fbpx

ভারত–বাংলাদেশ যৌথ বিবৃতি: আলোচনায় রাজনীতি, নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

বাংলাদেশ ও ভারত পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন, সাইবার নিরাপত্তা, আইসিটি, মহাকাশ প্রযুক্তি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও সুনীল অর্থনীতির মতো সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্রগুলোতে পারস্পরিক সহযোগিতায় সম্মত হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৪ দিনের রাষ্ট্রীয় সফরের দ্বিতীয় দিনে নয়াদিল্লিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর আজ বুধবার প্রকাশিত এক যৌথ বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

৩৩ অনুচ্ছেদের ওই বিবৃতিতে বলা হয়, দুই নেতা তাদের শীর্ষ বৈঠকে রাজনীতি, নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, বাণিজ্য, সংযুক্তি, পানিসম্পদ, উন্নয়ন–সহযোগিতা, সাংস্কৃতিক, জনগণের মেলবন্ধনসহ দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার সব বিষয়ে আলোচনা করেছেন।

সীমান্তে প্রাণহানির সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাওয়ায় দুই শীর্ষ নেতা সন্তোষ প্রকাশ করেন। দুই পক্ষ সীমান্ত হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনার বিষয়ে সম্মত হয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে আলোচনা করেছেন। কোভিড-১৯ মহামারি ও বৈশ্বিক পরিস্থিতির দরুন সরবরাহব্যবস্থা বিঘ্নিত হওয়ার প্রেক্ষাপটে তাঁরা এ অঞ্চলের সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের স্বার্থে বন্ধুত্ব ও অংশীদারত্বের চেতনায় ব্যাপকতর সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।

শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি দ্বিপক্ষীয় ও উপ-আঞ্চলিক রেল, সড়ক ও অন্যান্য সংযুক্তির বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। ভারত থেকে চাল, গম, চিনি, পেঁয়াজ, আদা ও রসুনের মতো নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করার অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ। ভারত নিজেদের জোগানের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ইতিবাচকভাবে বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছে। এ লক্ষ্যে ভারত সব রকম প্রয়াস চালাবে। সীমান্তে প্রাণহানির সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাওয়ায় দুই শীর্ষ নেতা সন্তোষ প্রকাশ করেন। দুই পক্ষ সীমান্ত হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনার বিষয়ে সম্মত হয়েছেন। দুই শীর্ষ নেতা দক্ষিণ এশিয়া এবং এর বাইরে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মৌলবাদের বিস্তার রুখতে তাঁদের জোরালো অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

পানিসম্পদ বণ্টনে সহযোগিতার অংশ হিসেবে দুই শীর্ষ নেতা কুশিয়ারা নদীর পানি বণ্টনে সমঝোতা স্মারক সই হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। ত্রিপুরা রাজ্যের সেচের প্রয়োজনীয়তাকে বিবেচনায় নিয়ে ফেনী নদীর অন্তর্বর্তী চুক্তি সইয়ের জন্য বাংলাদেশকে অনুরোধ জানিয়েছে ভারত। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীরা অন্তর্বর্তী চুক্তি সইয়ের রূপরেখা তৈরি এবং তথ্য–উপাত্ত বিনিময়ের লক্ষ্যে বাড়তি কয়েকটি নদী যুক্ত করতে যৌথ নদী কমিশনের সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশে গঙ্গার পানির সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহারে যৌথ সমীক্ষার জন্য যৌথ কারিগরি কমিটি গঠনকে স্বাগত জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অতীতের আলোচনাগুলোর কথা স্মরণ করিয়ে তিস্তার অন্তর্বর্তী পানি চুক্তি সইয়ের জন্য বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের অনুরোধ পুনর্ব্যক্ত করেছেন। অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনের অন্তর্বর্তী চুক্তির খসড়া চূড়ান্ত হয়েছিল ২০১১ সালে।

শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি ২ দেশের দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা সম্পর্কের অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং প্রতিরক্ষার জন্য লাইন অব ক্রেডিটের আওতায় প্রকল্পগুলো দ্রুত চূড়ান্ত করার বিষয়ে একমত হন। তারা মনে করেন, এতে উভয় দেশ উপকৃত হবে।

বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর জন্য যানবাহনের প্রাথমিক ক্রয় পরিকল্পনা চূড়ান্ত করাকে স্বাগত জানিয়েছে ভারত এবং দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা সম্পর্ক বাড়াতে তারা আগ্রহ প্রকাশ করে।

ভারতের পক্ষ থেকে আরও বেশি সামুদ্রিক নিরাপত্তার জন্য একটি উপকূলীয় রাডার সিস্টেম সরবরাহের জন্য ২০১৯ সালের সমঝোতা স্মারক বাস্তবায়নের জন্য অনুরোধ পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে বাস্তুচ্যুত ১০ লাখেরও বেশি মানুষকে আশ্রয় ও মানবিক সহায়তা দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের উদারতার প্রশংসা করেছে ভারত। বাস্তুচ্যুত এই মানুষদের নিজ মাতৃভূমিতে নিরাপদ, টেকসই ও দ্রুত প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করার প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উভয়কেই সমর্থন করার জন্য ভারত অব্যাহত প্রতিশ্রুতির ওপর জোর দিয়েছে।

Advertisement
Share.

Leave A Reply