পুরো নাম আসলাম তালুকদার মান্না। দেশে কাঁপিয়েছেন তিনি ‘মান্না’ নামেই। আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকাই ছবির এই প্রয়াত তারকার ১৩তম প্রয়াণ দিবস। এর আগেই তাকে নিয়ে এক ব্যক্তির প্রতারণার অভিযোগ এসেছে।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, পান্না চৌধুরী নামের এক ব্যক্তি ১৭ ফেব্রুয়ারি মান্নার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে থাকা মান্নার ভক্তদের কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে টাকা চাইছেন। ফেইসবুকের মাধ্যমে সবাইকে তিনি বলছেন, শেলী মান্না ও অভিনেতা অমিত হাসানের নির্দেশে মান্না ফাউন্ডেশন গড়ে তুলছেন তিনি। মান্নার ভক্তদের নিয়ে তিনি যাবেন প্রিয় অভিনেতার কবর জিয়ারত করতে। সেখানে আয়োজন করবেন কাঙালিভোজ।
তবে এ ঘটনার সঙ্গে প্রয়াত মান্নার স্ত্রী শেলী মান্না নিজের সম্পৃক্ততা নেই বলে জানান। তিনি জানান, শুরুতে ফেসবুকে ঘটনাটি জানতে পারেন। একজন মৃত মানুষের নামে কেউ এমন প্রতারণা করে ব্যবসা করতে পারে, এটা মানতে পারেননি তিনি। ঘটনার বিস্তারিত জানার জন্য পান্না চৌধুরী নামের ওই ব্যক্তিকে ফোন করিয়েছিলেন মান্নার স্ত্রী শেলী মান্না।
শেলী মান্না সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘পান্না একেকবার একেক কথা বলেছেন। একবার তিনি বলছেন, শেলী মান্না এবং অমিত হাসানের সঙ্গে কথা হয়েছে। এই ফাউন্ডেশনের পেছনে তারা আছেন। তাদের নিয়েই কবর জিয়ারত করবেন। তখন শেলী পরিচয় দিলে ওই ব্যক্তি কথা ঘোরাতে থাকেন। আমি শুনেছি সেই লোক মান্না ফাউন্ডেশনের নামে সদস্য সংগ্রহ করছিলেন। এ ছাড়া আগামী ১৭ তারিখ মৃত্যুবার্ষিকীর জন্য অর্থ সংগ্রহ করছিলেন। কয়েকজনের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার খবরও পেয়েছি। আমাদের না জানিয়ে মান্নার নামে এটা একধরনের প্রতারণা। আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি। এটা এখনই বন্ধ না করলে প্রতারণা চলতেই থাকবে।’
তবে এ বিষয়ে প্রতারণার বিষয়টি অস্বীকার অভিযুক্ত পান্না চৌধুরী। তিনি ভুল স্বীকার করে জানান, তিনি চেয়েছিলেন শেলী মান্নার সঙ্গে দেখা করবেন। এ জন্য আগেভাগে মান্নার ভক্তদের বলেছিলেন শেলী মান্নার সঙ্গে তার কথা হয়েছে। কিন্তু কোনোভাবেই তিনি শেলীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। শুধু অমিত হাসানের সঙ্গে কথা হয়েছিল। এ ছাড়া মান্না ফাউন্ডেশনের সদস্য সংগ্রহের কথা তিনি ভুলবশত বলেছিলেন। তবে চাঁদা চাওয়ার ঘটনাটি তিনি অস্বীকার করেন। বরং তিনি নিজের অর্থায়নেই মিলাদের উদ্যোগ নিয়েছিলেন বলে দাবি করেন।
পান্না চৌধুরী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘ঘটনাটা নিয়ে একটা ভুল–বোঝাবুঝি হয়েছে। একজন ভক্ত হয়ে সবাই মিলে কবর জিয়ারতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলাম। আমার কোনো খারাপ উদ্দেশ্য ছিল না। এখন মানসম্মান নিয়েই বিপদে আছি। শুধু শুধু আমাকে শুনতে হচ্ছে, ধান্দাবাজ, প্রতারক, ভণ্ড। আমি সেই রকম ছেলে না।’
তবে এ নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো আইনী পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
উল্লেখ্য, নায়ক মান্নার জন্ম ১৪ এপ্রিল ১৯৬৪। তার মৃত্যু হয় ২০০৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি।তিনি চব্বিশ বছরের কর্মজীবনে তিন শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। তার অভিনীত ‘আম্মাজান’ চলচ্চিত্রটি বাংলাদেশের ব্যবসাসফল ও জনপ্রিয় চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে অন্যতম। তিনি ‘বীর সৈনিক’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য সেরা অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং ‘আম্মাজান’ চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসাবে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার অর্জন করেন।