fbpx

খুলনায় চিকিৎসকদের কর্মবিরতি এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

খুলনায় চিকিৎসকের ওপর হামলার প্রতিবাদে ও আসামিদের গ্রেফতারের দাবিতে চলমান কর্মবিরতি এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) খুলনা।

আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে আজ শনিবার (৪ মার্চ) বেলা পৌনে ১২টায় এই সিদ্ধান্তের কথা জানান বিএমএ খুলনার সভাপতি শেখ বাহারুল আলম।

এর আগে গতকাল স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়। ওই সময় চিকিৎসকরা অভিযুক্ত এএসআই নাঈমুজ্জামানকে গ্রেফতার না করা পর্যন্ত কর্মসূচি পালনে অনড় ছিলেন।

বাহারুল সাংবাদিকদের বলেন, আজ সকালে খুলনা বিএমএ ভবনে চিকিৎসক নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন এবং মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।

বৈঠকে আগামী একসপ্তাহের মধ্যে চিকিৎসক ডা. শেখ নিশাত আব্দুল্লাহর ওপর হামলাকারী পুলিশের এএসআই নাঈমুজ্জামানকে গ্রেফতার এবং তার নামে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের শর্ত দিয়ে কর্মসূচি স্থগিত করা হয়।

খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, চিকিৎসকদের দাবি পূরণের আশ্বাস দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে তারা কর্মবিরতি স্থগিত করেছেন। রোগীদের দুর্ভোগ নিরসনের জন্য তারা কাজে যোগ দিচ্ছেন। একই কথা জানান, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন।

বাহারুল বলেন, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি নগরীর শেখপাড়া এলাকার হক নার্সিং হোমের অপারেশন থিয়েটারে ঢুকে পুলিশের এএসআই নাঈমুজ্জামান ও তার সঙ্গীরা শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. শেখ নিশাত আবদুল্লাহকে মারধর করেন। অপারেশন থিয়েটারে ভাংচুর চালান তারা। এক মাস আগে অপারেশন করা রোগীর জটিলতার কথা বলে তারা এই হামলা চালান।

এ ঘটনায় খুলনা বিএমএর পক্ষ থেকে নিন্দা জানিয়ে বিচার দাবি করে কর্মবিরতির ঘোষণা দেন চিকিৎসকরা।

বাহারুল বলেন, এ ঘটনার পর চিকিৎসক শেখ নিশাত আবদুল্লাহর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও শিশুর অঙ্গহানির অভিযোগে নগরীর সোনাডাঙ্গা থানায় মামলা করেছেন নুসরাত আরা ময়না নামের এক নারী।

এর আগে ২৮ ফেব্রয়ারি রাত ৯টার দিকে একই থানায় নুসরাত আরা ও তার স্বামী পুলিশের এএসআই নাঈমুজ্জামানের বিরুদ্ধে মারধর ও হাসপাতাল ভাঙচুরের অভিযোগে চিকিৎসক শেখ নিশাত আবদুল্লাহ মামলা করলেও এখনো কেউ গ্রেফতার হয়নি।

তবে যাদের বিরুদ্ধে ডা. নিশাতের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে তাদের কাছ থেকে জানা যায়, ওই চিকিৎসককের কাছে চিকিৎসা নিতে আসা আগুনে পোড়া এক মেয়ে শিশুর মাকে অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ায় তিনি রাজি না হওয়ায় শিশুর অপচিকিৎসা করেন। এতে শিশুটি তার বাম হাতের একটি আঙুল হারায় এবং হাতের আঙুলে পচন ধরে।

শিশুটির মা খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আমি ওই চিকিৎসকের অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় আমার ছয় বছরের মেয়ে অপচিকিৎসার শিকার। তার বাম হাতের আঙুলে পচন ধরেছে এবং একটি আঙুল পড়ে গেছে। তারপরও আমার মেয়েকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে না। দিনদিন তার হাতের অবস্থার চরম অবনতি হচ্ছে।

এদিকে নগরীর সোনাডাঙ্গা থানার ওসি মমতাজুল হক জানান, ওই চিকিৎসকের ওপর হামলার মামলার আসামি এএসআই নাঈমুজ্জামানকে সাতক্ষীরা সদর থানা থেকে সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ লাইনসে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

চিকিৎসকদের টানা কর্মবিরতির কারণে ভোগান্তিতে পড়েন রোগীরা। দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীরা চিকিৎসা নিতে না পেরে ফিরে যান এই কয়েক দিনে।

Advertisement
Share.

Leave A Reply