টক দই খুব সহজ প্রাপ্য একটি উপাদান। ত্বকের যত্নে এটি নানাভাবে ব্যবহার করা যায়। টক দইয়ে এমন কিছু উপাদান আছে, যেগুলো ত্বকের যত্নে খুব ভালো উপকার দেয়। টক দইতে রয়েছে কার্বোহাইড্রেট, ক্যালসিয়াম এবং প্রোটিন। মুখে দই মাখলে আপনি খুব সহজেই উজ্জ্বল, মসৃণ ত্বক পেতে পারেন। দই ময়েশ্চারাইজারের কাজ করে এবং শুষ্ক ত্বকের জন্য এটি খুবই ভাল। এছাড়াও মুখের ব্রণ, রুক্ষতা, অতিরিক্ত তৈলাক্তভাব ইত্যাদি সমস্যা থেকেও রেহাই পেতে পারেন। জেনে নিন ত্বকের যত্নে টক দইয়ের বিস্তারিত-
ব্রণ দূর করে
ব্রণ নিয়ে সমস্যায় ভোগেন অনেকেই। এটি ত্বকের সৌন্দর্য নষ্ট করতে যথেষ্ট। ব্রণ থেকে মুক্তি পেতে নানা উপায় মেনে চলেও উপকার পাওয়া যায় না অনেক সময়। এই সমস্যা দূর করতে আপনাকে সাহায্য করবে টক দই। এক টেবিল চামচ টক দই নিয়ে তা তুলোর সাহায্যে ব্রণের উপরে লাগিয়ে নিন। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এভাবে ব্যবহার করলে সবচেয়ে ভালো হয়। এরপর এভাবে রেখে দিন। সকালে ঘুম থেকে উঠে ঠান্ডা পানিতে ভালোভাবে মুখ ধুয়ে নেবেন। আর দিনে ব্যবহার করলে অন্তত দুই ঘণ্টা এভাবে রাখতে হবে। দইয়ে থাকা ল্যাকটিক অ্যাসিড ব্রণ দ্রুত শুকাতে কাজ করে।
আর্দ্রতা বজায় রাখতে
বিশেষ করে শীতের শেষের দিকে ত্বক খুব বেশি রুক্ষ ও শুষ্ক হয়ে যায়। টক দই ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখবে। এতে ত্বক হবে নরম ও কোমল। কোমল ত্বকের সঙ্গে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে টক দইয়ে কিছুটা গোলাপজল মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।
দূর করে ডার্ক সার্কেল
চোখের নিচে কালি পড়লে দেখতে মোটেই ভালোলাগে না। অনেক সময় নানা ধরনের ক্রিম ব্যবহার করেও সমাধান পাওয়া যায় না। এক্ষেত্রে আপনাকে সমাধান দেবে টক দই। সামান্য টক দই তুলোর সাহায্যে চোখের নিচে লাগিয়ে নেবেন। এরপর মিনিট দশেক অপেক্ষা করে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নেবেন। দই চোখের ফোলাভাব দূর করার পাশাপাশি দাগও অনেকটা হালকা করে দেয়।
দাগছোপ কমিয়ে দেয়
মুখে নানা কারণে দাগছোপ হতে পারে। অনেক সময় ব্রণের দাগ থেকে যায়। এসব দাগ দূর করতে সাহায্য করে টক দই। সামান্য টক দইয়ের সঙ্গে অল্প একটু লেবুর রস মিশিয়ে দাগের উপর লাগিয়ে মিনিট দশেক অপেক্ষা করুন। এরপর ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত এভাবে ব্যবহার করবেন। এতে ত্বক সহজেই দাগমুক্ত হবে।
চুলের যত্নে
খুশকিমুক্ত থাকতে: কটন বল টক দইয়ে ভিজিয়ে মাথার ত্বকে লাগিয়ে রাখুন আধা ঘণ্টা। এরপর শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দু-তিন দিন ব্যবহারে খুশকি থেকে মুক্তি পাবেন। আর খুশি অতিরিক্ত হলে টক দইয়ের সঙ্গে কিছুটা লেবুর রসও মিলিয়ে নিতে পারেন।
নিষ্প্রাণ ও রুক্ষ-শুষ্ক চুলের যত্নে: টক দইয়ে থাকা ময়শ্চারাইজার চুলের রুক্ষতা দূর করতে খুবই উপকারী। টক দইয়ের সঙ্গে নারকেল তেল ও অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে চুলের গোড়া এবং পুরো চুলে লাগিয়ে ২০ মিনিট পর ভালো করে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দুই দিন ব্যবহারে চুল প্রাণ ফিরে পাবে, হবে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল।
চুলের বৃদ্ধিতে: টক দই চুল বড় হতে সহায়তা করে। টক দইয়ের সঙ্গে অলিভ অয়েল এবং একটি ডিমের ভেতরের অংশ মিশিয়ে নিয়ে চুলের গোড়ায় ভালো করে লাগিয়ে ১ ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করে ফেলুন।