্তেফান সাভিচের মনে হলো, সময় নষ্ট করতে নাটক করছেন ফোডেন। ব্যাপারটা সহ্য করতে না পেরে ফোডেনকে টেনে তুলতে চাইলেন তিনি। হয়তো চড়-থাপ্পড়ও মারতে চেয়েছিলেন। ব্যাপারটা ভালো লাগেনি সিটির ফুটবলারদের। শুরু হয় হাতাহাতি। শেষমেষ, অবস্থা বেগতিক দেখে ফিলিপেকেই লাল কার্ড দেন রেফারি।
এরপর, বাড়তি ৯ মিনিট যোগ করা হলেও কোনো দল গোল করতে ব্যর্থ হলে ১-০ অগ্রগামিতায় সেমির টিকিট কাটে কেভিন ডি ব্রুইনা-জোয়াও কানসেলোরা। শেষ করে তাদের প্রতিপক্ষ আরেক স্প্যানিশ ক্লাব ভিয়ারিয়াল।
অপর কোয়ার্টার ফাইনালে, ম্যাচ শুরুর ২১ মিনিটের ইবরাহিমা কোনাতের গোলে এগিয়ে যায় লিভারপুল। তবে, ১১ মিনিট পরেই গনকালো রামোসের গোলে সমতা ফেরায় বেনফিকা। এরপর ১০ মিনিটের ব্যবধানে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড রবার্তো ফিরমিনোর জোড়া গোলে ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে যায় লিভারপুল।
তবুও যেন দমবার পাত্র নয় ‘পর্তুগিজ ঈগলরা’। দ্বিতীয়ার্ধের ৭৩ মিনিটে স্ট্রাইকার রোমান ইয়ারেমচুক এবং ৮১ মিনিটে ফরোয়ার্ড দারউইন নিউনেজের দুই গোলের কল্যাণে ম্যাচে সমতা আনে তাঁরা। অবশ্য, ম্যাচ ড্র হলেও দুই লেগ মিলিয়ে ৬-৪ গোলেই হারতে হয়েছে বেনফিকাকে।
১৯৭৮ ও ১৯৮৪ মৌসুমের ইউরোপিয়ান কাপের মতো এবারো এক লিভারপুলের কাছেই কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিতে হলো পর্তুগিজ এই ক্লাবটির।