লকডাউনে গোটা দেশ। থমকে গেছে অর্থের চাকা। এর প্রভার সবজায়গায়। সবচেয়ে কষ্টে নিম্ন আয়ের মানুষেরা। কাজ নেই, আয় নেই, কারও মুখে হাসি নেই….এত নেইয়ের মধ্যে পেটের ক্ষুধা হুহু করে জানান দেয় ‘আছি’ বলে।
রাজধানীর কড়াইল বস্তির বাসিন্দা মোহম্মদ তৈয়ব আলি। সাত জনের সংসারের ভার তার কাঁধেই। লকডাউনে কাজ না থাকায় , দুবেলা খাবার যোগাতেই কপালে ভাঁজ। আজ গেলে কাল কি হবে সে চিন্তায় দিশেহারা।
তিনি বলেন, রিকশা চালিয়েই সংসার চালাতেন তিনি। তবে লকডাউনের কারণে এখন রাস্তায় মানুষ নেই। তাই কাজও নেই। সারা দিনে যা হয় তাতে রিকশা মালিককে দেয়ার ভাড়াই ওঠে না। তাই ঘরেই থাকেন তিনি। এ অবস্থায় এত গুলো মানুষের পেটে আহার যোগানোই এখন দায়।
খেটে খাওয়া মানুষের কাছে লকডাউন মানেই যেন মাথায় বাজ। কোনো রকম খেয়ে পরে বেঁচে থাকার জীবন যুদ্ধে ঘোর অনিশ্চয়তা। এই বস্তিরই আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘লকডাউনের ভিতরে খুব কষ্ট আছি। কাজ-কাম নাই, পোলাপাইনের মুখের দিকে চাওন পারি না।’
হাজারো না পাওয়া নিয়ে চলতে থাকা জীবনে, জমেছে অভিমানের পাহাড়। কারো কাছেই যেন আর চাওয়ার কিছুই নেই। এক বয়স্ক নারী বলেছিলেন, ‘কিছু লাগবে না আমাগো। কিচ্ছু কওয়ার নাই। কইয়া কি হইবো। কেউ তো দ্যাখবো না আমাগো।’
বস্তির অনেকেই দাবি করেন, লকডাউনে অভাবিদের দুয়ারে তেমন কোনো সাহায্য পৌঁছায়নি। দু’একজন যা একটু পেয়েছেন, তাতে মেটে না দুদিনের ক্ষুধাও।
তারা জানান, করোনার নয়, তাদের ভয় এখন কাজা হারানো নিয়েই।