সম্প্রতি দি ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স করোনাকালে বৈশ্বিক অর্থনীতি সংক্রান্ত এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে তারা বলছে, মহামারিতে ভারত, চীনের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর প্রবাসী আয় কমে গেছে। কিন্ত বাংলাদেশসহ তিন দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটেছে।
দি ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্সের প্রতিবেদন বলছে, প্রবাসী আয় বেশি আসে এমন শীর্ষ ১০টি উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে ৭টিরই আয় কমেছে। আর আয় বেড়েছে তিনটি দেশের। এই তিনটি দেশ হচ্ছে- বাংলাদেশ, মেক্সিকো ও পাকিস্তান।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৯ সালে প্রবাসীরা বাংলাদেশে ১ হাজার ৮৪০ কোটি ডলার পাঠান। আর ২০২০ সালে তা ১ হাজার ৯৮৮ কোটি ডলারে উন্নীত হয়। একইভাবে পাকিস্তানে ২০১৯ সালে ২ হাজার ২২০ কোটি ডলার প্রবাসী আয় এসেছিল। ২০২০ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৪১০ কোটি ডলার। এবং ২০২০ সালে মেক্সিকোর প্রবাসী আয়ের পরিমাণ ছিল ৪ হাজার ৫০ কোটি ডলার। যা তার আগের বছরের তুলনায় ১৫০ কোটি ডলার বেশি। তবে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের এই প্রবাসী আয় বৃদ্ধির বিষয়টি সাময়িক বলে মনে করছে সংস্থাটি।
প্রতিবেদনে এই আয় বাড়ার কারণ খুঁজে বের করা হয়েছে। সেখানে দেখানো হয় ,বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের প্রবাসী শ্রমিকদের অনেকে তাঁদের চাকরি হারিয়ে নিজেদের জমানো টাকা দেশে পাঠিয়েছেন। কেননা উপসাগরীয় দেশগুলোর শ্রমিকদের মধ্যে এই প্রবণতা বেশি ছিল। আর করোনার কারণে তেলের দাম কমে যাওয়া এবং পর্যটন ব্যবসায় ধস নামায় ওই অঞ্চলের দেশগুলো অর্থনীতি সংকটে পড়েছে।
এদিকে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার কারণে বাংলাদেশের প্রবাসীদের বৈধ উপায়ে দেশে টাকা পাঠানোর পরিমাণ বেড়েছে। এছাড়া দেশটির সরকার বৈধভাবে টাকা পাঠালে প্রণোদনার হারও বাড়িয়েছে। এটি প্রবাসী শ্রমিকদের বৈধ উপায়ে দেশে টাকা পাঠানোতে উৎসাহ যুগিয়েছে।
তবে এভাবে প্রবাসী আয় বৃদ্ধির বিষয়টি সাময়িক বলে মনে করছে সংস্থাটি। ২০২১ সালেই প্রবাসী আয় আবার পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি আছে বলেও মত দেন তারা।
এছাড়া গেল বছর প্রবাসী আয় অর্জনকারী উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে শীর্ষে থাকা ১০টি দেশের মধ্যে ৭টি দেশের প্রবাসী আয় কমেছে। এই তালিকায় আছে ভারত, চীন, ফিলিপাইন, মিসর, নাইজেরিয়া, ভিয়েতনাম ও ইউক্রেন।
প্রতিবেশী দেশ ভারতে আগের বছরের চেয়ে আয় কমেছে প্রায় ৮০০ কোটি ডলার। ২০২০ সালে দেশটিতে প্রবাসী আয় এসেছে ৭ হাজার ৫৯০ কোটি ডলার। আর ব চীনের প্রবাসী আয় কমেছে প্রায় ৯০০ কোটি ডলার। ২০২০ সালে দেশটির প্রবাসী আয়ের পরিমাণ ছিল প্রায় ৫ হাজার ৯৫০ কোটি ডলার।
সংস্থাটি বলছে, ২০২০ সালে বিশ্বে প্রায় ৫ হাজার কোটি ডলার রেমিটেন্স কম এসেছে। সেসময় গোটা বিশ্বে মোট রেমিটেন্স এসেছে ৭১ হাজার ৬৭০ কোটি ডলার।