রোহিঙ্গাদের কক্সবাজার আশ্রয় শিবির থেকে স্বেচ্ছায় ভাসানচরে স্থানান্তরের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।
জাতিসংঘের বাংলাদেশ অফিস থেকে বুধবার (২ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ সরকারের রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর প্রক্রিয়া যেন তাদের স্বেচ্ছাতেই হয়। জাতিসংঘ বাংলাদেশ সরকারের প্রতিশ্রুতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে।’
জাতিসংঘ জ্ঞাত, যথাযথ ও হালনাগাদ তথ্যসমৃদ্ধ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ভাসানচরে স্থানান্তরের ক্ষেত্রে তাদের স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকারের পক্ষে অটল রয়েছে বলেও বিবৃতিতে বলা হয়।
পাশাপাশি আন্তর্জাতিক এ সংস্থাটি যেসব রোহিঙ্গা ভাসানচরে যেতে ইচ্ছুক, তাদের মৌলিক অধিকার ও দ্বীপটিতে সেবাসমূহ নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করছে। অধিকারগুলোর মধ্যে মূল ভূখণ্ডে স্বাধীনভাবে যাওয়া-আসার অধিকারের পাশাপাশি শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও জীবিকার সুযোগ অন্তর্ভুক্ত।
ভাসানচর প্রকল্প ঘোষণার পর থেকে জাতিসংঘ সরকারের সাথে এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নীতিমালা, প্রক্রিয়া ও কর্মপরিকল্পনার মতো ইস্যু নিয়ে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছে। জাতিসংঘ এই আলোচনা অব্যাহত রাখতে চায় বলেও তারা এই বিবৃতিতে জানিয়েছে।
কক্সবাজারে আশ্রয়রত প্রায় ৯ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর জন্য তারা একটি কার্যকর ও মানবিক কর্মসূচিতে সরকারকে সহায়তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের ওপর জোর দিচ্ছে। পাশাপাশি মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছা ভিত্তিক, নিরাপদ, সম্মানজনক ও টেকসই প্রত্যাবাসনসহ এই সংকট সমাধানে কাজ করে যাচ্ছে বলেও জানিয়েছে তারা।
একই সঙ্গে তারা প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে যে, রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও আশ্রয় প্রদানের পাশাপাশি তাদের জীবন রক্ষা ও আরও অনেককে সহায়তা দেওয়ার মানবিক এই কাজে তাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি অব্যাহত থাকবে।
এদিকে বাংলাদেশ সরকার চলতি মাসেই কক্সবাজার থেকে বঙ্গোপসাগরের ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের প্রথম ব্যাচ স্থানান্তর করতে যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর কঠোর দমন-পীড়ন শুরুর পর প্রাণ বাঁচাতে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। তখন থেকেই বাংলাদেশে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজার জেলায় অবস্থান করছে।