fbpx

গণপরিবহন বন্ধ করেও সমাবেশে নেতাকর্মীর উপস্থিতি ঠেকাতে পারে নি আওয়ামী লীগ: ফখরুল

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেখেন, হামলা, মামলা, হয়রানি করে এবং পথ আটকে জনগণের গণতন্ত্রের আকাঙ্ক্ষাকে দমিয়ে রাখা যায় না। তারই প্রমাণ আজকে দিয়েছেন বিএনপির  নেতাকর্মীরা।

শনিবার বিকেলে খুলনা শহরের ডাকবাংলা এলাকার সোনালী ব্যাংক চত্বরে দলের বিভাগীয় গণসমাবেশে সরকারের উদ্দেশে এ কথা বলেন তিনি।

সমাবেশকে ঘিরে গত দুই দিনে খুলনার বিভাগের বিভিন্ন জেলায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা, গ্রেপ্তার ও বাসা-বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়। নেতাকর্মীদের উপস্থিতি ঠেকাতে দুই দিন ধরে খুলনা অভিমুখী সব ধরনের গণপরিবহনও বন্ধ করে দেওয়া হয়।

এ সব ঘটনার উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, বাস, লঞ্চ, ট্রেন–সব ধরনের গণপরিবহন বন্ধ করার পরেও খুলনার সমাবেশে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিতি ঠেকাতে পারে নি আওয়ামী লীগ। তারা সীমাহীন বাধা দিয়েছে। আমি পুলিশ প্রশাসনের ভাইদের বলতে চাই, আপনাদের ফোন করলে বলেন, না সব ঠিক আছে।’

এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আমরা তো বিএনপির সমাবেশে বাধা দেই না। বরঞ্চ সহযোগিতা করি। কী সহযোগিতা করেছেন, এমন প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘স্টেশনে নামার পরে আমাদের ছেলেদের গ্রেপ্তার করেছেন। আমাদের চোখের সামনে আমাদের ছেলে–মেয়েদের কুপিয়েছে, আপনারা কিছুই বলেননি। বরঞ্চ খেয়াঘাটে গ্রেপ্তার করেছেন, আহত করেছেন। যাতে সমাবেশে যোগ দিতে না পারে তার ব্যবস্থা করেছেন। তার পরেও তারা পারেনি।’

এসময় নেতা-কর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারা অসাধ্যকে সাধন করেছেন। তিন দিন ধরে জলেস্থলে সব পরিবহন বন্ধ করে দিয়েছে। দুই দিন ধরে বাস বন্ধ, লঞ্চ বন্ধ করেছে, নৌকা বন্ধ করেছে, খেয়াঘাট বন্ধ করেছে। কিছুই চলতে দেয়নি। তার পরেও কি আপনাদের গণতন্ত্রের যে আকাঙক্ষা, অধিকার প্রতিষ্ঠার যে লড়াই, সে লড়াইয়ে বাধা দিতে পেরেছে? ইতিহাস বলে কোনো দিন জনগণের ন্যায়সঙ্গত দাবি উপেক্ষা করে শুধু শক্তি দিয়ে, রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে মানুষকে দমিয়ে রাখা যায় না। সেটাই আপনারা আবার প্রমাণ করেছেন।’

মির্জা ফখরুল বলেন, চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহের মতো খুলনার সমাবেশের মঞ্চেও দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সম্মানে একটি চেয়ার খালি রাখা হয়েছে। তিনি আমাদের বলেছেন যে তেমরা সঠিক পথে আছো, এভাবে আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাও। জনগণের অধিকারকে আদায় করে নিয়ে আসো। সে জন্যই তার সম্মানে এই চেয়ারটি খালি রাখা হয়েছে।

এই ‘অবৈধ’ সরকার আজকে দেশকে একটা নরকে পরিণত করেছে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতি ধ্বংস করেছে, সব অর্জনগুলোকে ধ্বংস করেছে, আমাদের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করেছে, শুধু একটা কারণে। তাদের অবৈধ ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার জন্য। তারা জোর করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। তারা বিনা ভোটে জনগণের ম্যান্ডেট না নিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়।’

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি পুনর্ব্যক্ত করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা পরিষ্কার করে বলছি, এই দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। সুতরাং আর কোনো কথা নেই। তত্ত্বাবধায়ক সরকার না দিলে কোনো নিবাচন হবে না। সে জন্য এ সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা ভবিষ্যতে যদি রাষ্ট্রপরিচালনার দায়িত্ব পাই তাহলে তরুণ যুবকদের জন্য কর্মসংস্থানের ববস্থা করব। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করব। যারা মেগা প্রজেক্টে মেগা দুর্নীতি করেছে, কমিশন গঠন করে তাদেরও খুঁজে বের করব।’

অবিলম্বে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব ‘মিথ্যা’ মামলা প্রত্যাহার এবং গ্রেপ্তার নেতাকর্মীদের মুক্তি দাবি করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ‘অন্যথায় পালাবার পথ খুঁজে পাবেন না। এখনো সময় আছে, মানে মানে পদত্যাগ করুন। নিরাপদে চলে যান। তা না হলে একদিন জনগণ অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আপনাদের পরাজিত করবে,’ ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশে বলেন তিনি।

খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলমের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও আব্দুল মঈন খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা নিতাই রায় চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান, আবদুল আউয়াল মিন্টু, কেন্দ্রীয় নেতা শহীদউদ্দিন চৌধুরী, খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম, যুবদলের সুলতান সালাহউদ্দিন প্রমুখ।

Advertisement
Share.

Leave A Reply