নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে আলোচিত ধর্ষণ মামলার প্রাধান আসামী দেলোয়ার হোসেনসহ দুই আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার বেলা ১১টার দিকে নোয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক জয়নাল আবদীন এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় কাঠগড়ায় দেলোয়ারসহ উপস্থিত ছিলেন সাজাপ্রাপ্ত আরেক আসামি মোহাম্মদ আলী ওরফে আবুল কালাম।
রায় ঘোষণার পর রাষ্ট্রপক্ষ ও নির্যাতনের শিকার ৩৭ বছর বয়সী সেই নারী সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। রায়ে মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশা করলেও যাবজ্জীবনে খুশি হওয়ার কারণ সম্পর্কে তিনি জানান, আসামিরা কারাগার থেকে ছাড়া পাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে না, সে কারণে নিরাপত্তা নিয়ে আর কোন চিন্তা নেই।
আসামি পক্ষের আইনজীবী জসিম উদ্দিন বাদল গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এই মামলার আসামিরা খালাস পাওয়ার যোগ্য। মেডিকেল রিপোর্ট এ ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি। শুধু বাদীর অভিযোগের ভিত্তিতে আদালত এই রায় দিয়েছেন। আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আমরা আপিল করব।’
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি মামুনুর রশীদ লাভলু বলেন, ‘আমরা অভিযুক্ত দুই আসামির সর্বোচ্চ সাজা চেয়েছিলাম। আদালত যে রায় দিয়েছেন, তাতে রাষ্ট্রপক্ষ হিসেবে আমি সন্তুষ্ট।‘
ভুক্তভোগী নারীর জবানবন্দি, রাষ্ট্রপক্ষে উত্থাপিত সাক্ষীদের সাক্ষ্যপ্রমাণ, আসামি মোহাম্মদ আলী ওরফে আবুল কালামের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ভিত্তিতে রায় দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে আদালত।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২ সেপ্টেম্বর বেগমগঞ্জে দেলোয়ার বাহিনীর সদস্যরা ওই নারীর ঘরে ঢুকে তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। পরে তারা স্বামীকে বেঁধে রেখে ওই নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন চালায়। ঘটনার ১ মাস পর নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী নিন্দার ঝড় ওঠে এবং ধর্ষণ ও নির্যাতনবিরোধী আন্দোলন শুরু হয়। পরে ৬ অক্টোবর রাতে ওই নারী বাদী হয়ে দেলোয়ার হোসেন ও তাঁর সহযোগী আবুল কালামকে আসামি করে বেগমগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।