১৭ এপ্রিল, ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস আজ। বাংলাদেশের ইতিহাসে দিনটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৯৭১ সালের এই দিনে তখনকার মেহেরপুর মহকুমার বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে স্বাধীন বাংলাদেশের সরকার শপথ গ্রহণ করেন। একইসঙ্গে এ দিন বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রও অনুমোদিত হয়।
দিবসটি উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে দিবসটি উপলক্ষে দেশবাসী ও প্রবাসে অবস্থানরত সব বাংলাদেশিকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, বাঙালির স্বাধীনতাসংগ্রামের দীর্ঘ পথপরিক্রমায় ১৭ এপ্রিল এক স্মরণীয় দিন। ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উদ্যাপনের মাধ্যমে বর্তমান প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারবে এবং দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ গঠনে অবদান রাখবে।
মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বাণীতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। তিনি কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, এম মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামারুজ্জামানকে। তিনি মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদ ও ২ লাখ নির্যাতিত মা-বোনের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র সাধারণ বাঙালির ওপর বর্বর হামলা চালায়। সেদিন রাতেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তীতে বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার গঠনের লক্ষ্যে ১৭ এপ্রিল আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতারা মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলায় সমবেত হন। বৈদ্যনাথতলা ছিল মূলত একটি আমবাগান। পরে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার গঠনের পর এটির নাম বদলে মুজিবনগর রাখা হয়।
সেদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করা হয়। বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে সৈয়দ নজরুল ইসলাম ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাজউদ্দীন আহমদকে নিয়োগ দেওয়া হয়। খন্দকার মোশতাক আহমেদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামরুজ্জামানকে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য করা হয়।
মুজিবনগর দিবস উদ্যাপনের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে আজ মেহেরপুরের মুজিবনগরের মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিকেন্দ্রে সকাল নয়টায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। এরপর রয়েছে স্মৃতিকেন্দ্রে পুষ্পস্তবক অর্পণ কর্মসূচি।
মুজিবনগর আম্রকাননে বীর মুক্তিযোদ্ধা, পুলিশ, বিজিবি, আনসার ও ভিডিপি, বিএনসিসি, স্কাউটস, গার্ল গাইডস ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা গার্ড অব অনার প্রদান করবে এবং বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ১০টায় মুজিবনগরে গীতিনাট্য জল মাটি ও মানুষ প্রদর্শিত হবে। বেলা পৌনে ১১টায় মুজিবনগরের শেখ হাসিনা মঞ্চে দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। দিবসটি উদ্যাপন উপলক্ষে জাতীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে মেহেরপুর জেলার মুজিবনগর উপজেলায় আজ সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
এদিকে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে নানা কর্মসূচি নিয়েছে।
তথ্যসূত্র: বাসস
