fbpx

জন্মদিন পালনের কথা বলে নারী চিকিৎসককে হোটেলে নিয়ে হত্যা

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

রাজধানীর পান্থপথে একটি আবাসিক হোটেলে নারী চিকিৎসককে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় জড়িত  রেজাউল করিম ওরফে (রেজাকে) গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাতে র‍্যাব- ২ এবং র‍্যাব-৭ এর যৌথ অভিযানে চট্টগ্রামের মুরাদপুর এলাকার একটি মেস থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডের সময় পরিহিত রক্তমাখা গেঞ্জি, মোবাইল, ব্যবহৃত ব্যাগ ও জান্নাতুলের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

১২ আগস্ট (শুক্রবার) বেলা ১১ টায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান, র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন ।

গত ১০ আগস্ট (বুধবার) রাতে রাজধানীর পান্থপথে অবস্থিত ফ্যামিলি সার্ভিস অ্যাপার্টমেন্ট নামক আবাসিক হোটেল থেকে জান্নাতুল নাইম সিদ্দিকী নামের এক নারী চিকিৎসকের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এসময় তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত ও জখমের চিহ্ন দেখা যায়। পরে জান্নাতুলের বাবা বাদী হয়ে রাজধানীর কলাবাগান থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

র‍্যাব জানায়, পরিবারকে না জানিয়ে দুই বছর আগে জান্নাতুল নাঈম সিদ্দিককে বিয়ে করেছিলেন রেজাউল করিম রেজা। কিন্তু রেজার একাধিক নারীর সঙ্গে সম্পর্ক রাখার বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হতো। এর জেরেই পরিকল্পিতভাবে জান্নাতুলকে খুন করেন রেজাউল। ঘটা করে জন্মদিন পালনের কথা বলে আবাসিক হোটেলে এনে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয় তাঁকে।

রেজাউল কক্সবাজারের মৃত নবী হোসাইনের ছেলে। রেজাউল ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ ও এমবিএ সম্পন্ন করে। এমবিএ চলাকালে সে একই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করে। এরপর সে একটি বেসরকারি ব্যাংকেও কর্মরত ছিল। ২০২২ সালে জুনে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সিনিয়র এক্সিকিউটিভ হিসেবে যোগদান করে রেজাউল।

র‍্যাব জানায়,  প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জান্নাতুলকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে রেজাউল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ২০১৯ সালে তাদের সাথে পরিচয় হয়। পরিচয়ের সূত্র ধরে ২০২০ সালের অক্টোবরে তারা পালিয়ে কাজী অফিসে বিয়ে করে। পরিবারের অমতে তার সাথে ভালোবেসে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তবে বিভিন্ন নারীর সাথে রেজাউলের সম্পর্কের বিষয়ে জান্নাতুল জানতে পারেন। এ নিয়ে তার সাথে প্রতিনিয়ত কথা বাগ-বিতণ্ডা হতো। তারপরও তার সাথে সম্পর্ক রেখে গিয়েছিল জান্নাতুল।

সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব আরও জানায়, এরই মধ্যে রেজাউল তার প্রতিবন্ধকতা দূর করতে জান্নাতুলকে হত্যার পরিকল্পনা করে। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী সে তার ব্যাগে ধারালো চাকু নিয়ে চলাফেরা করতো। গত ১০ আগস্ট জান্নাতুলের জন্মদিন উদযাপনের কথা বলে পান্থপথে ‘ফ্যামিলি অ্যাপার্টমেন্ট’ নামক আবাসিক হোটেল নিয়ে যায় রেজাউল। হোটেলে রুমে ঢোকার পরে তাদের মধ্যে কথাবার্তার এক পর্যায়ে তর্কাতর্কি হয়। তর্ক-বিতর্কের এক পর্যায়ে রেজা তার সাথে থাকা ব্যাগ থেকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে জান্নাতুলের শরীরে আঘাত করে। পরবর্তীতে জন্নাতুলের গলা কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে।

হত্যার পর রক্তমাখা জামা পরিষ্কার করে হোটেলে গোসলের সারে রেজাউল। এরপর দরজার বাইরে থেকে সে রুমের তালা বন্ধ করে দিয়ে চলে যায়। যাওয়ার সময় সে ওই চিকিৎসকের মোবাইল ফোনটিও নিয়ে যায় বলেও জানায় র‍্যাব।

হোটেল থেকে বের হয়ে রেজা প্রথমে তার মালিবাগের বাসায় যায়। বাসা থেকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে বেরিয়ে একটি হাসপাতালে গিয়ে হাতের ক্ষত স্থান সেলাই করে এবং প্রাথমিক চিকিৎসা নেয়। পরবর্তীতে আরামবাগ বাসস্ট্যান্ড থেকে বাসযোগে চট্টগ্রামের মুরাদপুরে আত্মগোপন করে। সেখান থেকেই র‌্যাবের অভিযানে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

Advertisement
Share.

Leave A Reply