জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে চায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। অন্যদিকে নির্বাচন কমিশন (ইসি) চায় নিজেদের কাছে রাখতে। এতদিন এনআইডি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণে গেলে সার্ভার না দেয়া ও নতুন একটি ভোটার কার্ড দেয়ার কথা বলেছে ইসি। কিন্তু এবার নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলছেন, এনআইডির নিয়ন্ত্রণ রাখতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদকে চিঠি দেবে কমিশন। পাশাপাশি চিঠির অনুলিপি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সেবা সুরক্ষা বিভাগেও দেয়া হবে।
সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
মো. আলমগীর বলেন, নির্বাচন কমিশন জাতীয় পরিচয়পত্রের কাজ প্রথম থেকে করে আসছে। অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে। একটা প্রশিক্ষিত জনবল হয়েছে। এখানে থাকলে নতুন করে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়ার সুযোগ নেই। এটা নিয়ে গেলে সরকারের জনবল এবং টেকনিক্যাল অবকাঠামো তৈরি করতে হবে। সেজন্য খরচের ব্যাপার আছে, এটি সময়সাপেক্ষও।
এনআইডির সব কিছু সরকার নিয়ে নিলে নির্বাচনে ভোটে কোনো প্রভাব পড়বে কি না জানতে চাইলে কমিশনার আলমগীর বলেন, আমরা তো ভোটার আইডি কার্ড হিসেবে দিয়েছি। পরে এটাকে নাম দিয়েছি জাতীয় পরিচয়পত্র হিসেবে। আমাদের কার্ড যদি সরকার নিয়েই যায় তাহলে সেক্ষেত্রে ওটাকে ভোটার আইডি কার্ড করে ফেলব। নির্বাচন কমিশনের যে অফিসার্স সমিতি আছে, তারা আমাদের কাছে আবেদন দিয়েছিল। আমরা বলেছি, এটা রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়ে দেবো। এটার অনুলিপি হয়ত সুরক্ষা বিভাগে যাবে এটুকু সিদ্ধান্ত ছিল।
কমিশন কী চায়- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এটা এখানে থাকার কতগুলো ভালো দিক আছে। আবার সরকার নিয়ে যেতে চায়। আমরা চিন্তা করেছি রাষ্ট্রপতি যেহেতু রাষ্ট্রের প্রধান, আমাদেরও অভিভাবক, সরকারেরও অভিভাবক। ওনার কাছে আমরা পাঠিয়ে দেবো। উনি যেটা ভালো মনে করেন। প্রধানমন্ত্রী অনেক বিষয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেন। এজন্য ওনার বিবেচনার ওপরে ছেড়ে দিচ্ছি। আমরা চিঠিতে কোনো মন্তব্য করিনি। আমরা চাইব আমাদের কাছে থাকুক। আমরা তো কোনো পক্ষ হতে পারি না। নির্বাচন কমিশন চাইবে সবাইকে নিয়ে কাজ করতে। এজন্য তিনি যা ভালো মনে করবেন সে রকম সিদ্ধান্ত নেবেন।
উল্লেখ্য, এনআইডি অনুবিভাগ নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অধীনে নেওয়ার জন্য নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এজন্য আইন করার কাজ চলছে। এটি পাস হলেই এনআইডির সব কিছু নির্বাচন কমিশন থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে চলে যাবে। আর জন্মের পরপরই নাগরিককে এনআইডি দেয়া হবে। তখন আলাদা করে ভোটার আইডি কার্ড দেবে নির্বাচন কমিশন। ফলে নাগরিকের একটি কার্ড বৃদ্ধি পাবে।
