fbpx

কিংবদন্তী সুর সম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর আর নেই

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

করোনার কাছে হার মেনে ওপারে পাড়ি জমালেন উপমহাদেশের কিংবদন্তী সুর সম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর। ৯২ বছর বয়সী এই গায়িকা রবিবার সকাল ৮টা ১২ মিনিটের দিকে ভারতের মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এন সান্থানামা গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এছাড়া টাইমস অব ইন্ডিয়া, হিন্দুস্তান টাইমসসহ, এনডিটিভিসহ সব প্রথম সারির ভারতীয় গণমাধ্যম খবরটি নিশ্চিত করেছে।

জানুয়ারি মাসের শুরুতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন লতা। ৮ জানুয়ারি তিনি মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি হন। সেখানে তাঁর চিকিৎসিক ছিলেন প্রতীত সামদানি।

পরবর্তীতে করোনামুক্ত হলেও তাঁর নিউমোনিয়া ধরা পড়ে। লতার শারীরিক পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় চিকিৎসক প্রবাদপ্রতিম ভেন্টিলেশন সাপোর্ট বন্ধ করে দেন।

তবে শনিবার লতা মঙ্গেশকরের শারীরিক পরিস্থিতির আবার অবনতি হয়। দুপুরে চিকিৎসকেরা জানান, গায়িকার অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক। সেই খবর সামনে আসতেই লতার ভক্ত অনুরাগীরা তাঁর জন্য প্রার্থনা করেন।

লতার ছোট বোন আশা ভোসলে শনিবার বিকেলেই হাসপাতালে ছুটে যান। তখন থেকেই পরিস্থিতি আরও কঠিন হতে থাকে। চিকিৎসকরা আপ্রাণ চেষ্টা করেন তাকে যমের দুয়ার থেকে ফিরিয়ে আনতে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হয়তো সবার সাথে অভিমান করে ওপারেই পাড়ি জমান এই কিংবদন্তি।

লতার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই শুধু ভারতে নয়, বাংলাদেশেও শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাঁর মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শোক জানিয়েছেন। ভারতে লতা স্মরণে দুই দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে।

সংগীতের গানের পাখি লতা মঙ্গেশকর ১৯২৯ সালে ভারতের ইন্দোরে জন্মেছিলেন। ছোট বেলা থেকেই গানের প্রতি তাঁর বিশেষ ঝোঁক ছিল। ১৯৪২ সালে মারাঠি গান গেয়ে এই কিংবদন্তীর ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল।

১৯৪৬ সালে প্রথম হিন্ধি সিনেমাতে প্লেব্যাক করার সুযোগ পান তিনি। বসন্ত জোগলেকরের ‘আপ কি সেবা মে’ ছবিতে ‘পা লাগু কার জোরি’ গানটি গেয়েছিলেন লতা। এর ঠিক দুই বছরের মাথায় প্রখ্যাত সুরকার গুলাম হায়দারের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পান লতা। ‘মজবুর’ ছবিতে ‘দিন মেরা তোরা’ গানটি গেয়ে রাতারাতি সবার নজরে আসেন তিনি। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয় নি তাঁর।

লতা মঙ্গেশকর তাঁর সংগীত জীবনে প্রায় সাড়ে সাত হাজার গান গেয়েছেন। গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ডে সংগীতের ইতিহাসে গান রেকর্ডের দিক থেকে যা দ্বিতীয়। প্রায় ১০ হাজার গান রেকর্ড করে প্রথম স্থানে আছেন তাঁরই ছোট বোন আশা ভোসলে।

লতা মঙ্গেশকর প্রায় ৩৬টি ভাষায় গান করেছেন। ‘প্রেম একবার এসেছিল নীরবে’, ‘আষাঢ় শ্রাবণ মানে না তো মন’, ‘ও মোর ময়না গো’, ‘ও পলাশ ও শিমুল’, ‘আকাশপ্রদীপ জ্বেলে’সহ আরও অনেক বিখ্যাত বাংলা গানে কণ্ঠ দিয়েছেন এই মহাগায়িকা।

২০০১ সালে লতা মঙ্গেশকর ভারতের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ভারতরত্ন অর্জন করেন। ১৯৮৯ সালে তিনি দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার লাভ করেন।

Advertisement
Share.

Leave A Reply